যেখানে বেদপ্রচারের ধারায় আজ
সবাই জানে যে বেদপাঠ,উপনয়নে অধিকার নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব মানুষের সমান
সেখানে আজও নিজেকে জোর করে ব্রাহ্মন পরিচয় দেয়া কিছু দস্যু তা অস্বীকার করতে
চায়।পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব ও নারীকে অবদমিত করে রাখার কুপ্রবৃত্তি
ই এর মূল কারন,আর এর সঙ্গে অজ্ঞানতা তো আছেই!পৌরাণিক এই অভিশপ্ত মতবাদ আজও
পুরোপুরি হিন্দুসমাজকে ছেড়ে যায়নি,এখনও তথাকথিত অনেক খ্যাতিমান ভগবৎনাম প্রচারকারী গোষ্ঠীসমূহ
প্রচারকরে কলির জীবেরা নাকি সবাই শুদ্র,তাদের অভিশপ্ত ওই পুরাণগুলোই যে ঘোষণা করেছিলযে বেদে নারী ও
শুদ্রদের অধিকার ই নেই!
এই জঘন্য ও মানবতা বিরোধী,নারীবিদ্বেষী প্রথার কারনে হিন্দু সমাজের যে ক্ষতি ইতিহাসে হয়েছে তা অপূরণীয়। কত সহস্র মহৎপ্রাণ হিন্দু ধর্মালম্বী যে এই অত্যাচারে,দুঃখে ধর্মান্তরিত হয়েছেন তার সাক্ষী মধ্যযুগের ইতিহাস।আজ এই বেদবিরোধী অপপ্রথার মূলরহস্য আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি।
আমরা সকলেই জানি যে সুবিখ্যাত
মহর্ষি ব্যাসদেব ঐতিহাসিক গ্রন্থ মহাভারত রচনা করেন। পরবর্তীকালে রচিত পুরাণ নামক
শাস্ত্রনামধারী বইসমূহও তিনি লিখেছেন বলে প্রচার করা হয়ে থাকে।এর মধ্যে
উল্লেখযোগ্য একটি হল ভাগবত পুরাণ বা ভাগবতাম।এটি নিজেদের যারা বর্তমানে কৃষ্ণভক্ত
নামে পরিচয় দেন অথচ বাস্তবে কৃষ্ণের জীবন থেকে কিছু শিক্ষা না নিয়ে নাচ গান করে
জীবন অতিবাহিত করেন তাদের কাছে খুব ই জনপ্রিয় একটি বই।প্রায় ২৪০০০ শ্লোক এর এই
বইটির দামও খুব চড়া।ইনারা প্রচার করেন বেদ অনেক বড় তাই সবাই পড়ে শেষ করতে পারবেনা
,তাই এটি পড়ার দরকার নেই।মজার ব্যাপার হল বেদের মন্ত্র সংখ্যা এই অদ্ভুতুড়ে বইটি থেকে কম,২০৪৩৪ টি।তাহলে কেন তারা এই কথা বলেন? কারন নাহলে ব্যাবসা বন্ধ হয়ে যাবে। কেরকম ব্যাবসা? চলুন বইটির অত্যন্ত পরিচিত একটি শ্লোক দেখে নিই-
,তাই এটি পড়ার দরকার নেই।মজার ব্যাপার হল বেদের মন্ত্র সংখ্যা এই অদ্ভুতুড়ে বইটি থেকে কম,২০৪৩৪ টি।তাহলে কেন তারা এই কথা বলেন? কারন নাহলে ব্যাবসা বন্ধ হয়ে যাবে। কেরকম ব্যাবসা? চলুন বইটির অত্যন্ত পরিচিত একটি শ্লোক দেখে নিই-
স্ত্রী শুদ্র দ্বিজবন্ধুনাম ত্রয়ী ন শ্রুতি গোচরা
কর্ম শ্রেয়সী মুধানাং শ্রেয় এবং ভবেদ ইহ
ইতি ভারতং আখ্যানাং কৃপয়া মুণিনা কৃতং
(ভাগবত পুরাণ ১.৪.২৫)
অর্থাৎ স্ত্রী,শুদ্র ও দ্বিজবন্ধু(অর্থাৎ যে সমস্ত ব্রাহ্মণ,ক্ষত্রিয় বা বৈশ্য বংশজাত ব্যাক্তি বিপথগামী) এই তিনশ্রেণী বেদপাঠ ও শ্রবণের অধিকারী নয়।তাই এদের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে এদের শিক্ষার জন্য ব্যাসদেব মহাভারত রচনা করলেন!!!
এখন এই
পুরাণের লেখক যদি ব্যাসদেব হন তাহলে মহাভারতেও তিনি একই কথা ই বলতেন কেননা এক ই
ব্যাক্তি দুই রকম সাংঘর্ষিক কথা বলতে পারেন না! কিন্তু দেখুন ব্যাসদেব মহাভারতে কি
বলেছেন-
ভবন্তো বহুলাঃ সন্ত বেদো বিস্তার্য্যতাময়ম্।
(মহাভারত ১২.৩৩৫.৪৪)
অর্থাৎ বহুগুণে বর্ধিত হও,সকলের মধ্যে বেদের বিস্তার কর।
শ্রাবয়েচ্চতুরো বর্ণান্ কৃত্বা ব্রাহ্মণমগ্রতঃ ।
(মহাভারত ১২.৩৩৫.৪৮)
সকল বর্ণের লোককে বেদ শিক্ষা দাও
অর্থাৎ ব্রাহ্মণরা সকল কিছুর অগ্রে বেদচর্চা করলেও চারবর্ণের লোকেরাও সকলে বেদচর্চা করুক!
(মহাভারত ১২.৩৩৫.৪৪)
অর্থাৎ বহুগুণে বর্ধিত হও,সকলের মধ্যে বেদের বিস্তার কর।
শ্রাবয়েচ্চতুরো বর্ণান্ কৃত্বা ব্রাহ্মণমগ্রতঃ ।
(মহাভারত ১২.৩৩৫.৪৮)
সকল বর্ণের লোককে বেদ শিক্ষা দাও
অর্থাৎ ব্রাহ্মণরা সকল কিছুর অগ্রে বেদচর্চা করলেও চারবর্ণের লোকেরাও সকলে বেদচর্চা করুক!
তাহলে
কিভাবে প্রথম শ্লোকটি ব্যাসদেব কর্তৃক লিখিত হয়? অন্ধবিশ্বাস ব্যাতীত এর ব্যখ্যা
নেই! আপনি যদি শুদ্র,স্ত্রী,ব্রাহ্মণ
ব্যাতিত সবাইকে বেদ পড়া থেকে নিষিদ্ধ করে দিতে পারেন তাহলে তো আপনারই লাভ,আপনি
ধর্মগুরু সেজে ইচ্ছেমত তাদের দিয়ে যা খুশি তাই করিয়ে নিতে পারবেন,তারা
যেহেতু বেদ পড়েনি তাই তারা জানবেওনা কোনটা শাস্ত্রসম্মত আর কোনটা অসম্মত।
আমরা এই বিষয়ে সকলেই অবগত যে পবিত্র বেদ ঈশ্বরের কর্তৃক প্রদত্ত মহান ঋষিগণের
ধ্যানপ্রাপ্ত পবিত্র জ্ঞান। ইসলাম ধর্মে যাকে বলা হয় নবী(যিনি ঈশ্বরীয় বাণী
প্রাপ্ত),খ্রিস্টান ইহুদী ধর্মে যাকে বলে মেসিয়াহ(যিশু,মোসেস) ঠিক একই মর্যাদা
বৈদিক ধর্মে ধ্যানে বেদ মন্ত্রদ্রষ্টা ঋষিদের।আর এই ঋষিদের মধ্যে ৩৩ জন হলেন নারী!
প্রিয় পাঠকরা চিন্তা করতে পারেন অন্য কোন ধর্মে নবী হিসেবে নারীরা স্বীকৃতি
পাচ্ছেন
? সেখানে মহান বৈদিক ধর্ম পৃথিবীর একমাত্র ধর্ম যেখানে বেদের মন্ত্রদ্রষ্টা ছিলেন নারীগণ। আর সেই ধর্মেই এই ধর্ম ব্যাবসায়ীরা বলছে নারী-শুদ্র এরা বেদ পাঠ ই করতে পারবেনা!
? সেখানে মহান বৈদিক ধর্ম পৃথিবীর একমাত্র ধর্ম যেখানে বেদের মন্ত্রদ্রষ্টা ছিলেন নারীগণ। আর সেই ধর্মেই এই ধর্ম ব্যাবসায়ীরা বলছে নারী-শুদ্র এরা বেদ পাঠ ই করতে পারবেনা!
এদের মধ্যে
অদিতি, ইন্দ্রাণী, লোপামুদ্রা, অপালা, কাদ্রু, বিশ্ববারা, ঘোষা, জুহু, বাগম্ভ্রিনি, পৌলমি, যমী, ইন্দ্রাণী, সাবিত্রী, দেবযানী, নোধা, গৌপায়না, অম্ভৃনী
প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এখন নারীদের যদি বেদপাঠে অধিকার ই না থাকে তাহলে তাঁরা বেদের
মন্ত্রদ্রষ্টা হলেন কি করে!
পৃথিবীর
সকল দেশে বিশেষত যেসকল জায়গায় শিক্ষার হার কম অথবা মানুষ অর্থনৈতিকভাবে পশ্চাদপদ
সেখানে এই ধরনের ভণ্ড ধর্মব্যাবসায়ীরা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্যে এই ধরনের
কার্যক্রম চালিয়ে থাকে।তাদের মূল উদ্দেশ্য হল সাধারন মানুষকে সত্যটা জানতে না
দেয়া কারন একবার জেনে ফেললেই তাকে আর ধর্মের নাম করে কেউ অর্থ দেবেনা
,তার প্রতিপত্তি নষ্ট হয়ে যাবে।তাই তারা বলে বেদ পড়োনা,তুমি কলির জীব,বেদ তোমার জন্যে নয়।কারন সে জানে মানুষ বেদ পড়লে জানবে সনাতন ধর্মে এসব কুসংস্কার এর কোন স্থান নেই তখন কলির নাম করে সে আর বসে বসে খেতে পাবেনা।
,তার প্রতিপত্তি নষ্ট হয়ে যাবে।তাই তারা বলে বেদ পড়োনা,তুমি কলির জীব,বেদ তোমার জন্যে নয়।কারন সে জানে মানুষ বেদ পড়লে জানবে সনাতন ধর্মে এসব কুসংস্কার এর কোন স্থান নেই তখন কলির নাম করে সে আর বসে বসে খেতে পাবেনা।
আমরা দেখব
বৈদিক ধর্মে মূলত নারী শিক্ষার অবস্থান কি।এতে আমরা এও বুঝব কলির এই ধর্মের আধার
কার্ড নিয়ে বসে থাকা ভক্তরা আসলে কি পরিমাণে মিথ্যাচার করছে হিন্দুধর্মের নামে।
"ব্রহ্মচর্যেন কন্যা যুবানং বিন্দতে পতিম্।"
(অথর্ববেদ ১১.৫.১৮)
অর্থাত্ ঠিক যেমন যুবক ব্রহ্মচর্য শেষ করে বিদুষী কন্যাকে বিয়ে করবে ঠিক তেমনি একজন যুবতীও ব্রহ্মচর্য শেষ করে পছন্দমত বিদ্বান যুবককে স্বামী হিসেবে গ্রহন করবে।
ব্রহ্মচারিনী
ছাত্রীদের নারী শিক্ষক উপদেষ্টির উল্লেখ পাওয়া যায় ঋগ্বেদ ১.৩.১১,১০.১৫৬.২
প্রভৃতিতে।
প্রভৃতিতে।
"চেতন্তি
সুমতিনাম যজ্ঞম দধে সরস্বতী" -ঋগ্বেদ ১.৩.১১
এখানে নারী শিক্ষিকাকে জ্ঞানদাত্রী ও প্রেরনাদাত্রীরুপে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে।
এখানে নারী শিক্ষিকাকে জ্ঞানদাত্রী ও প্রেরনাদাত্রীরুপে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে।
নারী ঋষি
বিশ্ববারাকে দেখা যায় পবিত্র ঋগ্বেদে তিনি বেদমন্ত্র উচ্চারণ পূর্বক পূর্বমুখী
হয়ে হোমযজ্ঞ করছেন।বেদের অনেক সুক্তে প্রিয় যজ্ঞবিশিষ্ট দম্পতিদের মন্ত্র
উচ্চারণের কথা বলা হয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর একত্রে যজ্ঞ করা,মন্ত্রপাঠে
স্তব উচ্চারণের ভূরি ভূরি উদাহরণ রয়েছে পবিত্র বেদে-
যা দম্পতি স মনসা সুনুত আ চ ধাবতঃ
(ঋগ্বেদ ৮.৩১.৫)
রিতিহোত্রা
কৃতদ্বসু দশস্যান্তামৃতায় কম্
(৮.৩১.৯)
(৮.৩১.৯)
এরপরেও কি মেয়েদের শাস্ত্রপাঠের,বেদপাঠের অধিকার
নিয়ে পৌরাণিক ধর্মধ্বজীদের বাগাড়ম্বর শোনার প্রয়োজন আছে কি?
বেদ নির্ধারিত সমাজে নারী-পুরুষ সমান মর্যাদা ভোগ করত।নারীদেরও উপনয়ন হত
,তারা পৈতা(যজ্ঞোপবীত) ধারন করত অথচ বর্তমানে তা কিছু নামসর্বস্ব ব্রাহ্মন নিজেদের কুক্ষিগত করে ফেলতে চায়।
,তারা পৈতা(যজ্ঞোপবীত) ধারন করত অথচ বর্তমানে তা কিছু নামসর্বস্ব ব্রাহ্মন নিজেদের কুক্ষিগত করে ফেলতে চায়।
এই প্রসঙ্গে কিছু গৃহ্যসুত্রের কথা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।
উপনয়নাং ক্রুত্ব পশ্চাদ বিবাহম করতি স ব্রহ্মবাদিনী।
তথৈব য প্রথমাত উপনয়নাং ক্রুত্ব সদ্য ইব বিবাহম ততঃ বেদমধিতে স সদ্যবধুঃ।।
(হরিত ধর্মসূত্র ৩০.২১-২২)
অর্থাৎ যে নারী উপনয়ন নিয়ে বেদশিক্ষা সম্পূর্ণ করে পরে বিয়ে করে তাঁকে
ব্রহ্মবাদিনী বলে আর যে নারী তা না করে প্রথমে বিয়ে করে তাকে সদ্যবধু বলে আর তারও
উচিৎ বিয়ের পড় উপনয়ন ও বেদশিক্ষা করা।
অর্থাৎ উপনয়ন ও বেদশিক্ষার এতই তাৎপর্য যে বয়সকালে তা করা না গেলেও বিয়ের পর
হলেও তা করতে হবে সে নারী হোক বা পুরুষ।
"प्रावृतां यज्ञोपवीतिनीमम्युदानयन् जपेत् सीमोऽदाद् गन्धर्वायेति"
(গোভিল গৃহ্যসূত্র ২.১.১৯)
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে যজ্ঞোপবীতধারিনী স্ত্রী তার স্বামীর সাথে বিয়ের যজ্ঞে
অংশগ্রহন করছে।
द्विऽविधाः स्त्रियो ब्रह्मवादिन्यः सदीवध्वश्च ।
तत्र ब्रह्मवादिनीनामुपनयनम्योन्धनं वेदाध्ययनं स्वगृहे भिक्शाचर्या चेति।।
অর্থাৎ নারীরা উপনয়ন নেবে, বেদ পড়ে ব্রহ্মবাদিনী হবে,যজ্ঞ করবে এবং সন্ন্যাস গ্রহন করতে পারবে।
মহাভারত ১২.৩২০ এ সুলভা নামক একজন বিদুষী ব্রহ্মবিদ্যা অর্জন কারী নারী ঋষির কথা পাওয়া যায় যিনি এতই জ্ঞানী ছিলেন যে ওই সময়ে তাঁকে বিয়ে করার মত কোন যোগ্য পুরুষ ই পাওয়া যায় নি।
মনে আছে রামায়ণে যখন শ্রীরাম তাঁর বনবাসের খবর নিয়ে কৌশল্যার গৃহে গেলেন তখন
কৌশল্যা কি করছিলেন?
“ অগ্নিং জুহোতি স্ম তদা মন্ত্রবৎ কৃতমঙ্গলা”
অর্থাৎ বেদমন্ত্র উচ্চারণ পূর্বক অগ্নিহোত্র যজ্ঞ করছিলেন।
(বাল্মীকি রামায়ণ ২.২০.২৪-২৫)
“ অগ্নিং জুহোতি স্ম তদা মন্ত্রবৎ কৃতমঙ্গলা”
অর্থাৎ বেদমন্ত্র উচ্চারণ পূর্বক অগ্নিহোত্র যজ্ঞ করছিলেন।
(বাল্মীকি রামায়ণ ২.২০.২৪-২৫)
প্রাচীন স্মৃতিশাস্ত্র যমসংহিতা বর্ণনা করেছে কিভাবে প্রাচীনকালে “পিতা ও ভ্রাতাদের সাথে কন্যাদেরও ও উপনয়ন হত,পৈতা পড়ত!”
पुरा कल्पे कुमारिणां मोञ्जोबन्धन मिष्यते ।
अध्यापनन्श्च वेदानां सावित्रीवाचनन्तथा ॥
पिता पितृव्यो भ्राता वा नैनामध्यापयेत् परः |
শতপথ ব্রাহ্মণ বলছে, “অধ্যাপনঞ্চ বেদানাং
সাবিত্রীবচনং তথা...”
অর্থাৎ শুধু পড়া ই নয় বরং ওই সময় নারী জ্ঞানীগণ বেদ অধ্যাপনার কাজ ও করতেন!নারী ব্রহ্মচারীগণ মূলত নারী শিক্ষিকাগণের নিকট ই গুরুকুলে পড়াশোনা করতেন।
অর্থাৎ শুধু পড়া ই নয় বরং ওই সময় নারী জ্ঞানীগণ বেদ অধ্যাপনার কাজ ও করতেন!নারী ব্রহ্মচারীগণ মূলত নারী শিক্ষিকাগণের নিকট ই গুরুকুলে পড়াশোনা করতেন।
শতপথ ব্রাহ্মন ২.৬.২.১৩ তে দেখা যায় নারীগণ যজ্ঞে বেদের বিখ্যাত
মহামৃত্যুঞ্জয়ী মন্ত্র পাঠ করছে।
উত্তররামচরিতমানস এর ২.৩ এ পাওয়া যায় ঋষিকা অত্রেয়ী বলছেন,
"এই অঞ্চলে অগস্ত্যসহ অনেক বিখ্যাত মহর্ষি আছেন। আমি মহর্ষি বাল্মীকির আশ্রম থেকে এখানে এসেছি তাঁদের কাছ থেকে বেদ অধ্যয়ন করতে।"
অশ্বলায়ন গৃহ্যসূত্রের ৩.৮.১০.১৪ তে বৈদিক উপনয়ন,গুরুকুল পাঠ শেষ করে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেখা যায় নারীদের।
তামিলনাড়ুতে অবস্থিত বৃহদিশ্বর শিব মন্দিরে ১০৩৫ সালের দেবী সরস্বতী আদলের নারী ভাস্কর্য দেখা যায় যে নারী যজ্ঞোপবীত পরিহিতা।
"এই অঞ্চলে অগস্ত্যসহ অনেক বিখ্যাত মহর্ষি আছেন। আমি মহর্ষি বাল্মীকির আশ্রম থেকে এখানে এসেছি তাঁদের কাছ থেকে বেদ অধ্যয়ন করতে।"
অশ্বলায়ন গৃহ্যসূত্রের ৩.৮.১০.১৪ তে বৈদিক উপনয়ন,গুরুকুল পাঠ শেষ করে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেখা যায় নারীদের।
তামিলনাড়ুতে অবস্থিত বৃহদিশ্বর শিব মন্দিরে ১০৩৫ সালের দেবী সরস্বতী আদলের নারী ভাস্কর্য দেখা যায় যে নারী যজ্ঞোপবীত পরিহিতা।
এর চেয়ে সুস্পষ্ট প্রমান আর কি হতে পারে বৈদিক শাস্ত্রে নারীদের উপনয়ন তথা
ব্রহ্মচর্য পালনের? আর যখন ই ভণ্ড ধর্মব্যাবসায়ীরা পৌরাণিক যুগ এর
সূচনা করল তখন ই এসব অপপ্রথা হিন্দু সমাজে প্রবেশ করল।এসব ভণ্ডদের চিনিয়ে দিতেই
যুধিষ্ঠির মহাভারতের অনুশাসন পর্বের অষ্টাদশ অধ্যায়ে বলেছিলেন,
“ধূর্তৈঃ প্রবর্তিতং হ্যেতন্নৈতদ্ বেদেষু কল্পিতম...”
(মহাভারত,শান্তি পর্ব,অধ্যায় ২৬৫,শ্লোক ৯)
অর্থাৎ বেদে পশুবলি,যজ্ঞে মদ,মাংস,বেদে শুদ্রদের অনধিকার,বর্ণপ্রথা এসব কিছুই নেই,এই সব ই ধূর্তদের সৃষ্টি।
এজন্যই যেসকল ধর্মীয় সংগঠন বা গুরু-প্রভু রুপধারী ভণ্ডরা যারা বলে বেদে, শাস্ত্রে নারীদের অধিকার নেই,শুদ্রদের অধিকার নেই,কলিতে সকলেই শুদ্র তাই কলির জীবের বেদে অধিকার নেই এদেরকে ভণ্ডামির দায়ে
সমাজচ্যুত করা উচিৎ।
বেদের চিরন্তন সত্য পৌঁছে দিন সকলের মাঝে!
ওঁ শান্তি শান্তি শান্তি
তথ্যসুত্র-
- V.S.Agrawala; India as known to Panini, Lucknow,
1953, page 287
- Ancient Indian Education: Brahmanical and Buddhist by
Radhakumud Mookerji