সনাতন ধর্ম নিয়ে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের জিজ্ঞাসা থাকবে
কেননাআমাকে কিংবা আপনাকে কৌশলে ধর্মান্তরিত করার সহজ উপায় হলো আমার বা আপনার অজানা বিষয় গুলি নিয়ে বেশি জিজ্ঞাসা করা।
★ অনাথ বলতে আমরা সাধারণত বুঝি যাদের আপন বলতে কেউ থাকেনা। মানবিক দিয়ে বিবেচনা করলে একটা জিনিস দেখতে পাবেন যে অনাথদের যেসমস্ত ধনদৌলত থাকে সেসব রক্ষা করা সমাজ কিংবা রাষ্ট্রের বিভিন্ন আদর্শিক ব্যক্তিদের দায়িত্ত্বের মধ্যে পড়ে!
★যারা সবকিছুতে ধর্মের গন্ধ খোজে তাদের বলতে
শুনবেন ধর্ম কি ততোটা মানবিক? যে অনাথদের ধনধৌলত রক্ষা করার কথা বলবে?
★হ্যা অবশ্যই ধর্ম ততোটা মানবিক। কিন্তু কোন ধর্ম ততোটা মানবিক তা জানিনা, তবে সনাতন ধর্ম এই দিক থেকে যথেষ্ট মানবিক।
★দেখা যাক এই সম্পর্কে কি বলে সনাতন শাস্ত্র ---
★মনুস্মৃতি--- (৮/২৭)
→বালদায়াদিকং রিকৃথং তাবদ্রাজানুপালয়েৎ।
→যাবৎ স স্যাৎ সমাবৃত্তো ষাবচ্চাতীতশৈশবঃ।।
*বঙ্গানুবাদ*
" যদি কোন বালক বা শিশু অনাথ হয়ে যায়, রাজা তখন সেই অনাথ বালকের ধনসম্পত্তি নিজের কাছে রেখে বিশেষ ভাবে রক্ষা করবেন যতদিন না সেই বালক বেদ অধ্যয়ণ করে গুরুগৃহ থেকে গৃহস্থাশ্রমে এসে সংসার ধর্মে রতি না হয় বা যতদিন সে নাবালক থেকে সাবালক হচ্ছে, রাজাকে নিশ্চিত করতে হবে এই অনাথ বালকের সম্পত্তিতে যেন কেউ হাত না দেয়।"
★উক্ত শ্লোক অনুসারে এটা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে রাজা কিংবা দেশের প্রধানকে অনাথের ধনসম্পত্তি রক্ষার জন্য বলা হচ্ছে।
★পরবর্তী শ্লোকে বলা হয়েছে---
★মনুস্মৃতি--- (৮/২৮)
→বশাহপুত্রাসু চৈবং স্যাদ্রক্ষণং নিষ্কুলাসু চ।
→পতিব্রতাসু চ স্ত্রীষু বিধবাস্বাতুরাসু চ।।
*বঙ্গানুবাদ*
"বন্ধা স্ত্রী যাহার স্বামী দারান্তর পরিগ্রহ করিয়া, গ্রাসাচ্ছাদন নির্ব্বাহোচিত ধন দিয়া রক্ষণাবেক্ষণে বিরক্ত এবং পুত্ররহিত গ্রোবিত ভর্ত্তৃকা এবং যে স্ত্রীর সপিন্ডাদি অভিভাবক কেহহ নাই, অথচ নিজে সাধ্বী এবং বিধবা ও রোগী স্ত্রী, ইহাদিগের ধন অনাথ বালকের ধনের ন্যায় রাজা রক্ষা করিবেন। তাৎপর্য্য, যে স্ত্রীর কেহ অভিভাবক নাই রাজা সেই অনাথের ধনরক্ষা করিবেন।"
★উক্ত শ্লোক থেকে বোঝা যাচ্ছে যে অনাথ নারীরও
ধনসম্পত্তি রক্ষা দায়িত্ত্ব রাজার বা দেশের প্রধানের।
★এবার খু্ব গুরুত্বপূর্ণ কথা,,, যদি অনাথ ব্যক্তির কোন
অাত্মীয় স্বজন এসে তাঁর সম্পত্তি রক্ষার নামে অাত্মসাৎ
করার চেষ্টা করে তবে কিরুপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে
হবে অাত্মসাৎকারীদের???
★হ্যা তাদের অবশ্যই শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে, সেটা
উল্লেখ অাছে----
★মনুস্মৃতি--- (৮/২৯)
→জীবন্তীনান্ত্ত তাসাং যে তদ্ধরেয়ুঃ স্ববান্ধিবাঃ।
→তাঞ্জিয্যাচৌরদন্ডেন ধার্ম্মিকঃ পৃথিবীপতিঃ।।
*বঙ্গানুবাদ*
" যদি সপিন্ডেরা, অামরাই ইহার পর ঐ ধনের অধিকারী হইবো, অামরাই এক্ষণে ঐ ধন রক্ষা করিব,ইহা করিয়া ছলে উক্ত ধন গ্রহণ করে তবে ধার্মিক রাজা তাহাদিগের চৌর্য দন্ড-দ্বারা শাসন করিবেন।"
★উক্ত শ্লোক অনুসারে বোঝা যাচ্ছে যে জোচ্চোরি
করে ধন নিয়ে নিলে সেসব আত্মীয়দের দন্ড প্রদান
করতে হবে যেটা পরিমান হবে চুরি করার অপরাধের শাস্তি।
★তাই পরিশেষে বলা যায়, অনাথদের ধনসম্পত্তি রক্ষার ব্যাপারে সনাতন ধর্মের বিধান অত্যন্ত মানবিক। সবার উচিত এটা প্রয়োগ করা।