অথর্ববেদ কান্ড ১১ সুক্ত ২ এর ১১ মন্ত্রে পাঁচ পশুর গণনা
করা হয়েছে -
চতুর্নমো অষ্টকৃত্বো ভবায় দশ কৃত্বঃ পশুপতে নমস্তে।
তবেমে পঞ্চ পশাবো বিভক্তা গাবো অশ্বাঃ পুরুষা অজাবয়ঃ।।
সুখউৎপাদক পরমেশ্বর কে চার বার, আট বার নমস্কার, হে দৃষ্টিসম্পন্ন জীবের রক্ষক! তোমাকে দশ বার নমস্কার।
তোমারই বিভক্ত এই পাঁচ দৃষ্টিসম্পন্ন [জীব] গাভী, ঘোড়া, পুরুষ, ছাগল এবং ভেড়া।
এই মন্ত্রের শেষ ভাগে পশুর ৫ বিভাগ করা হয়েছে। গাভী, ঘোড়া, পুরুষ, ছাগল এবং ভেড়া। আমার পৌরাণিক ভাইয়েরা এই পশুদের আধারের উপর হিংসাময়
পাঁচ মেধ অর্থাৎ যজ্ঞের কল্পনা করে। যথাঃ গোমেধ, অশ্বমেধ, পুরুষমেধ বা নরমেধ, অজমেধ
এবং অবিমেধ।
গোমেধের পৌরাণিক অর্থঃ
পৌরাণিক বিদ্বান প্রায়ঃ গোমেধের অর্থ করে যে, "গোযজ্ঞ" যাহাতে
গাভীকে কেটে অগ্নিতে তার অঙ্গকে আহুতি দেওয়া হয়।
ইহার সমীক্ষাঃ
বৈদিক কোষ নিঘন্টু তে গাভীর নাম নিম্নলিখিত মেলে। যথাঃ -
অঘ্না,উস্ত্রা, উস্ত্রিয়া, অহী,মহী, অদিতিঃ, ইলা, জগতী,
শকরী।। নিঘঃ ২।১১।।
এই নামের মধ্যে "অঘ্না" এবং অদিতী " এই দুটি শব্দের উপর কিছু বিচার করা আবশ্যক।
(ক) অঘ্না - অঘ্না শব্দের অর্থ যাস্কমুনি নিম্নলিখিত
শব্দে করেছেন। যথাঃ -
"অঘ্না অহন্তব্যা ভবতি"।। নিরু. ১১,৪৩।।
গাভীর নাম অঘ্না এইজন্য যে, তাহা "অহন্তব্যা" অর্থাৎ হত্যা
করার যোগ্য নয়।
নিরুক্তের টীকাকার শ্রীমদ্ দূর্গাচার্য জী নিরুক্তাকারের এই নির্বচনের
টীকা নিম্নলিখিত শব্দে করেছেন। যথাঃ -
"অঘ্না কস্মাত্?। সা হি সর্বস্যৈব অহন্তব্যা ভবতি"।
ইহার অভিপ্রায় এই যে, গাভী কে অঘ্না এই জন্য বলা হয়েছে তাহা সর্বদা
"অহন্তব্যা" অর্থাৎ হত্যার যোগ্য নয়।
নিরুক্ত ৩।৯ এর টীকাই দূর্গাচার্য "অঘ্না" পদের ব্যাখ্যায়
"অঘ্না অহন্তব্যা ভবতি" এইা লিখেছেন।
এই প্রকার নিঘন্টু তে অঘ্না পদের ব্যাখ্যায়, নিঘন্টুর ভাষ্যকার শ্রী দেবরাজ যজ্বা "অঘ্না
অহন্তব্যা" লিখেছেন।
ইহাতে স্পষ্ট প্রতীত হয় যে নিঘন্টু নিরুক্ত, দুর্গাচার্য তথা দেবরাজ যজ্বা অঘ্না পদের উপর গাভীর
হত্যা সর্বদা নিষেধ করেছেন।
বৈদিক মন্ত্রে স্থানে স্থানে গাভীর জন্য অঘ্না পদের উল্লেখ রয়েছে। বৈদিক
নাম যৌগিক। বেদে গাভীর জন্য "অঘ্না"
পদ এইজন্য রাখা হয়েছে যে, বেদের স্বাধ্যায় কারীর "অঘ্না" এই নাম দ্বারা জ্ঞান
হয় যে, বেদে গাভীর হত্যা সর্বদা নিষেৎ। মহাভারত
শান্তপর্ব ২৬৪ অধ্যায়ের ৪৭ অধ্যায়ে অঘ্না শব্দের
সমন্ধ্যে বলা হয়েছে -
অঘ্না ইতি গবাং ক এতো হন্তমুর্হতি।
মহচ্চকারাকুশলং বৃষং গাং বাহহলভেন তু য়ঃ।।
অর্থাৎ শ্রুতিতে গাভীকে অঘ্না (অবধ্য) বলা হয়েছে। পুনারায়
তাকে হত্যার জন্য কে বিচার করেন? যে গাভী কে এবং ষাড়কে মারেন তিনি মহা পাপ করেন।
এই প্রকার অঘ্না পদ দ্বারা ইহা প্রতীত হয় হয় যে, গাভীর হত্যা করা উচিৎ
নয়। এখন গাভীর দ্বিতীয় নাম "অহি" এর উপর বিচার করা উচিৎ।
(খ) অদিতিঃ অদিতি শব্দের নির্বাচনে নিঘন্টুর টীকায়
শ্রীদেবরাজ যজ্বা লিখেছে " ন দ্যতি, অখন্ডীয়া বা"। ইহার অভিপ্রায় এই যে, গাভীর নাম অদিতি এইজন্য হয়েছে
তাহা অখন্ডনীয়, অর্থাৎ তাহার অঙ্গ কে খন্ড খন্ড টুকরো করা উচিৎ নয়। অদিতি শব্দে অ এবং দিতি এই দুই ভাগ, দিতি এর
অর্থ হচ্ছে কাটা। এর সাথে অ যুক্ত হয়ে অর্থ হয় তাহাকে কাটা না যায় বা কাটার যোগ্য নয়।
এই প্রকার গাভীর এর দুই নামের উপর বিচার করার দ্বারা স্পষ্ট হয় যে, গাভীর
যজ্ঞে হত্যা, বৈদিক ভাবের সর্বদা বিপরীত। যদি
বেদ যজ্ঞে গাভীর বধ অভীষ্ট হতো বেদে গাভীর নাম ওইরুপ হতো না যাহার ভাব এই যে, গাভীর হত্যা করা উচিৎ নয়।
দাদা, কিছু সময় ধরে নাস্তিকরা অশ্বমেধ যজ্ঞ নিয়ে বেশ সোরগোল করছে।
ReplyDeleteএই লিংকে দেখুন, আর এ সম্পর্কে একটি বিস্তারিত ও বৈদিক প্রমাণসহ আর্টিকেল লিখে সবাইকে সত্যটা জানতে সাহায্য করুন
https://www.shongshoy.com/archives/15173?amp#commentform