সেই আদিকাল থেকেই সৌরজগত নিয়ে মানুষের বিস্ময়ের সীমা নেই।ব্যাবিলন,এথেন্স ঘুরে মেসোপটেমিয়া বা সিন্ধুর তীরে গ্রহ নক্ষত্র নিয়ে তৎকালীন জ্ঞানী ব্যাক্তিদের আগ্রহ, সাধনার কথার প্রমাণ পাওয়া যায় প্রায় সকল প্রাচীন সভ্যতায়।
তৎকালীন সকল সভ্যতার পুঁথিতেই খালি চোখে দৃশ্যমান ৫ টি বড় এবং নিকটবর্তী গ্রহের অস্তিত্ব মেলে।
কিন্তু বাকী ২ টি গ্রহ( পৃথিবী ব্যাতিত) এর কথা পাওয়া যায় না।
মজার বিষয় হল আমাদের প্রাচীন ইতিহাস শাস্ত্র মহাভারতে মেলে ইউরেনাস,প্লুটো, নেপচুন এর কথাও!
আজ আমরা দেখে নেব আমাদের পূর্বজরা কিভাবে এই আশ্চর্য নিদর্শনসমূহ রেখে গিয়েছিলেন।
পৃথিবী ব্যাতিত ৭ টি গ্রহের কথা এবং আলো যে ৭ টি রশ্মি নিয়ে গঠিত এই চমকপ্রদ তথ্য সর্বপ্রথম পাওয়া যায় পবিত্র ঋগ্বেদ এ -
আ রোদসো অপৃণাদোত মধ্যম পঞ্চ দেবাঃ ঋতুশঃ সপ্তসপ্ত
(ঋগ্বেদ ১০।৫৫।৩)
অর্থাৎ হে দীপ্যমান তুমি ব্যাপ্ত হয়ে আছ এই অবনীতে, অন্তরীক্ষে,বায়ুতে,পঞ্চ পদার্থে,সপ্তলোকে,সাত আলোকরশ্মিতে,ও সকল ঋতুতে।
ঋগ্বেদ এর এই মন্ত্রে অবনী তথা পৃথিবী ও ৭ টি লোক বা গ্রহ অর্থাৎ মোট ৮ টি গ্রহের কথা বলা হয়েছে।অর্থাৎ আজ থেকে ৫০০০ বছর আগেই ঐশ্বরিক এই জ্ঞান ঋষিদের শিখিয়েছিল যে আমাদের এই সৌরজগতে ৮ টি গ্রহ আছে। আধুনিক বিজ্ঞান ২০০৬ পর্যন্ত প্লুটো কে গ্রহ হিসেবে বিবেচনা করে মোট ৯ টি গ্রহের কথা বললেও International Astronomical Union ২০০৬ সালে গ্রহের সব বৈশিষ্ট না থাকায় একে গ্রহের তালিকা বাদ দিয়ে চূড়ান্ত গ্রহের সংখ্যা নির্ধারণ করে ৮ টি।
উল্লেখ্য যে জ্যোতির্বিদ্যায় এই ৭ টি গ্রহ,রাহু-কেতু ও চন্দ্রকে একত্রে নবগ্রহ বলা হত।
ইউরেনাস গ্রহ
সবুজাভ সাদা রং এর এই গ্রহটির প্রথম বিস্তারিত বিবরণ দেন গ্রীক জ্যোতির্বিদ হিপারকোস ১২৮ খ্রিস্টপূর্বে,পরবর্তীতে টলেমীও এই গ্রহটিকে পর্যবেক্ষণ করেছেন।
মহাভারতে ভীষ্মপর্বের তৃতীয় অধ্যায়ের ১২ নং শ্লোকে ইউরেনাসকে শ্বেত গ্রহ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে যা তখন চিত্রা নক্ষত্রে তথা ৬ ডিগ্রী ৪০ তুলা অক্ষাংশ অতিক্রম করছিল-
শ্বেতোগ্রহস্তথ চিত্রাম সমিতক্রম্য তিষ্ঠতি
(ভীষ্ম পর্ব, ৫.৩.১২)
বিখ্যাত প্রাচীন জ্যোতির্বিদ নীলকণ্ঠ তার তন্ত্রসংগ্রহ গ্রন্থে মহাভারত এর উদ্যেগ পর্বের ১৪৩ নং অধ্যায়ে থাকা একই রকম শ্লোকের টিকাতে বলেন যে এই শ্বেতগ্রহ শনির মহাপদ অর্থাৎ এটি শনির চেয়েও দূরের অক্ষে অবস্থিত আমরা এখন জানি যে ইউরেনাস গ্রহ পর্যায়ক্রমে শনিগ্রহের ঠিক পরেই অবস্থিত!
নেপচুন
শ্যামোগ্রহ প্রজ্বলিত সা ধুমা... জ্যেষ্ঠম আক্রম্য তিষ্ঠতি
(মহাভারত ৫।৩।১৫)
অর্থাৎ নীলচে সাদা গ্রহ যেটি সা ধুমা বা ধোঁয়া দ্বারা আবৃত।
আমরা আধুনিক বিজ্ঞানের কারনে আজ জানি যে মিথেন গ্যাসের ঘন ধোঁয়ায় আবৃত নেপচুন গ্রহের রং নীল বর্ণের!
নীলকণ্ঠ তাঁর টীকায় নেপচুন গ্রহকে বলেছেন পরিঘা গ্রহ অর্থাৎ এটি সৌরজগতের একদম পরিঘা বা শেষপ্রান্তে অবস্থিত,বুঝতেই পারছেন পাঠক ১৫ শতকের এই জ্যোতির্বিদ জানতেন সৌরজগতে নেপচুনের অবস্থান!
প্লুটো
ক্রিত্তিকাসু গ্রহস্তীব্রনক্ষত্রে প্রথমে জ্বলন।
(মহাভারত ৫.৩.২৬)
অর্থাৎ ক্রিত্তিকা নক্ষত্রে তথা ২২ ডিগ্রী ৪০ অক্ষাংশে সেই সময়ে অবস্থিত গ্রহটি ই আজকের প্লুটো।
শেষ করব ভীষ্ম পর্বের তৃতীয় অধ্যয়ের ১৩ নং শ্লোকটি দিয়ে-
আসিবম ঘোরম করিস্যতি মহাগ্রহ।
মঘাশ্ব অঙ্গরকো বক্র শ্রবনে চ বৃহস্পতি।।
অর্থাৎ বৃহস্পতি নামে যে গ্রহ তাকে মহাগ্রহ বা সবচেয়ে বড় গ্রহ বলে শোনা যায়।আমরা সবাই নিশ্চয় জানি যে বৃহস্পতি ই সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ!
ওম শান্তি শান্তি শান্তি
বাংলাদেশ অগ্নিবীর
সত্য প্রকাশে নির্ভীক সৈনিক
আ রোদসো অপৃণাদোত মধ্যম পঞ্চ দেবাঃ ঋতুশঃ সপ্তসপ্ত
(ঋগ্বেদ ১০।৫৫।৩)
অর্থাৎ হে দীপ্যমান তুমি ব্যাপ্ত হয়ে আছ এই অবনীতে, অন্তরীক্ষে,বায়ুতে,পঞ্চ পদার্থে,সপ্তলোকে,সাত আলোকরশ্মিতে,ও সকল ঋতুতে।
ঋগ্বেদ এর এই মন্ত্রে অবনী তথা পৃথিবী ও ৭ টি লোক বা গ্রহ অর্থাৎ মোট ৮ টি গ্রহের কথা বলা হয়েছে।অর্থাৎ আজ থেকে ৫০০০ বছর আগেই ঐশ্বরিক এই জ্ঞান ঋষিদের শিখিয়েছিল যে আমাদের এই সৌরজগতে ৮ টি গ্রহ আছে। আধুনিক বিজ্ঞান ২০০৬ পর্যন্ত প্লুটো কে গ্রহ হিসেবে বিবেচনা করে মোট ৯ টি গ্রহের কথা বললেও International Astronomical Union ২০০৬ সালে গ্রহের সব বৈশিষ্ট না থাকায় একে গ্রহের তালিকা বাদ দিয়ে চূড়ান্ত গ্রহের সংখ্যা নির্ধারণ করে ৮ টি।
উল্লেখ্য যে জ্যোতির্বিদ্যায় এই ৭ টি গ্রহ,রাহু-কেতু ও চন্দ্রকে একত্রে নবগ্রহ বলা হত।
ইউরেনাস গ্রহ
সবুজাভ সাদা রং এর এই গ্রহটির প্রথম বিস্তারিত বিবরণ দেন গ্রীক জ্যোতির্বিদ হিপারকোস ১২৮ খ্রিস্টপূর্বে,পরবর্তীতে টলেমীও এই গ্রহটিকে পর্যবেক্ষণ করেছেন।
মহাভারতে ভীষ্মপর্বের তৃতীয় অধ্যায়ের ১২ নং শ্লোকে ইউরেনাসকে শ্বেত গ্রহ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে যা তখন চিত্রা নক্ষত্রে তথা ৬ ডিগ্রী ৪০ তুলা অক্ষাংশ অতিক্রম করছিল-
শ্বেতোগ্রহস্তথ চিত্রাম সমিতক্রম্য তিষ্ঠতি
(ভীষ্ম পর্ব, ৫.৩.১২)
বিখ্যাত প্রাচীন জ্যোতির্বিদ নীলকণ্ঠ তার তন্ত্রসংগ্রহ গ্রন্থে মহাভারত এর উদ্যেগ পর্বের ১৪৩ নং অধ্যায়ে থাকা একই রকম শ্লোকের টিকাতে বলেন যে এই শ্বেতগ্রহ শনির মহাপদ অর্থাৎ এটি শনির চেয়েও দূরের অক্ষে অবস্থিত আমরা এখন জানি যে ইউরেনাস গ্রহ পর্যায়ক্রমে শনিগ্রহের ঠিক পরেই অবস্থিত!
নেপচুন
শ্যামোগ্রহ প্রজ্বলিত সা ধুমা... জ্যেষ্ঠম আক্রম্য তিষ্ঠতি
(মহাভারত ৫।৩।১৫)
অর্থাৎ নীলচে সাদা গ্রহ যেটি সা ধুমা বা ধোঁয়া দ্বারা আবৃত।
আমরা আধুনিক বিজ্ঞানের কারনে আজ জানি যে মিথেন গ্যাসের ঘন ধোঁয়ায় আবৃত নেপচুন গ্রহের রং নীল বর্ণের!
নীলকণ্ঠ তাঁর টীকায় নেপচুন গ্রহকে বলেছেন পরিঘা গ্রহ অর্থাৎ এটি সৌরজগতের একদম পরিঘা বা শেষপ্রান্তে অবস্থিত,বুঝতেই পারছেন পাঠক ১৫ শতকের এই জ্যোতির্বিদ জানতেন সৌরজগতে নেপচুনের অবস্থান!
প্লুটো
ক্রিত্তিকাসু গ্রহস্তীব্রনক্ষত্রে প্রথমে জ্বলন।
(মহাভারত ৫.৩.২৬)
অর্থাৎ ক্রিত্তিকা নক্ষত্রে তথা ২২ ডিগ্রী ৪০ অক্ষাংশে সেই সময়ে অবস্থিত গ্রহটি ই আজকের প্লুটো।
শেষ করব ভীষ্ম পর্বের তৃতীয় অধ্যয়ের ১৩ নং শ্লোকটি দিয়ে-
আসিবম ঘোরম করিস্যতি মহাগ্রহ।
মঘাশ্ব অঙ্গরকো বক্র শ্রবনে চ বৃহস্পতি।।
অর্থাৎ বৃহস্পতি নামে যে গ্রহ তাকে মহাগ্রহ বা সবচেয়ে বড় গ্রহ বলে শোনা যায়।আমরা সবাই নিশ্চয় জানি যে বৃহস্পতি ই সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ!
ওম শান্তি শান্তি শান্তি
বাংলাদেশ অগ্নিবীর
সত্য প্রকাশে নির্ভীক সৈনিক