ছন্দ, কল্প, নিরুক্ত, জ্যোতিষ, ব্যাকরণ, শিক্ষা এই ছয়টি হল বেদাঙ্গ।এর মধ্যে কল্প হল বৈদিক যুগের গার্হস্থ্য ও ধর্মীয় বিধিবিধান। কল্প গুলোর মধ্যে শ্রৌত্যসূত্র ও স্মার্তসূত্র দুরকম সূত্র আছে যেগুলো শ্রুতি ও স্মৃতির সাথে যুক্ত।
শ্রৌত্যসূত্র গুলো দুইভাগে বিভক্ত। ধর্মসূত্র ও গৃহ্যসূত্র।মোট ঊনত্রিশটা সূত্রের কথা শাস্ত্রে উল্লেখ আছে যার মাঝে মোটামুটি এখন বার টা মতো পাওয়া যায়। এর
মধ্যে প্রধান ধর্মসূত্র আপস্তম্ব, বৌদ্ধায়ন, গৌতম ও বশিষ্ট ধর্মসূত্র। আর
প্রধান গৃহ্যসূত্র আপস্তম্ব, কৌষিতকী, আশ্বলায়ন, বৌদ্ধায়ন, পরাশর, গোভিল,
খাদির, হিরণ্যকেশী,সাংখ্যায়ন, মানব ও বরাহ গৃহ্যসূত্র। এই সূত্রগুলোর একটা
অংশ কালের বিবর্তনে প্রক্ষিপ্ত হয়েছে বটে, কল্পের কিছু বিধান এখনকার সময়
এসে হাস্যকর বলে মনে হতে পারে।তাই কল্প তুলনামূলক অপ্রচলিত। এই অপ্রচলিত
হবার সুযোগে এটা খৃস্টান মিশনারীদের অপপ্রচারের একটা কেন্দ্রবিন্দুতে
পরিণত। যাদের মাঝে বেশ প্রসিদ্ধ হলেন সুকুমারী ভট্টাচার্য নাম্নী এক
লেখিকা।তার "প্রাচীন ভারতে নারী ও সমাজ" ( প্রকৃতপক্ষে women and society
in ancient india এর বাংলা ভার্সন) কল্পের এমন প্রচুর রেফারেন্স দিয়ে
ভর্তি। কল্প নিয়ে ঘাঁটতে গিয়ে রেফারেন্সের একটা বড় অংশ ই সুকুমার রায়ের
"আবোল তাবোল" এর ন্যায় বলিয়াই প্রতীয়মান হয়েছে। প্রধান এগারটি ধর্ম ও
গৃহ্যসূত্রের রেফারেন্স গুলো কয়েকটি পর্বে বিশ্লেষণ করা হবে।
আপস্তম্ব ধর্মসূত্রঃ
রেফারেন্স 01:সতী
স্ত্রী সেই যে স্বামীকে তুষ্ট করে, পুত্রসন্তান জন্ম দেয় এবং স্বামীর
মুখের উপর জবাব দেয় না।আবার, নারী সভাতে উপস্থিত থাকতে পারে না। আপস্তম্ব
ধর্মসূত্র 1/10/51-53।
জবাবঃ
উক্ত রেফারেন্সটি একটি "কাঁঠালের আমসত্ত্ব বৈ আর কিছু না।
কেননা আপস্তম্ব ধর্মসূত্রের প্রথম কাণ্ডের দশম অধ্যায়ে মোট শ্লোক সংখ্যা ত্রিশ টি।
বাকি 23 টি শ্লোক হয়তো ওনার স্বপ্নে জিব্রাইল কিংবা তাঁর খুড়তুতো ভাই নাজিল করেছেন।
রেফারেন্স 02: আপস্তম্ব
ধর্মসূত্র 1/10/19,28 মতে নারী স্বামী কে ত্যাগ করলে তার জন্য কঠোর দণ্ড,
তবে পুরুষ স্ত্রীকে ত্যাগ করলে সামান্য প্রায়শ্চিত্ত ই বিধান।
জবাবঃ
আপস্তম্ব ধর্মসূত্রের 1/10/19 বা 1/10/28 এ এমন কিছু ই নেই।
যদি
বেদ মন্ত্রোচ্চারণের সময় কুকুর,গাধা,নেকড়ে, শৃগাল বা পেঁচক ডাকে, এবং যখন
সুর,কান্না,সংগীত বা শমোচ্চারণের(শান্তিমূলক অনুষ্ঠান) শব্দ শোনা যায়,তখন
বেদ মন্ত্রোচ্চারণ বন্ধ করতে হবে।
(আঃ ধঃ 1/10/19)
কেননা
এসব শব্দ মন্ত্রোচ্চারণের সময় উচ্চারণকারীর একনিষ্ঠতা ভঙ্গ করতে পারে।যার
ফলে বেদমন্ত্রোচ্চারণ অশুদ্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই এসব শব্দ শুনলে
মন্ত্রোচ্চারণ বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
এখানে নারীর ব্যাপারে কোনো কথার উল্লেখ নেই।
সদ্যোমৃত
ব্যক্তির উদ্দেশ্যে যজ্ঞে নিবেদিত খাদ্য গ্রহণের পর এক দিবসও এক সন্ধ্যা
অথবা খাদ্য হজম না হওয়া পর্যন্ত বেদ মন্ত্রোচ্চারণ করা যাবে না।
(আঃ ধঃ 1/10/28-29)
মৃত
ব্যক্তির অন্তিম সংস্কারের সাথে যুক্ত হবার পর স্বাভাবিকভাবে আমাদের মন
দুর্বল ও বিক্ষিপ্ত থাকে। বিক্ষিপ্ত ও দুর্বল মন নিয়ে বেদ বোঝা সম্ভব
নয়।তাই এই উক্তিটি বলা।
দ্রষ্টব্যঃ এখানেও নারী নিয়ে কিছুই বলা নেই।
কিন্তু স্বামী স্ত্রীকে বিনা কারণে ত্যাগ করলে যে সাজা তা মনুস্মৃতিতে বর্ণিত আছে।
"যদি কেউ কোন ন্যায়সঙ্গত কারণ ছাড়া মা, বাবা, স্ত্রী বা সন্তান ত্যাগ করে, তাকে কঠিন দণ্ড দিতে হবে।” (মনুসংহিতা ৮/৩৮৯)
রেফারেন্স 03:নারীর
প্রতি বৈষম্যপূর্ণ মনোভাব সবচেয়ে পরিস্ফুট হয়েছে আপস্তম্ব ধর্মসূত্রের
1/9/23,45এ। নারী হত্যার প্রায়শ্চিত্ত শৃগাল, কুকুর, কালো পাখি, শকুনি,
নেউল বা ছুঁচো হত্যার সমান ( এক দিনের কৃচ্ছ্রসাধন)
জবাবঃ
লেখিকার অন্য বেশিরভাগ রেফারেন্সের মতো ইহা ও আসমান থেকে প্রাপ্ত গায়েবি রেফারেন্স।
আপস্তম্ব ধর্মসূত্র প্রথম কাণ্ড নবম অধ্যায়ের শ্লোক সংখ্যা মাত্র আটাশটি।
যদি
ঊষালগ্নে অথবা যখন দণ্ড ছোঁড়ার মতো দূরত্বে থাকা একটি লাল গরু ও কালো গরু
পৃথক করা যায় (মূলত বিকেলের দিকে) বেদ মন্ত্রোচ্চারণ সন্ধ্যার শেষ পর্যন্ত
বন্ধ রাখতে হবে।
(আঃ ধঃ 1/9/23)
এখানে ও নারী নিয়ে কিছুই বলা নেই।
পুরোটাই সনাতন বিদ্বেষী মিশনারীদের মনগড়া কল্পনা।
নারীর প্রতি অপরাধের সাজাঃ
নারী অপহরণকারীদের মৃত্যুদণ্ড হবে।
(মনুসংহিতা ৮/৩২৩)
যারা নারী, শিশু ও গুণবান পণ্ডিতদের হত্যা করে, তাদের কঠিনতম শাস্তি দিতে হবে।
(মনুসংহিতা ৯/২৩২)
যারা
নারীদের ধর্ষণ করে বা উত্যক্ত করে বা তাদের ব্যাভিচারে প্ররোচিত করে তাদের
এমন শাস্তি দিতে হবে যাতে তা অন্যদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করে এবং কেউ তা
করতে আর সাহস না পায়।
(মনুসংহিতা ৮/৩৫২)
রেফারেন্স 04: আপস্তম্ব ধর্মসূত্র 2/7/15-17 মতে নারীর যজ্ঞে আহুতি দেবার কোনো অধিকার নেই।
জবাবঃ
উপরোক্ত রেফারেন্সে এমন কিছুই নেই। বরং সেখানে অতিথির প্রতি আচরণ ও অতিথিসেবার সুফল আলোচিত।
হে
বিদ্বান! যে স্ত্রী পুরুষ শুভকর্মে সমানমনস্ক হয়ে যজ্ঞ করে এবং ঈশ্বরের
উপাসনা দ্বারা আপন আত্মা কে পবিত্র করে এবং পবিত্র মিশ্রিত অন্নকে দরিদ্রের
মধ্যে বিতরন করে তারা সুখী হয়।
(ঋগ্বেদ ০ ৮।৩১।৫)
রেফারেন্স 05: আপস্তম্ব
ধর্মসূত্র 2/5/14 মতে বন্ধ্যা নারী দশ বছর পর, মৃতবৎসা স্ত্রী বারো বছর পর
পরিত্যাজ্যা, কলহপ্রবণা নারী তৎক্ষণাৎ পরিত্যাজ্যা।
জবাবঃ
আপস্তম্ব ধর্মসূত্রের বর্ণিত অংশে এমন কিছু নেই। সেখানে আচার্যের সামনে শিক্ষার্থীর আচরণ বিষয়ে বর্ণনা আছে।
(শিক্ষার্থীর)তার আচার্য বা বয়োজ্যেষ্ঠদের কথার মাঝে বাধা দেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত ।
কোনো জীবের নিন্দা বা গালাগাল থেকে বিরত থাকা উচিত ।
কিংবা কোনো বেদের সাথে অন্য নিন্দাজনক বস্তুর তুলনা করে অবমাননা হতে বিরত থাকা উচিত।
(আঃ ধঃ 2/5/11-14)
রেফারেন্স 06: আপস্তম্ব ধর্মসূত্র 2/3/4 বিবাহিত নারীর পক্ষে যৌনজীবন থেকে বিচ্যুতির শাস্তি অত্যন্ত ভয়াবহ যা উচ্চারণের ও অযোগ্য।
জবাবঃ
আপস্তম্ব ধর্মসূত্র ঐ অংশের বিষয় দেবতার উদ্দেশ্যে নিবেদন করা খাদ্য রান্নাপদ্ধতি।
আর্যজাতির বিশুদ্ধচিত্ত লোকেরা দেবতাকে নিবেদনের উদ্দেশ্যে খাদ্য রন্ধন করবে।
রন্ধনকারী খাদ্যের দিকে মুখ দিয়ে কথা বলা, কাশি দেওয়া, হাঁচি দেওয়া থেকে বিরত থাকবে।
তার চুল, কাপড় বা শরীর স্পর্শ করলে হাত জল দ্বারা ধৌত করা উচিত।
শূদ্র ও চাইলে কোনো আর্যের তত্ত্বাবধানে থেকে রান্নার কাজ করতে পারে।
তাদের ও এক ই নিয়ম মেনে চলতে হবে।
(আঃ ধঃ 2/3/1-5)
কেউ এখানে যৌনজীবনের কোনো কথা খুঁজে পেলে তার চোখে কত জোড়া চশমার প্রয়োজন তা ঈশ্বর ই জানেন।
গৌতম ধর্মসূত্রঃ
রেফারেন্স 01:গৌতম ধর্মসূত্র 12/39 এ নারীকে পণ্যের সাথে তুলনা করা হয়েছে।
জবাবঃ
যখন মানসিকভাবে সুস্থ পূর্ণবয়স্ক কোনো ব্যক্তির সম্পদ তার চোখের সামনে অন্যরা দশবছর ভোগদখল করে, তখন তা ভোগদখলকারীর হয়ে যায়।
ব্যক্তি বেদজ্ঞ,তপস্বী বা রাজকর্মচারী হলে এর ব্যতিক্রম হবে।
পশু, জমি বা স্ত্রীলোকের ক্ষেত্রে এমন বিধান প্রযোজ্য হবে না।
(গৌঃ ধঃ 12/37-39)
এখানে
মূলত যে বিষয়টি ফুটে উঠেছে তা সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্ব বিবাদ নিষ্পত্তি।
অনেক সময় এক ব্যক্তি সম্পদ অন্যকে বিক্রি করার পর তার বিরোধিতা না করলেও
পরের বংশধরেরা সেই সম্পদের পুনরায় মালিকানা দাবি করে। কিন্তু এখানে বলা ই
হচ্ছে স্ত্রীলোকের ক্ষেত্রে এই বিধান কখনোই প্রযোজ্য না। একজনের স্ত্রীলোক
অন্যজন ব্যবহার করবে এই ধারণা ও সঠিক হওয়া অসম্ভব। তাই এক্ষেত্রে
কল্পসূত্রের বিধান টি ই সমীচীন।
বশিষ্ট ধর্মসূত্রঃ
রেফারেন্স 01: বশিষ্ট ধর্মসূত্র 28/2-3 মতে বন্ধ্যা পুত্রহীন নারী পরিত্যাজ্যা।
জবাবঃ
এখানে এমন কিছু তো নেই ই। বরং বশিষ্ট ধর্মসূত্রের এই অংশে কৃত উক্তি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ নারীবাদী উক্তির মধ্যে অন্যতম।
নারী
তার নিজ ইচ্ছায় ব্যাভিচারী হোক বা জোর করে ই তাকে ধর্ষিত করা হোক। তাকে
ধর্ষণ বা হরণ যা ই করা হোক, বিনষ্ট হওয়া পত্নী পরিত্যাজ্য নয়। পত্নীকে
পরিত্যাগ করার অনুমতি কোনো শাস্ত্রেই নেই। স্বামীর উচিত তার ঋতুকালীন সময়ের
অপেক্ষা করা। ঋতুস্রাবের দ্বারা ই সে পবিত্র হয়।
(বঃ ধঃ 28/2-3)
রেফারেন্স
02: বশিষ্ট ধর্মসূত্র 21/8-10 ও 21/12 তে বিশেষত নিম্নবর্গীয় পুরুষের সাথে
ব্যভিচারী নারীর প্রতি অমানবিক সাজা আছে যা পুরুষের ক্ষেত্রে নেই।
জবাবঃ
এই অংশে ব্যাভিচারের সাজা বর্ণিত আছে।
ব্যাভিচারকারিনী
সম্বৎসর ঘৃত দ্বারা শোভিত বস্ত্র পরিধান করবে ও গোবর বা কুশা ঘাস নির্মিত
শয্যা গ্রহণ করবে। এরপর আটশত অগ্নি আহুতির মাধ্যমে সেই নারী শুদ্ধ হবে।
যদি ভাসুরের সাথে ব্যাভিচার করে তবে সে স্বামীর মাঙ্গলিক আচারে অংশ নিতে পারবে না।
চার
প্রকার স্ত্রী পরিত্যাজ্যা। শিষ্য বা ভাসুরের সাথে ব্যাভিচারকারিনী,
স্বামী কে হত্যাকারী ও নিম্ন বর্ণের মানুষের সাথে ব্যাভিচারকারী।
ব্রাহ্মণ,ক্ষত্রিয়,বৈশ্য
শ্রেণীর নারীরা শূদ্রের সাথে ব্যাভিচারী হলে ব্রতের মাধ্যমে শুদ্ধ হয় (সেই
ব্রতপূর্বে কথিত ঋতুস্রাব) কেবল যদি সন্তান উৎপাদন না করে।
যেসব
নারী নিম্নবর্ণের পুরুষের সাথে ব্যাভিচার করেছে, তারা সান্তপন ব্রত ( তিন
দিন করে গরম দুগ্ধ, গরম ঘৃত ও গরম জল ভক্ষণের পর তিনদিন বায়ু ভক্ষণ তথা
উপবাস) ও চান্দ্রায়ন ব্রত( এক মাস চন্দ্রকলার হ্রাস বৃদ্ধির সাথে সাথে
পরিমিত খাদ্য ভক্ষণ) করলে শুদ্ধ হবে।
( বঃ ধঃ 21/8-13)
নারীর প্রতি অমানবিকতার কিছু ই এখানে নেই। বরং ব্যাভিচারের মতো পাপের প্রায়শ্চিত্ত এখানে বড় ই সামান্য।
পুরুষদের প্রতি ও প্রায় এক ই সাজা কথিত আছে কল্পে।
ব্রাহ্মণ
পুরুষ অনিচ্ছাকৃত অন্য ব্রাহ্মণ রমণীর সাথে ব্যাভিচার করলে তাকে সান্তপন
ব্রত করতে হবে যদি ঐ রমণীর পতি তার কৃত ক্রিয়া করে, আর যদি ঐ রমণীর পতি তার
ক্রিয়া না করে, তখন আরো কঠোর ব্রত করতে হয়। ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যের জন্য ও এক ই
নীতি প্রযোজ্য।
(বঃ ধঃ 21/16-17)
আবার, কেবল উচ্চবর্ণের নারী ও নিম্নবর্ণের পুরুষের ব্যাভিচারে ই সাজা নেই, নিম্নবর্ণের নারী গমনের সাজা ও আছে।
যদি
কোনো পুরুষ নিম্নবর্ণের নারী গমন করে তবে সে একবছর ব্যাপী ব্রত করবে। সে
অনিচ্ছাকৃতভাবে গমন করলে বারো দিনের জন্য পালন করবে। আর ঋতুকালীন সময়
স্ত্রীগমন করলে তিনদিন ব্রত পালন করবে।
(বঃ ধঃ 23/32)
তবে কিছু কিছু সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যাভিচার কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এ প্রসঙ্গে গৌতম ধর্মসূত্রে কথিত আছে
যে
মানব নিজের জ্যেষ্ঠস্থানীয় কারো পত্নীর সাথে ব্যভিচার করে, সে উত্তপ্ত লৌহ
তে শয্যাগ্রহণ করবে, অথবা তপ্ত লৌহদণ্ড জড়িয়ে ধরবে অথবা তার লিঙ্গচ্ছেদন
করবে।লিঙ্গ হস্তে ধরে দক্ষিণ পশ্চিম দিকে যাবে যতক্ষণ না সে মারা যাবে।
মৃত্যুর পরে ই তার শুদ্ধি হবে।
নারী
বান্ধবী, বোন, সমগোত্রীয় নারী,শিষ্যপত্নী, পুত্রবধূ ও গাভীর সাথে
ব্যাভিচার জ্যেষ্ঠস্থানীয় কারো পত্নীর সাথে ব্যভিচারের সমতুল্য।
(গৌঃ ধঃ 23/8-12)
পাখণ্ডিঃ তবে এই শাস্তিগুলো বর্তমান যুগের সাপেক্ষে অত্যন্ত কঠিন। সহজ উপায় আছে কি?
আর্যঃ অবশ্যই সহজ উপায় আছে নিজের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার।
যদি কোনো ব্যক্তি শতবার অপরাধ করে অথচ বেদ মনে রাখে, বেদের জ্ঞান সব পাপ কে ধ্বংস করে।
দাবানল যেমন সবুজ গাছ ও ধ্বংস করে, এক ই ভাবে বেদের অগ্নি সব পাপ ধ্বংস করে।
ব্যক্তি যদি পুরো পৃথিবী কে ও হত্যা করে বা যে কারো কাছে খায়, ঋগ্বেদ জানা ব্রাহ্মণের কোনো পাপ হয় না।
(বঃ ধঃ 27/1-3)
পাখণ্ডিঃ এটা তো একেবারেই ভয়ংকর কথা। বেদ পাঠ করলে কোনো পাপ স্পর্শ না করলে বৈদিকেরা জগতের জন্য ক্ষতিকর।
আর্যঃ বেদ অনিচ্ছাকৃত সব রকম পাপ ধ্বংস করতে পারে, কিন্তু নিজের ইচ্ছায় করা পাপের জন্য বেদপাঠ করলে প্রায়শ্চিত্ত হয় না।
বেদের
এই শক্তি কে কাজে লাগিয়ে পাপকর্মে আনন্দ অনুভব করা অনুচিত। বেদের জ্ঞান
শুধু অজ্ঞানত বা অবহেলাবশত করা পাপের ধ্বংসসাধন করে, অন্যগুলোর নয়।
(বঃ ধঃ 27/4)
রেফারেন্স 03: বশিষ্ট ধর্মসূত্র 2/2-3 ও 2/44-45 ও নারীর প্রতি অবমাননাকর।
জবাবঃ
এমন কিছু ই নেই। এগুলো কুমারী মেরীর সন্তান জন্ম দেবার মতোই ঘটনা।
ব্রাহ্মণ
ক্ষত্রিয় বৈশ্য ও শূদ্র এই হল চারবর্ণ। এর মধ্যে ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় ও
বৈশ্য দ্বিজ। এদের প্রথম জন্ম মাতৃগর্ভে ও দ্বিতীয় জন্ম উপনয়নে। পরেরজন্মে
আচার্য তার পিতা ও সাবিত্রী তার মাতা
( বঃ ধঃ 2/2-3)
অন্যথা
তারা দুষ্টমতি লোকদের বা অধার্মিকদের নিকট মুক্তভাবে সুদসহ ঋণদান করতে
পারবে। সোনার সুদ আসলের দ্বিগুণ, ফসলের সুদ তিনগুণ। ফসলের সুদ মশলাদি
স্বাদবর্ধকের জন্য ও প্রযোজ্য হবে।
(বঃ ধঃ 2/43-45)