কলিতে সর্বপ্রথম ধর্মীয় কর্ম হলো ব্রহ্মচর্য অবলম্বনপূর্ব্বক বেদ অধ্যয়ন করা!
√কিন্তু তথাকথিত মহাজ্ঞানী পণ্ডিতগণের মত, এই স্বল্পায়ুর যুগে মানুষের পক্ষে বেদ পাঠ করা সম্ভব নয়, তাই গীতা ও ভাগবত পাঠ করুন। আর এই স্বল্পায়ুতে যজ্ঞ না করে কীর্তন করুন।
√কিন্তু মহাভারতে দেখতে পেলাম, এক ঋষি পুত্র পিতাকে বলছে, এই আয়ু স্বল্পতার যুগে আমাদের কী করা উচিত? তখন পিতা বললেন, প্রথমেই ব্রহ্মচর্য পালন করে বেদপাঠ করা উচিত। তারপর যজ্ঞ ও সন্তান উৎপাদন করো।
মহাভারত থেকে রেফারেন্সসহ প্রমাণ প্রদান করা হলো-
দ্বিজাতেঃ কস্যচিৎ পার্থ। স্বাধ্যায়নিরতস্য বৈ।
বভূব পুত্রো মেধাবী মেধাবী নাম নামতঃ।।
মহাভারতঃশান্তিপর্ব ১৬৯/৩
সরলার্থঃ---
পৃথানন্দন! বেদপাঠনিরত কোন ব্রাহ্মণের মেধাবী নামে এক মেধাবী পুত্র ছিলো।
সোহব্রবীৎ পিতরং পুত্রঃ স্বাধ্যায়করণে রতম্।
মোক্ষধর্ম্মার্থকুশলো লোকতত্ত্ববিচক্ষণঃ।।
মহাভারতঃশান্তিপর্ব ১৬৯/৪
সরলার্থঃ---
মোক্ষধর্মবোধে নিপুণ ও লোকচবিত্রাভিজ্ঞ সেই পুত্র একদা বেদপাঠনিরত পিতাকে বলিয়াছিল।
পুত্র উবাচ।
ধীরঃ কিংস্বিৎ তাত। কুর্য্যাৎ প্রজানন্ হ্যয়ুর্ভ্রশ্যতে মানবানাম্।
পিতস্তদাচক্ষ্ব যথার্থযোগং মমানুপূর্ব্বা যেন ধর্ম্মং চরেয়ম্।।
মহাভারতঃশান্তিপর্ব ১৬৯/৫
সরলার্থঃ----
পুত্র বলিল--- পিতা! মানুষগণের আয়ু সত্বব সত্ববই ক্ষয় পাইতেছে, ইহা জানিয়া বুদ্ধিমান লোক কি করিবেন? অর্থসন্বদ্ধ স্থির রাখিয়া আনুপূর্ব্বীক্রমে তাহা আপনি আমার নিকট বলুন, তদনুসারে আমি ধর্মচারণ করিব।
.
পিতোবাচ
বেদানধীত্য ব্রহ্মচর্য্যেণ পুত্র। পুত্রানিচ্ছেৎ পাবনার্থং পিতৃণাম্।
অগ্নীনাধায় বিধিবাচ্চেষ্টযজ্ঞো বনং প্রবিশ্যাথ মুনির্বুভূষেৎ।।
মহাভারতঃশান্তিপর্ব ১৬৯/৬
সরলার্থঃ----
পিতা বলিলেন---পুত্র! প্রথমে ব্রহ্মচর্য্য অবলম্বনপূর্ব্বক বেদ অধ্যয়ন করিয়া পিতৃগণের ঋণ পরিশোধ করিবার জন্যে পুত্রোৎপাদনের ইচ্ছা করিবে; তাহার পর যথাবিধানে অগ্নি স্থাপন করিয়া অগ্নিহোত্রপ্রভৃতি যজ্ঞ করিবে ; তৎপরে বনে যাইয়া মুনি হইয়ার ইচ্ছা করিবে।