🙏 গতকাল এক শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম নেমন্তন্ন খেতে , ভারতের মাটিতে এটাই প্রথম আমার শ্রাদ্ধনুষ্ঠানে
সেই অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখি 🧐 পুরুত ঠাকুরের সাঙ্গপাঙ্গরা অর্থাৎ কির্তনীয়ার দল অন্যত্র রান্নার আয়োজন করিতেছেন , নিজেরা খাওয়ার জন্য ।
👉গৃহকর্তাকে জিজ্ঞেস করলাম ; কি ব্যাপার আপনারা ভারাকরে রাঁধুনী এনেছেন কেন , এরাই তো রান্না করছে ?
গৃহকর্তা উত্তরে বলিলেন পুরুত মশাইরা আমাদের তৈরি করা খাবার খায় না , তাই ওরা নিজেরাই রান্না করে খাচ্ছে ।
🎙️আমি জিজ্ঞেস করলাম (পুরতকে শুনিয়ে শুনিয়ে)!
বাজার সদাই মানে চাল-ডাল কি ওরা নিয়ে এসেছে ?
গৃহস্থ বলিল না আমাদের চাল-ডাল , রসুন-পেঁয়াজ ,মাছ সবকিছুই ।
🎙️ আমি গৃহস্থকে বলিলাম— আপনাদের চাল-ডাল ,মাছ সবকিছুই যদি খাওয়া যায় তাহলে আপনাদের হাতের রান্নায় সমস্যা কি ?
গৃহস্থ বলিল— আমাদের এলাকায় এমনটাই চলিয়া আসিতেছে ।
🎙️ আমি গৃহস্থকে বলিলাম আপনাদের পুরুত ঠাকুরের কাছে জিজ্ঞেস করি , কেন ওনারা আপনাদের হাতের রান্না খাবে না ?
👉গৃহস্থ আমাকে নিষেধ করিলেন ।
এই হচ্ছে আমাদের অবস্থা !
🎙️ প্রিয় সুধী এবার দেখুন শাস্ত্র কি বলছে—
বৈদিক যুগে ভক্ষ্যাভক্ষ্যের
বেদ বলিতেছেন— ওম্ সমানি প্রপা সহবোহন্ন ভাগাঃ সমানে যোক্তেসহবো যুনজমি (অথর্ব্ব বেদ ৩।৩০।৬)
অর্থাৎ হে মনুষ্য ! তোমাদের জলপানের স্থান এক হউক , তোমাদের ভজন একসঙ্গেই হউক । আমি তোমাদিগকে একসঙ্গে মিলাইয়াছি ।” গোঁড়া পন্ডিত সায়ণাচার্য্যও এই মন্ত্রের ভাষ্য করিতে গিয়া লিখেছেন— “সহবোহন্ন ভাগাঃ অন্নভাগশ্চ সহএব ভবতু পরস্পরানুরাগবশে
অর্থাৎ— তোমাদের অন্নভোগ একসঙ্গে হউক । পরস্পরের প্রতি স্নেহ বৃদ্ধি করিবার জন্য তোমরা একসঙ্গে অন্নপানাদি গ্রহণ কর ।”
প্রাচীনকালে রাজসূয়াদি যজ্ঞে চারিবর্ণ একসঙ্গে এক পংক্তিতে বসিয়াই ভোজন করিত ।
উৎকল শ্রেণীর ব্রাহ্মণের মধ্য হইতে তখন কেহই পাচক বৃত্তি করিত না । সুদ সূপকার আদি শূদ্রেরাই তখন রন্ধনশালায় রন্ধন করিত ।
মহর্ষি আপস্তম্ব বলিতেছেন— “আর্য্যাধিষ্ঠীত
আর্য্যাদের অধ্যক্ষতায় শূদ্রেরাই রন্ধন করিবে ।” তখন শূদ্র অর্থে নিরেট মূর্খ বুঝাইত ।
মহর্ষি মনু বিধান দিয়েছেন যে শূদ্রগণ দাস্য কর্ম্মদ্বারা জীবিকা অর্জনে অক্ষম হইলে সূপকার কর্ম্ম অর্থাৎ পাচক গিরি করিয়া পরিবার প্রতিপালন করিবে (১০।৯৯) ।
স্কন্দ পুরাণ বলিতেছেন—
“বিপ্রাদি বর্ণত্রয়স্য
সেবনং শূদ্র কর্ম্মশ্চ ।
জীবেচ্চ সততং
শূদ্রশ্চক্ষমে কারকর্ম্মণা ।।
অর্থাৎ বিপ্রাদি তিন বর্ণের সেবা করাই শূদ্রের কার্য্য , অক্ষম হইলে পাচকগিরি করিয়া জীবিকা অর্জন করিবে ।” মহর্ষি মনু অন্য একস্থানে বলিতেছেন—
“আর্দ্ধীকঃ কূলমিত্রঞ্চ
গোপাল দাস নাপিতৌ ।
এতে শূদ্রেষু ভোজ্যান্না
যশ্চত্মানং নিবেদয়েৎ”
(মনু সংহিতা ৪।২৫৩)
অর্থাৎ যে ব্যক্তি কৃষিকার্য্য করিয়া অর্ধেক ভাগ দেয় , কুলমিত্র ,গোপালক , চাকর , নাপিত ও আত্মসমর্পণকারী শূদ্র ইহাদের অন্ন ভোজন করা যায় ।”
বিষ্ণু (৫৭।১৬ ) যাজ্ঞ বল্ক (১।১৬৭) যম (১।২০) পরাশর (১১।২০) গৌতম (৭ম অধ্যায়) ও ব্যাস (৩।৫১) সংহিতাতে এবং কুর্ম্ম (উপরি ১৭।১৭) ও গরুড় (পূর্বে ৯৫।৬৬) পুরাণের এই ব্যবস্থাই প্রদত্ত হইয়াছে ।
“পায়সং স্নেহপক্কং যদ্
গোরস শ্চৈব শক্তবঃ ।
পিণ্যাক ঞ্চৈব তৈলঞ্চ
শূদ্রাদ্ গ্রাহংদ্বিজাতিভ
“মহর্ষি আপস্তম্ব স্বীয় ধর্মসূত্রে ভক্ষ্যাভক্ষ্যের
ক আশ্যান্ন (১।৬—১৯)
“কাহার অন্য খাইতে হইবে ? “ইপ্সোদতি কম্বঃ (১।৬—১৯)
“কম্ব ঋষি উত্তর করিলেন—
যে খাওয়াইতে চাহে ।”
পূণ্য ইতি কৌৎসঃ (৪।১।৬—১৯) “কৌৎস ঋষি উত্তর করিলেন—
যিনি পবিত্র শুদ্ধাচারী তাঁহার অন্ন খাইতে হইবে ।
যঃ কশ্চিদ্ দদাদিতি বার্য্যাণিঃ (৫।১৬।১৯) ।
“বার্য্যায়ণি ঋষি উত্তর করিলেন—
“যে কেহ দিলেই তাহার অন্ন খাইতে হইবে ।
তখন আপস্তম্ব ঋষি বলিলেন—
“সর্ব বর্ণনাং স্বধর্ম্মে
বর্ত্তমানানাং ভোক্তব্যম্ ।
অর্থাৎ স্বধর্মে স্থির সর্ব্ববর্ণের অন্নই গ্রহণ করা যায় ।।
অনুগ্রহপূর্বক ঋগ্বেদ দশম মন্ডল নব্বই সুক্তের মন্ত্রগুলো ভালোভাবে যথার্থ বাংলায় সর্বোচ্চ ভাবানুবাদের অবস্থানটা মানুষদেরকে পরিচিত করানো উচিত। এই মন্ত্রের 12 নম্বর মন্ত্রটি সবথেকে বেশি মানুষদেরকে বিভ্রান্ত করার জন্য ব্যবহার করা হয়। অথচ এই মন্ত্রে রূপক আকারে যে বিষয়টি বলা হয়েছে সে বিষয়টি সম্পর্কে কোন ধরনের জ্ঞাত করানো হয় না। আর এই মন্ত্রে কোথাও উল্লেখ নেই ব্রহ্মগুন যুক্ত মানুষ অর্থাৎ ব্রাহ্মণের সন্তান মাত্রই ব্রাহ্মণ হবে বা অন্যান্য গুণ যুক্ত মানুষের সন্তান সেই গুন যুক্তই হবে।
ReplyDeletehttps://www.shongshoy.com/references/hinduism সাইটে সনাতন ধমের অপপ্রচারের জবাব agniveerbangla.com দিলে ভাল হোত।
ReplyDelete