দৈনিক বেদবাণী


এই সমগ্র সংসার নিরোগ এবং শুভচিন্তা যুক্ত হোক । যজুর্বেদ ১৬.৪                    সূর্য-এর আলোয় স্বয়ং আলোহীন চাঁদ আলোকিত হয় । ঋগ্বেদ ৫.৪০.৫                    প্রশংসনীয় সংস্কৃতি, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও মাতৃভূমি— এই ত্রয়ী সুখ-সমৃদ্ধি প্রদান করে। ঋগ্বেদ ১.১৩.৯                    উত্তম জীবন লাভের জন্য আমাদের জ্ঞানীদের সাহচর্যে চলা উচিৎ। ঋগ্বেদ ১.১২.১৬                    যে ব্যক্তি সম্পদ বা সুখ বা জ্ঞান নিঃস্বার্থভাবে দান করে, সে-ই প্রকৃত মিত্র। ঋগ্বেদ ২.৩০.৭                    মানুষ কর্ম দ্বারাই জগতে মহত্ত্ব ও প্রসিদ্ধি লাভ করে। ঋগ্বেদ ৩.৩৬.১                    হে পতি! তোমার স্ত্রীই গৃহ, স্ত্রীই সন্তানের আশ্রয়। ঋগ্বেদ ৩.৫৩.৪                    পরমাত্মার নিয়ম বিনষ্ট হয় না; তা অটুট, অচল ও অপরিবর্তনীয়। ঋগ্বেদ ৩.৫৪.১৮                    এই ধর্মের মার্গই সনাতন, এই পথে চলেই মানবগণ উন্নতি লাভ করে। ঋগ্বেদ ৪.১৮.১                    পরমাত্মার নিকট কোনো মানুষই বড় বা ছোট নয়। সকল মানুষই সমান এবং পরস্পরের ভ্রাতৃস্বরূপ। ঋগ্বেদ ৫.৬০.৫                    যে ব্যক্তি অকারণে অন্যের নিন্দা করে, সে নিজেও নিন্দার পাত্র হয়। ঋগ্বেদ ৫.২.৬                    নিশ্চিতরূপে এই চতুর্বেদ কল্যাণপ্রদায়িনী এবং মানবকে জ্ঞান প্রদান করে ধারণকারিণী। ঋগ্বেদ ৫.৪৭.৪                    বীর মানবের জন্য পর্বতও সুগম হয়ে যায়। ঋগ্বেদ ৬.২৪.৮                    আমরা অন্যের সঞ্চিত পাপের কর্মফল ভোগ করি না। ঋগ্বেদ ৬.৫১.৭                    হে মিত্রগণ! ওঠো— উদ্যমী হও, সাবধান হও এবং এই সংসাররূপী নদীকে অতিক্রম করো। ঋগ্বেদ ১০.৫৩.৮







রাবণ কেমন ছিলেন ? 'ব্রাহ্মণ' ছিলেন কি ?

সত্যান্বেষী
0

 


সারা ভারতবর্ষের সনাতনীগণ যেখানে ভগবান শ্রীরামচন্দ্র, শ্রীকৃষ্ণকে ভক্তিভরে পূজা করে, ঠিক সেখানেই কতিপয় বিকৃত মস্তিষ্কের অধিকারী লোক রাবণ, কংস সহ মহিষাসুরের পূজা করতে চান। এর মধ্যে সাম্প্রতিক কালে রাবণকে‌ মহৎ ব্যক্তি হিসেবে প্রচার করতে তারা একদম ব্যস্ত হয়ে পরেছেন। এর সাথে শৈবসম্প্রদায়ভূক্ত কিছু ব্যক্তিও রাবণ মহিমা বর্ণন করতেছে। তাহাদিগের মতে রাবণ মহান শৈব, মহান ব্রাহ্মণ। রাবন নাকি মহাদেবের স্তুতিতে শিবতাণ্ডবস্তোত্র লিখেছেন, যা বাল্মিকী রামায়ণেই পাওয়া যায় না। কিন্তু তাহাদিগের মতের “মহান” রাবণ কেমন ছিলেন? ব্রাহ্মণ ছিলেন কী? আসুন সত্য জানি,
  • ধর্ষণকারী রাবণ
 
সুন্দরকাণ্ডের বর্ণনানুসারের রাবণ যখন কৈলাসে অবস্থান করছিল, তখন সেই পথ দিয়ে রম্ভা গমন করছিল। তখন নারী লোভী কামুক রাবণ রম্ভাকে সম্ভোগ করতে চায়, তখন রাবণ বললো,
 
তদেবং প্রাঞ্জলিঃ প্রত্তো যাচতে ত্বাং দশাননঃ।
ভর্তুভর্তা বিধাতা চ ত্রৈলোক্যস্য ভজস্ব মাম্৷৷ ২৭
ত্রিলোকের স্বামীরও স্বামী অর্থাৎ বিধাতা এই দশমুখ রাবণ আজ বিনীতভাবে হাত জোড় করে তোমাকে চাইছে। সুন্দরি! তুমি আমাকে স্বীকার করো।
 
এবমুক্তাব্রবীদ্রম্ভা বেপমানা কৃতাঞ্জলিঃ।
প্রসীদ নার্হসে বক্তুমীদৃশং ত্বং হি মে গুরুঃ ৷৷ ২৮
রাবণ এই কথা বলায় রম্ভা কেঁপে উঠে হাত জোড় করে বললেন – ‘প্রভু ! প্রসন্ন হোন—আমাকে কৃপা করুন। এরূপ কথা আপনার মুখ থেকে বার হওয়া উচিত নয়। কারণ আপনি আমার গুরুজন—পিতার তুল্য।
 
সেই পিতৃতুল্য রাবণ রম্ভার সাথে কী করলো?
 
এবমুক্ত্বা স তাং রক্ষো নিবেশ্য চ শিলাতলে ৷৷ ৪০
কামভোগাভিসংরক্তো মৈথুনায়োপচক্রমে।
এই কথা বলে সেই রাক্ষস রম্ভাকে বলপূর্বক শিলায় বসিয়ে, কামভোগে আসক্ত হয়ে তার সঙ্গে সমাগম করেন।
 
সা বিমুক্তা ততো রম্ভা ভ্রষ্টমালাবিভূষণা। ৪১
গজেন্দ্রাক্রীড়মথিতা নদীবাকুলতা গতা।
তাঁর পুষ্পহার ছিঁড়ে পড়ে যায়, সমস্ত গহনা ছিঁড়ে খুঁড়ে যায়। উপভোগের পর রাবণ রম্ভাকে ছেড়ে দেন। তাঁর অবস্থা সেই নদীর মতো হয়ে যায়, যাতে কোনো গজরাজ ক্রীড়া করে মন্থন করে।
 
  • ব্রাহ্মণ হত্যাকারী রাবণ
অরণ্যকাণ্ডে একত্রিংশ কাণ্ডে দেখা যায়,
 
মন্ত্রেরভিষ্টুতং পুণ্যমধ্যরেষু দ্বিজাতিভিঃ৷৷ ১৯
হবিধানেষু যঃ সোমমুপন্তি মহাবলঃ।
যজ্ঞের সময় ব্রাহ্মণগণ যজ্ঞস্থলে সোমদ্রব্যাধারে মন্ত্রপূত পবিত্র সোমরস দান করলে মহাবলী রাবণ তা নষ্ট করে দেয়।
 
প্রাপ্তযজ্ঞহরং দুষ্টং ব্রহ্মঘ্নং ক্ররকারিণম্। ২০
কর্কশ নিরনুক্রোশং প্রজানামহিতে রতম্।
রাবণক ছিলেন যজ্ঞসমাপ্তিকালে সেই যজ্ঞ নষ্টকারী, দুষ্ট, ব্রাহ্মণহন্তা, নিষ্ঠুরকর্মা, রুক্ষ, নির্দয় প্রজাদের অহিতকারী।
 
এমনকি এইসব দেখে স্বয়ং চরমকামুক শূর্পণখা পর্যন্ত বলেন,
 
প্ৰমন্তঃ কামভোগেষু স্বৈরবৃত্তো নিরঙ্কুশঃ।
সমুৎপন্নং ভয়ং ঘোরং বোদ্ধব্যং নাববুধ্যমে । ২
হে রাক্ষসরাজ ! স্বেচ্ছাচারিতাহেতু অবাধে কামভোগাসক্ত হয়ে জ্ঞাতব্য আসন্ন ভয়ঙ্কর বিপদ তুমি বুঝতে পারছ না।
 
এই হলো কপট রাবণ সত্য চরিত্র। তারপরও কতিপয় অসাধু ব্যক্তি কেন যে তাকে মহান করতে চায় কে জানে? হয়তো এর ফলে রাবণের মতন তারাও এইসব ধর্ম করতে পারবে।
 
অন্যদিকে ব্রাহ্মণ সম্বন্ধে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন,
 
শমো দমস্তপঃ শৌচং ক্ষান্তিরাজবমেব চ । 
জ্ঞানং বিজ্ঞানমাস্তিক্যং ব্রহ্মকর্ম স্বভাবজম্ ॥১৮।৪২॥
অর্থাৎ, অন্তরিন্দ্রিয় ও বাহ্যেন্দ্রিয়ের সংযম, তপস্যা, বাহ্যাভ্যন্তর শুচিতা, সহিষ্ণুতা, সরলতা, শাস্ত্রজ্ঞান, তত্ত্বানুভূতি এবং শাস্ত্রবাক্যে স্থির বিশ্বাস এইগুলি ব্রাহ্মণগণের স্বভাবজ কৰ্ম।
 
তাই রাবণকে রাবণরূপেই জানুন। রাবণবাদীরা রাবণের মতই চরিত্রবান, শ্রীরামচন্দ্রের অনুসারী হয়ে আসুন আমরা সেই দুশ্চরিত্রবান কপটদের প্রতিহত করি।
 
বাংলাদেশ অগ্নিবীর
ব্রাহ্মণ কে? বিস্তারিত জানতে 👇https://www.agniveerbangla.org/2022/05/blog-post.html

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)