দৈনিক বেদবাণী


এই সমগ্র সংসার নিরোগ এবং শুভচিন্তা যুক্ত হোক । যজুর্বেদ ১৬.৪                    সূর্য-এর আলোয় স্বয়ং আলোহীন চাঁদ আলোকিত হয় । ঋগ্বেদ ৫.৪০.৫                    প্রশংসনীয় সংস্কৃতি, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও মাতৃভূমি— এই ত্রয়ী সুখ-সমৃদ্ধি প্রদান করে। ঋগ্বেদ ১.১৩.৯                    উত্তম জীবন লাভের জন্য আমাদের জ্ঞানীদের সাহচর্যে চলা উচিৎ। ঋগ্বেদ ১.১২.১৬                    যে ব্যক্তি সম্পদ বা সুখ বা জ্ঞান নিঃস্বার্থভাবে দান করে, সে-ই প্রকৃত মিত্র। ঋগ্বেদ ২.৩০.৭                    মানুষ কর্ম দ্বারাই জগতে মহত্ত্ব ও প্রসিদ্ধি লাভ করে। ঋগ্বেদ ৩.৩৬.১                    হে পতি! তোমার স্ত্রীই গৃহ, স্ত্রীই সন্তানের আশ্রয়। ঋগ্বেদ ৩.৫৩.৪                    পরমাত্মার নিয়ম বিনষ্ট হয় না; তা অটুট, অচল ও অপরিবর্তনীয়। ঋগ্বেদ ৩.৫৪.১৮                    এই ধর্মের মার্গই সনাতন, এই পথে চলেই মানবগণ উন্নতি লাভ করে। ঋগ্বেদ ৪.১৮.১                    পরমাত্মার নিকট কোনো মানুষই বড় বা ছোট নয়। সকল মানুষই সমান এবং পরস্পরের ভ্রাতৃস্বরূপ। ঋগ্বেদ ৫.৬০.৫                    যে ব্যক্তি অকারণে অন্যের নিন্দা করে, সে নিজেও নিন্দার পাত্র হয়। ঋগ্বেদ ৫.২.৬                    নিশ্চিতরূপে এই চতুর্বেদ কল্যাণপ্রদায়িনী এবং মানবকে জ্ঞান প্রদান করে ধারণকারিণী। ঋগ্বেদ ৫.৪৭.৪                    বীর মানবের জন্য পর্বতও সুগম হয়ে যায়। ঋগ্বেদ ৬.২৪.৮                    আমরা অন্যের সঞ্চিত পাপের কর্মফল ভোগ করি না। ঋগ্বেদ ৬.৫১.৭                    হে মিত্রগণ! ওঠো— উদ্যমী হও, সাবধান হও এবং এই সংসাররূপী নদীকে অতিক্রম করো। ঋগ্বেদ ১০.৫৩.৮







বেদ মন্ত্রে নিত্যকর্ম

সত্যান্বেষী
0

 



  • গায়ত্রী মন্ত্র বা গুরুমন্ত্র
ও৩ম্‌ ভূর্ভুবঃ স্বঃ । তৎসবিতুর্বরেণ্যং ভর্গো দেবস্যঃ ধীমহি ধিয়ো যো নঃ প্রচোদয়াৎ ॥ [ ঋগ্বেদ ৩.৬২.১০; যজুর্বেদ ৩৬.৩; সামবেদ ১৪৬২]

সরলার্থঃ পরমাত্মা প্রাণস্বরূপ, দুঃখনাশক, সুখস্বরূপ। জগদুৎপাদক দিব্যগুণযুক্ত পরমাত্মার সেই বরণীয় শুদ্ধ বিজ্ঞানস্বরূপকে আমরা সদা প্রেম ভক্তিপূর্বক ধ্যান করে নিজেদের আত্মাতে ধারণ করি, যিনি আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিকে সকল মন্দ কর্ম থেকে পৃথক করে সর্বদা উত্তম কর্মে প্রবৃত্ত করেন।

  • অথেশ্বরস্তুতিপ্রার্থনোপাসনা মন্ত্রাঃ
ও৩ম্ বিশ্বানি দেব সবিতর্দুরিতানি পরাসুব।
য়দ্ভদ্রন্তন্ন আ সুব ॥॥[ যজুর্বেদ ৩০।৩ ]
ও৩ম্ হিরণ্যগর্ভঃ সমবর্ততাগ্রে ভূতস্য জাতঃ পতিরেক আসীৎ ।
স দাধার পৃথিবীং দ্যামুতেমাং কস্মৈ দেবায় হবিষা বিধেম॥২॥ [যজুর্বেদ ১৩। ৪]
ও৩ম্ য় আত্মদা বলদা য়স্য বিশ্ব উপাসতে প্রশিষং য়স্য দেবাঃ।
য়স্য ছায়াঽমৃতং য়স্য মৃত্যুঃ কস্মৈ দেবায় হবিষা বিধেম" ॥৩॥ [যজুর্বেদ ২৫।১৩]
ও৩ম্ য়ঃ প্রাণতো নিমিষতো মহিত্বৈক ইদ্ৰাজা জগতো বভূব।
য়ঽঈশেঽঅস্য দ্বিপদশ্চতুষ্পদঃ কস্মৈ দেবায় হবিষ বিধেম ॥৪॥ [যজুর্বেদ ২৩।৩]
ও৩ম্ য়েন দৌরুগ্রা পৃথিবী চ দৃঢ়া য়েন স্বঃ স্তভিতং য়েন নাকঃ ।
য়ো অন্তরিক্ষে রজসো বিমানঃ কস্মৈ দেবায় হবিষা বিধেম॥৫॥ [যজুর্বেদ ৩২।৬]
ও৩ম্ প্রজাপতে ন ত্বদেতান্যন্যো বিশ্বা জাতানি পরিতা বভূব।
য়‍ৎকামাস্তে জুহুমস্তন্নো অস্তু বয়ং স্যাম পতয়ো রয়ীণাম্॥৬॥ [ঋগ্বেদ ১০।১২১।১০]
ও৩ম্ স নো বন্ধুর্জনিতা স বিধাতা ধামানি বেদ ভূবনানি বিশ্বা।
য়ত্র দেবা অমৃতমানশানাস্তৃতীয়ে ধামন্নধ্যৈরয়ন্ত॥৭॥ [যজুর্বেদ ৩২।১০]
ও৩ম্ অগ্নে নয় সুপথা রায়ে অস্মান্ বিশ্বানি দেব বয়ুনানি বিদ্বান্।
য়ুয়োধ্যস্মজ্জুহুরাণমেনো ভূয়িষ্ঠান্তে নম উক্তিং বিধেম॥৮॥ [যজুর্বেদ ৪০।১৬]

  • মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র
ও৩ম্‌ ত্র্যম্বকং যজামহে সুগন্ধিং পুষ্টিবর্ধনম্ ।
উর্বারুকমিব বন্ধনান্মৃত্যোর্মুক্ষীয় মামৃতাৎ ॥ [ঋগ্বেদ ৭।৫৯।১২, যজুর্বেদ ৩।৬০ ]
ভাবার্থঃ হে সৃষ্টিকর্তা,ধর্তা ও হর্তা পরমাত্মন্ ! আমাদের জন্য সুগন্ধিত,পুষ্টিকারক তথা বলবর্ধক ভোগ্য বস্তু দান কর ! আমরা অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও ভক্তিসহকারে তোমার ভজন করি। হে দেব ! আমরা পূর্ণাযু ও পূর্ণভোগ করেই যেন শরীর রূপী বন্ধন থেকে মুক্ত হতে পারি। আমরা যেন এই জন্ম-মৃত্যু চক্র থেকে মুক্ত হয়ে যাই কিন্তু তোমার অমৃতময়ী স্নেহ থেকে যেন বিমুখ না হই।

  • জাগরণ মন্ত্র
ও৩ম্‌ উদু তিষ্ঠ স্বধ্বরাবা নো দেব্যা ধিয়া ।
দৃশে চ ভাসা বৃহতা শুশুক্বনিরাগ্নে যাহি সুশস্তিভিঃ ॥ [যজুর্বেদ ১১।৪১]
ও৩ম্‌ যো জাগার তমৃচঃ কাময়ন্তে যো জাগার তমু সামানি যন্তি ।
যো জাগার তময়ং সোম আহ তবাহমস্মি সখ্যে ন্যোকাঃ ॥ [ঋগ্বেদ ৫।৪৪।১৪]
ভাবার্থঃ হে জীব ! উঠো, এগিয়ে যাও । অহিংসা,বুদ্ধি ও বৃদ্ধি লাভ করো ও ভালো কাজের মাধ্যমে যশ লাভ করো । যে জাগ্রত থাকে সে সমস্ত জ্ঞান লাভ করে সত্যিকারের উপাসক হয় ও ভগবানের বন্ধুত্ব লাভ করে ।

  • শৌচপূর্ব জলপান মন্ত্র
ও৩ম্‌ ইদমাপঃ প্র বহত যৎকিং চ দুরিতং ময়ি ।
যদ্বাহমভিদুদ্রোহ যদ্বা শেপ উতানৃতম্ ॥ [ঋগ্বেদ ১।২৩।২২]
ভাবার্থঃ এই জলের যেন অশুভ আচরণ, বিদ্বেষভাব, রাগ ইত্যাদি শারীরিক ও মানসিক যা কিছু মন্দ আছে তা যেন প্রবাহিত হয়ে দূর হয়ে যায় অর্থাৎ আমরা যেন এমন প্রেরণা লাভ করি ।

  • বাহ্য ধৌতকরণ মন্ত্র
ও৩ম্‌ বাঙ্ম আসন্ নসোঃ প্রাণশ্চক্ষুরক্ষ্ণোঃ শ্রোত্রং কর্ণয়োঃ ।
অপলিতাঃ কেশা অশোণা দন্তা বহু বাহ্বোর্বলম্ ॥১॥
ও৩ম্‌ ঊর্বোরোজো জঙ্ঘয়োর্জবঃ পাদয়োঃ ।
প্রতিষ্ঠা অরিষ্টানি মে সর্বাত্মানিভৃষ্টঃ ॥২॥ [অথর্ববেদ ১৯।৬০।১-২]
ভাবার্থঃ প্রভুর কৃপায় আমার মুখ, নাক, চোখ, ঊরু, পা তথা সর্বাঙ্গ যেন শক্তিসামর্থ্যযুক্ত হয় ।

  • প্রাতঃভ্রমণ মন্ত্র
ও৩ম্‌ স্বস্তি পন্থামনু চরেম সূর্যাচন্দ্রমসাবিব ।
পুনর্দদতাঘ্নতা জানতা সং গমেমহি ॥ [ঋগ্বেদ ৫।৫১।১৫]
ও৩ম্‌অপি পন্থামগন্মহি স্বস্তিগামনেহসম্ ।
যেন বিশ্বাঃ পরি দ্বিষো বৃণক্তি বিন্দতে বসু ॥ [ঋগ্বেদ ৬।৫১।১৬]
ভাবার্থঃ সূর্য - চন্দ্রের মত যেন আমরা নিয়মিত নিজের কর্ম করি, জ্ঞানী - দাতা মানবের সৎসঙ্গ করি । আমরা সেই পথেই চলি যে পথ কল্যাণকারী, পাপশূন্য ও দ্বেষভাবনা বিবর্জিত ।

  • প্রভাতী বন্দনা
ও৩ম্‌ প্রাতরগ্নিং প্রাতরিন্দ্রং হবামহে প্রাতর্মিত্রাবরুণা প্রাতরশ্বিনা ।
প্রাতর্ভগং পূষণং ব্রহ্মণস্পতিং প্রাতঃ সোমমুত রুদ্রং হুবেম ॥১॥
ও৩ম্‌ প্রাতর্জিতং ভগমুগ্রং হুবেম বয়ং পুত্রমদিতের্যো বিধর্তা ।
আধ্রশ্চিদ্যং মন্যমানস্তুরশ্চিদ্রাজা চিদ্যং ভগং ভক্ষীত্যাহ ॥২॥
ও৩ম্‌ ভগ প্রণেতর্ভগ সত্যরাধো ভগেমাং ধিয়মুদবা দদন্নঃ ।
ভগ প্র ণো জনয় গোভিরশ্বৈর্ভগ প্র নৃভির্নৃবন্তঃ স্যাম ॥৩॥
ও৩ম্‌ উতেদানীং ভগবন্তঃ স্যামোত প্রপিত্ব উত মধ্যে অহ্নাম্ ।
উতোদিতা মঘবন্সূর্যস্য বয়ং দেবানাং সুমতৌ স্যাম ॥৪॥
ও৩ম্‌ ভগ এব ভগবাঁ অস্তু দেবাস্তেন বয়ং ভগবন্তঃ স্যাম ।
তং ত্বা ভগ সর্ব ইজ্জোহবীতি স নো ভগ পুরএতা ভবেহ ॥৫॥ [ঋগ্বেদ ৭।৪১।১-৫]
ভাবার্থঃ আমরা প্রভাতকালে সর্বস্রষ্টা, ধারণকর্তা, দুষ্টদের দণ্ডদাতা পরমপূজ্য ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা করি । তিনিই বল, ঐশ্বর্য, পশু, উৎকর্ষতা, সুরক্ষা, শ্রেষ্ঠত্ব ইত্যাদি প্রদান করেন । তাঁর কৃপাতেই আমরা উন্নতি লাভ করি । এজন্য আমরা তাঁরই স্তুতি করি ।

  • সূর্যোদয় সময়ে পরমেশ্বর স্মরণ মন্ত্র
ও৩ম্‌ বিশ্বদানীং সুমনসঃ স্যাম পশ্যেম নু সূর্যমুচ্চরন্তম্ ।
তথা করদ্বসুপতির্বসূনাং দেবাঁ ওহানোঽবসাগমিষ্ঠঃ ॥ [ঋগ্বেদ ৬।৫২।৫]
ও৩ম্‌ উদ্যতে নম উদায়তে নম উদিতায় নমঃ ।
বিরাজে নমঃ স্বরাজে নমঃ সম্রাজে নমঃ ॥ [অথর্ববেদ ১৭।১।২২]
ভাবার্থঃ
আমরা উদিত সূর্যকে দেখি ও তার থেকে গতিশীলতার শিক্ষা গ্রহণ করি, আমরা যেন উত্তম মনের হই । ঈশ্বর আমাদের দিব্যগুণ প্রদান করুন ও রক্ষা করুন । উদীয়মান সূর্যের মত হৃদয়ে অনুভবকৃত ভগবানকে আমরা নমস্কার করি ।

  • স্নানে পঠনীয় মন্ত্র
ও৩ম্‌ আপো হি ষ্ঠা ময়োভুবস্তা ন ঊর্জে দধাতন ।
মহে রণায় চক্ষসে ॥১॥
ও৩ম্‌ যো বঃ শিবতমো রসস্তস্য ভাজয়তেহ নঃ ।
উশতীরিব মাতরঃ ॥২॥
ও৩ম্‌ তস্মা অরং গমাম বো যস্য ক্ষয়ায় জিন্বথ ।
আপো জনয়থা চ নঃ ॥৩॥
ও৩ম্‌ ঈশানা বার্যাণাং ক্ষয়ন্তীশ্চর্ষণীনাম্ ।
অপো যাচামি ভেষজম্ ॥৪॥ [অথর্ববেদ ১।৫।১-৪]
ভাবার্থঃ কল্যাণকারী ভেজষী রোগনাশক জল আমাদের প্রাণশক্তি, তেজ, জননশক্তি, দৃষ্টিশক্তিপ্রদান করুক ।

  • বস্ত্রধারণ মন্ত্র
ও৩ম্‌ যে অন্তা যাবতীঃ সিচো য ওতবো যে চ তন্তবঃ ।
বাসো যৎপত্নীভিরুতং তন্ ন স্যোনমুপ স্পৃশাৎ॥ [অথর্ববেদ ১৪।২।৫১]
ভাবার্থঃ বস্ত্রের অন্ত, প্রান্ত, তন্তু যা কিছু রয়েছে তার স্পর্শ যেন আমাদের জন্য সুখপ্রদায়ক হয় ।

  • যোগাভ্যাসে প্রবৃত্ত পূর্ব মন্ত্র
ও৩ম্‌ ইমং যবমষ্টায়োগৈঃ ষড়্যোগেভিরচর্কৃষুঃ।
তেনা তে তন্বো৩ রপোঽপাচীনমপ ব্যয়ে ॥ [অথর্ববেদ ৬।৯১।১]
ও৩ম্‌ যুঞ্জতে মনঽউত যুঞ্জতে ধিয়ো বিপ্রা বিপ্রস্য বৃহতো বিপশ্চিতঃ ।
বি হোত্রা দধে বয়ুনাবিদেকঽইন্মহী দেবস্য সবিতুঃ পরিষ্টুতিঃ স্বাহা ॥ [যজুর্বেদ ৫।১৪ ]
যুঞ্জানঃ প্রথমম্মনস্তত্বায় সবিতা ধিয়ঃ । অগ্নের্জ্যাতির্নিচায়্য পৃথিব্যা অধ্যাভরৎ ॥ [যজুর্বেদ ১১।১]
ভাবার্থঃ অষ্টাঙ্গযোগ ও ষট্সম্পত্তি দ্বারা আত্মভূমির শুদ্ধি হয় । যোগাভ্যাসের মাধ্যমেই শরীর ও আত্মার পাপপ্রবৃত্তি ও রোগ দূর হয় । আমরা পরমেশ্বরে মন ও বুদ্ধি যুক্ত করি । ঐশ্বর্যকামী মানবই এভাবে যোগী হতে পারে ।

  • আহারের পূর্বে পঠনীয় মন্ত্র
ও৩ম্‌ অন্নপতেঽন্নস্য নো দেহ্যনমীবস্য শুষ্মিণঃ ।
প্রপ্র দাতারন্তারিষঽঊর্জন্নো ধেহি দ্বিপদে চতুষ্পদে ॥ [যজুর্বেদ ১১।৮৩]
ভাবার্থঃ হে অন্নের স্বামী পরমাত্মা ! তুমি আমাদের সুস্বাস্থ্যযুক্ত ও বলকারী অন্ন প্রদান করো। দীন দুঃখী ও অভাবে পীড়িতদের অন্ন প্রদান করে তাদের প্রতি কৃপা দৃষ্টি দিও। দ্বিপদী মানুষ, পরিবার ও চতুষ্পদী প্রাণী ইত্যাদিদের জন্য অন্ন বল ও পরাক্রম প্রদান করো।

  • আহারের পরে পঠনীয় মন্ত্র
ও৩ম্‌ মোঘমন্নং বিন্দতে অপ্রচেতাঃ সত্যং ব্রবীমি বধ ইৎস তস্য ।
নার্যমণং পুষ্যতি নো সখায়ং কেবলাঘো ভবতি কেবলাদী ॥ [ঋগ্বেদ ১০।১১৭।৬]
ভাবার্থঃ মূঢ় ব্যক্তি অন্নকে ব্যর্থপ্রাপ্ত করছে, তারা অন্নের ঘাতক, কারণ যারা অন্নকে প্রাপ্ত করার পরে সমাজ ও রাষ্ট্রকে কিছু দেয় না তথা নিজ বন্ধুবর্গকে অন্ন প্রদান করে না, কেবল একাই উপভোগ করে বস্তুতঃ সে পাপযুক্ত উপভোগ করে। হে প্রভো! আমাদের পর্যাপ্ত অন্ন প্রদান করো যেন আমরা সবাই মিলে মিশে উপভোগ করি ।

  • ঔষধী সেবন পূর্ব মন্ত্র
ও৩ম্‌ সুমিত্রিয়া নঽআপ ওষধয়ঃ সন্তু ।
দুর্মিত্রিয়াস্তস্মৈ সন্তু যোঽস্মান্দ্বেষ্টি যঞ্চ বয়ন্দ্বিষ্মঃ ॥ [যজুর্বেদ ৩৫।১২]
ভাবার্থঃ হে ভগবান ! জল ও ওষধি আমাদের বন্ধুর ন্যায় উপকারী হোক ।

  • কার্যালয় বা ব্যবসা প্রারম্ভের পূর্বে
ও৩ম্‌ ইন্দ্রমহং বণিজং চোদয়ামি স ন ঐতু পুরএতা নো অস্তু ।
নুদন্ন্ অরাতিং পরিপন্থিনং মৃগং স ঈশানো ধনদা অস্তু মহ্যম্ ॥
ও৩ম্‌ যেন ধনেন প্রপণং চরামি ধনেন দেবা ধনমিচ্ছমানঃ ।
তন্মে ভূয়ো ভবতু মা কনীয়োঽগ্নে সাতঘ্নো দেবান্ হবিষা নি ষেধ ॥ [অথর্ববেদ ৩।১৫।১,৫]
ও৩ম্‌ প্রজাপতে ন ত্বদেতান্যন্যো বিশ্বা জাতানি পরি তা বভূব ।
যৎকামাস্তে জুহুমস্তন্নো অস্তু বয়ং স্যাম পতয়ো রয়ীণাম্ ॥ [ঋগ্বেদ ১০।১২১।১০]
ভাবার্থঃ বাণিজ্যকারী প্রবঞ্চকদের ধনে অনধিকারী করবে ও যাচ্ঞাকারীকে ধনদান করবে । আমি ব্যবসায়ী, ধন দ্বারা ধন বৃদ্ধির কামনা করি । আমার ব্যবসা বাড়ুক ও আমি নিয়মিত কর দান করে নির্বিঘ্নে জীবিকানির্বাহ করি ।

  • কোন কাজ শুরুর আগে
গায়ত্রী মন্ত্র পাঠ করে –
ও৩ম্‌ সমিন্দ্র রায়া সমিষা রভেমহি সং বাজেভিঃ পুরুশ্চন্দ্রৈরভিদ্যুভিঃ ।
সং দেব্যা প্রমত্যা বীরশুষ্ময়া গোঅগ্রয়াশ্বাবত্যা রভেমহি ॥ [ঋগ্বেদ ১।৫৩।৫]
ও৩ম্‌ পরি মাগ্নে দুশ্চরিতাদ্বাধস্বা মা সুচরিতে ভজ ।
উদায়ুষা স্বায়ুষোদস্থামমৃতাঁ অনু ॥ [যজুর্বেদ ৪।২৮]
ভাবার্থঃ হে পরমেশ্বর ! আমরা যেন সম্পদ, শক্তি, জ্ঞান-কর্মস্পৃহা যুক্ত হই। আমরা যেন খারাপ থেকে আলাদা হয় ভালো কাজ ও আচরণ করি যাতে মোক্ষলাভ করতে পারি ।

  • কুৎসিত চিন্তা ত্যাগ করে সুচিন্তার কামনা
ও৩ম্‌ বিশ্বানি দেব সবিতর্দুরিতানি পরা সুব ।
যদ্ভদ্রং তন্নঽআ সুব ॥ [যজুর্বেদ ৩০।৩]
ও৩ম্‌ পরোঽপেহি মনস্পাপ কিমশস্তানি শংসসি ।
পরেহি ন ত্বা কাময়ে বৃক্ষাং বনানি সং চর গৃহেষু গোষু মে মনঃ ॥ [অথর্ববেদ ৬।৪৫।১]
ভাবার্থঃ হে সকল জগতের উৎপত্তিকর্তা, সমগ্র ঐশ্বর্য যুক্ত শুদ্ধস্বরূপ সর্বসুখদাতা পরমেশ্বর। আপনি দয়া করে আমাদের সম্পূর্ণ দুর্গুণ,দুর্ব্যসন ও দুঃখ দূর করে দিন। যা কল্যাণকারক গুণ,কর্ম,স্বভাব ও পদার্থ সেই আমাদের দিন।

  • মন বচন ও কর্মে শুভচিন্তার প্রার্থনা মন্ত্র
ও৩ম্‌ ভদ্রং কর্ণেভিঃ শৃণুয়াম দেবা ভদ্রং পশ্যেমাক্ষভির্যজত্রাঃ ।
স্থিরৈরঙ্গৈস্তুষ্টুবাংসস্তনূভির্ব্যশেম দেবহিতং যদায়ুঃ ॥ [ঋগ্বেদ ১।৮৯।৮]
ভাবার্থঃ হে ঈশ্বর! আমরা যেন তোমার যজন করি, কান দিয়ে শ্লীল ও মঙ্গলময় কথাবার্তা শুনি, চোখ দিয়ে শ্লীল ও মঙ্গলময় দৃশ্য দেখি। তোমার আরাধনাতে যে আয়ুস্কাল ও সুদৃঢ় দেহ প্রয়োজন তা যেন আমরা প্রাপ্ত হই।

  • যাত্রা পূর্ব প্রার্থনা
ও৩ম্‌ সুগঃ পন্থা অনৃক্ষর আদিত্যাস ঋতং যতে ।
নাত্রাবখাদো অস্তি বঃ ॥ [ঋগ্বেদ ১।৪১।৪]
ভাবার্থঃ বিদ্বানদের দ্বারা সুরক্ষিত ধর্ম ও সত্যযুক্ত সর্বরকমের পথ যা মনুষ্যসৃষ্ট বা দৈব যে কোন বাধা রহিত তা আমাদের জন্য সুগম হোক ।

  • মৃত্যু স্ংবাদ শ্রবণে –
ও৩ম্‌ প্রেহি প্রেহি পথিভিঃ পূর্ব্যেভির্যত্রা নঃ পূর্বে পিতরঃ পরেয়ুঃ ।
উভা রাজানা স্বধয়া মদন্তা যমং পশ্যাসি বরুণং চ দেবম্ ॥ [ঋগ্বেদ ১০।১৪।৭]
ভাবার্থঃ হে জীবাত্মা ! যে পথে আমাদের পূজ্য পিতৃপুরুষগণ [বিদ্বান মানবগণ] গিয়েছেন, তুমিও সেই পথে গমন করো এবং গমন করে প্রসন্নভাবে মুক্ত জীবাত্মা ও ঈশ্বর উভয়কে দেখো।

  • পরীক্ষা পূর্ব বিশেষ প্রার্থনা
গায়ত্র্যাদির পরে –
ও৩ম্‌ সনা দক্ষমুত ক্রতুমপ সোম মৃধো জহি ।
অথা নো বস্যসস্কৃধি ॥ [ঋগ্বেদ ৯।৪।৩]
ও৩ম্‌ বিশ্বা সোম পবমান দ্যুম্নানীন্দবা ভর ।
বিদাঃ সহস্রিণীরিষঃ ॥ [ঋগ্বেদ ৯।৪০।৪ ]
ও৩ম্‌ মূর্ধাহং রয়ীণাং মূর্ধা সমানানাং ভূয়াসম্ ॥ [অথর্ববেদ ১৬।৩।১]
ভাবার্থঃ হে পরমাত্মা ! তুমি আমাকে বল, প্রজ্ঞান প্রদান , জীবনকে পবিত্র করে জ্ঞানাগ্নি সঞ্চার করো ও ব্যসন নষ্ট করে উৎকৃষ্ট জীবনযুক্ত করো । আমি যেন জ্ঞান ও তেজে সবার মধ্যে শ্রেষ্ঠ হই ।

  • · সত্য সংগ্রাম বা ন্যায়ালয়ে গমন পূর্ব প্রার্থনা
ও৩ম্‌ মমাগ্নে বর্চো বিহবেষ্বস্তু বয়ং ত্বেন্ধানাস্তন্বং পুষেম ।
মহ্যং নমন্তাং প্রদিশশ্চতস্রস্ত্বয়াধ্যক্ষেণ পৃতনা জয়েম ॥ [ ঋগ্বেদ ১০।১২৮।১]
ও৩ম্‌ বয়ং জয়েম ত্বয়া যুজা বৃতমস্মাকমংশমুদবা ভরেভরে ।
অস্মভ্যমিন্দ্র বরিবঃ সুগং কৃধি প্র শত্রূণাং মঘবন্বৃষ্ণ্যা রুজ ॥ [ ঋগ্বেদ ১।১০২।৪]
ভাবার্থঃ হে প্রভু ! আমার জীবনসংগ্রামে তুমি আমার বন্ধু ও তেজ হও । আমি আমার এই শরীরকে পরিপুষ্ট করি যেন বিজয় লাভ করতে পারি । তোমার অধ্যক্ষতায় ও সুরক্ষায় আমি শত্রুদের পরাজিত করে জয়ী হবো ।

  • কৃষিকার্য পূর্ব প্রার্থনা
ও৩ম্‌ যুনক্ত সীরা বি যুগা তনোত কৃতে যোনৌ বপতেহ বীজম্ ।
বিরাজঃ শ্নুষ্টিঃ সভরা অসন্ নো নেদীয় ইৎসৃণ্যঃ পক্বমা যবন্ ॥
ও৩ম্‌ ইন্দ্রঃ সীতাং নি গৃহ্ণাতু তাং পূষাভি রক্ষতু ।
সা নঃ পয়স্বতী দুহামুত্তরামুত্তরাং সমাম্ ॥ [ অথর্ববেদ ৩।১৭।২,৪]
ভাবার্থঃ হে সবার পোষক কৃষকগণ ! ভূমি চাষপূর্বক বীজ বপন করে শীঘ্রই ফসল লাভ করো ।

  • ভয়রহিত হওয়ার প্রার্থনা
ও৩ম্‌ যতোয়তঃ সমীহসে ততো নোঽঅভয়ঙ্কুরু ।
শন্নঃ কুরু প্রজাভ্যো ভয়ন্নঃ পশুভ্যঃ ॥ [ যজুর্বেদ ৩৬।২২]
ও৩ম্‌ যত ইন্দ্র ভয়ামহে ততো নো অভয়ং কৃধি ।
মঘবঞ্ছগ্ধি তব ত্বং ন ঊতিভির্বি দ্বিষো বি মৃধো জহি ॥
ও৩ম্‌ অভয়ং মিত্রাদভয়মমিত্রাদভয়ং জ্ঞাতাদভয়ং পুরো যঃ ।
অভয়ং নক্তমভয়ং দিবা নঃ সর্বা আশা মম মিত্রং ভবন্তু ॥ [ অথর্ববেদ ১৯।১৫।১,৬]
ও৩ম্‌ যথা দ্যৌশ্চ পৃথিবী চ ন বিভীতো ন রিষ্যতঃ ।
এবা মে প্রাণ মা বিভেঃ ॥ [ অথর্ববেদ ২।১৫।১]
ভাবার্থঃ হে ভগবান ! আমাদের যেখান থেকেই ভয়ের কারণ আসার সম্ভাবনা থাকে তা থেকে ভয়হীন করুন, শত্রুদের বিনষ্ট করুন ও সুখ প্রদান করুন । মিত্র - শত্রু, পরিচিত - অপরিচিত সব কিছু থেকেই যেন আমি অভয় ও বন্ধুত্ব লাভ করি ৷

  • শান্তিপাঠ
ও৩ম্‌ দ্যৌঃ শান্তিরন্তরিক্ষঁ শান্তিঃ পৃথিবী শান্তিরাপঃ শান্তিরোষধয়ঃ শান্তিঃ । বনস্পতয়ঃ শান্তির্বিশ্বে দেবাঃ শান্তির্ব্রহ্ম শান্তিঃ সর্বঁ শান্তিঃ শান্তিরেব শান্তিঃ সা মা শান্তিরেধি ॥ [ যজুর্বেদ ৩৬।১৭ ]
ভাবার্থঃ দ্যুলোক, অন্তরিক্ষলোক ও পৃথ্বীলোক শান্তিময় হোক। জল, ওষধি ও বনস্পতি শান্তিময় হোক। সব বিদ্বান, বেদপাঠ এবং যা কিছু সবই শান্তিময় হোক। সর্বত্র শান্তিময় হোক। সেই শান্তি আমি যেন লাভ করি ।

  • মানসিক শান্তির জন্য প্রার্থনা
ও৩ম্‌ ইমানি যানি পঞ্চেন্দ্রিয়াণি মনঃষষ্ঠানি মে হৃদি ব্রহ্মণা সংশিতানি ।
যৈরেব সসৃজে ঘোরং তৈরেব শান্তিরস্তু নঃ ॥
ও৩ম্‌ যানি কানি চিচ্ছান্তানি লোকে সপ্তঋষয়ো বিদুঃ ।
সর্বাণি শং ভবন্তু মে শং মে অস্ত্বভয়ং মে অস্তু ॥ [ অথর্ববেদ ১৯।৯।৫,১৩]
ভাবার্থঃ আমার পঞ্চেন্দ্রিয়, মন সব কিছুই শান্ত হোক । আমার কান, নাক, চোখ, মুখ সব কিছু দিয়েই শান্তিময় কর্ম করি ও তা আমাকে শান্তি দিক, অভয় করুক।

  • শতায়ু কামনা মন্ত্র
ও৩ম্‌ তচ্চক্ষুর্দেবহিতং পুরস্তাচ্ছুক্রমুচ্চরৎ। পশ্যেম শরদঃ শতং জীবেম শরদঃ শতং শৃণুয়াম শরদঃ শতং প্র ব্রবাম শরদঃ শতমদীনাঃ স্যাম শরদঃ শতং ভূয়শ্চ শরদঃ শতাৎ ॥ [ যজুর্বেদ ৩৬।২৪]
ইন্দ্র জীব সূর্য জীব দেবা জীবা জীব্যাসমহম্ ।
সর্বমায়ুর্জীব্যাসম্ ॥ [ অথর্ববেদ ১৯।৭০।১ ]
ভাবার্থঃ সেই সর্বদ্রষ্টা, ধার্মিক-বিদ্বানদের কল্যাণদাতা, সর্বব্যাপক রূপে অনাদিকাল বিদ্যমান পরমাত্মার কৃপায় আমরা শতবর্ষকাল দেখব, শতবর্ষকাল জীবিত থাকব, শতবর্ষকাল শুনবো, শতবর্ষকাল বলবো, শতবর্ষকাল আত্মনির্ভরশীল থাকবো এবং তাহার আজ্ঞামত চলবো- এইপ্রার্থনা করি । হে ইন্দ্রিয়ের অধিষ্ঠাতা জীব ! তুমি জিতেন্দ্রিয় হও, দেব হও, জ্ঞানদীপ্ত হও জীবিত থাকো । আমিও পূর্ণ আয়ু জীবিত থাকি ।

  • মেধা প্রার্থনা
ও৩ম্‌ যাং মেধাং দেবগণাঃ পিতরশ্চোপাসতে।
তয়া মামদ্য মেধয়াগ্নে মেধাবিনং কুরু স্বাহা ॥
ও৩ম্‌ মেধাং মে বরুণো দদাতু মেধামগ্নিঃ প্রজাপতিঃ ।
মেধামিন্দ্রস্চ বায়ুশ্চ মেধাং ধাতা দদাতু মে স্বাহা ॥ [ যজুর্বেদ ৩২।১৪-১৫]
ও৩ম্‌ অহমিদ্ধি পিতুষ্পরি মেধামৃতস্য জগ্রভ ।
অহং সূর্য ইবাজনি ॥ [ অথর্ববেদ ২০।১১৫।১]
ভাবার্থঃ হে পরমেশ্বর ! আমাকে শুদ্ধ, ঐশ্বর্যপ্রদাতা, প্রজারক্ষক, বলদাতা, বিদ্যাযুক্ত বুদ্ধি প্রদান করুন ।

  • বেদমাতা বন্দনা
ও৩ম্‌ স্তুতা ময়া বরদা বেদমাতা প্র চোদয়ন্তাং পাবমানী দ্বিজানাম্ ।
আয়ুঃ প্রাণং প্রজাং পশুং কীর্তিং দ্রবিণং ব্রহ্মবর্চসম্ ।
মহ্যং দত্ত্বা ব্রজত ব্রহ্মলোকম্ ॥ [ অথর্ববেদ ১৯।৭১।১]
ভাবার্থঃ হে ভক্ত দ্বারা স্তুতিযোগ্য বেদমাতা ! তুমি ব্রাহ্মণ , ক্ষত্রিয় , বৈশ্য দ্বিজকে পবিত্র কর । হে বেদমাতা ! তুমি আমাদের সম্মার্গে প্রেরিত কর । হে মঙ্গলময়ী মা ! তুমি আমাদের আয়ু , প্রাণ , প্রজা , পশু , কীর্তি , ধন ও ব্রহ্মবৰ্চস তেজ প্রদান কর এবং শেষে ব্রহ্মলোক অর্থাৎ মুক্তিধাম প্রাপ্ত করাও ।

  • যজ্ঞোপবীত ধারণ মন্ত্র
ও৩ম্‌ যজ্ঞোপবীতং পরমং পবিত্রং প্রজাপতের্যৎস হজং পুরস্তাৎ । আয়ুষ্যমগ্র্যং প্রতিমুঞ্চ শুভ্রং যজ্ঞোপবীতং বলমস্তু তেজঃ । যজ্ঞোপবীতমসি যজ্ঞস্য ত্বা যজ্ঞোপবীতেনোপনহ্যামি । [ পার০ গৃ০ ২।২।১১]
ভাবার্থঃ পরমপবিত্র নির্মল যজ্ঞোপবীত পরমাত্মার সহোৎপন্ন, আয়ু, তেজ ও বল প্রদান করে । তুমি যজ্ঞোপবীত, তোমাকে ধারণ করছি ।

  • শয়নমন্ত্র
ও৩ম্‌ যজ্জাগ্রতো দূরমুদৈতি দেবং তদু সুপ্তস্য তথৈবেতি।
দূরঙ্গমং জ্যোতিষাং জ্যোতিরেকং তন্মে মনঃ শিবসঙ্কল্পমস্তু॥ ১
ও৩ম্‌ যেন কর্মাণ্যপসো মনীষিণো যজ্ঞে কৃণ্বন্তি বিদথেষু ধীরাঃ।
যদপূর্বং যক্ষমন্তঃ প্রজানাং তন্মে মনঃ শিবসঙ্কল্পমস্তু॥২
ও৩ম্‌ যৎপ্রজ্ঞানমুত চেতো ধৃতিশ্চ যজ্জ্যোতিরন্তরমৃতং প্রজাসু।
যস্মান্ন ঋতে কিঞ্চন কর্ম ক্রিয়তে তন্মে মনঃ শিবসঙ্কল্পমস্তু॥৩
ও৩ম্‌ যেনেদং ভূতং ভুবনং ভবিষ্যৎ পরিগৃহীতমমৃতেন সর্বম্।
যেন যজ্ঞস্তায়তে সপ্তহোতা তন্মে মনঃ শিবসঙ্কল্পমস্তু॥৪
ও৩ম্‌ যস্মিন্নৃচঃ সাম যজূঁষি যস্মিন্ প্রতিষ্ঠিতা রথনাভাবিবারা:।
যস্মিশ্চিত্তং সর্বমোতং প্রজানাং তন্মে মনঃ শিবসঙ্কল্পমস্তু॥৫
ও৩ম্‌ সুষারথিরশ্বানিব যন্মনুষ্যান্নেনীয়তেঽভীশুভির্বাজিন ইব।
হৎপ্রতিষ্ঠং যদজিরং জবিষ্ঠং তন্মে মনঃ শিবসঙ্কল্পমস্তু॥ ৬ [ যজুর্বেদ ৩৪।১-৬]
ভাবার্থঃ জাগ্রত মন চঞ্চল । বুদ্ধিমানরা শুভ কাজ করে । ধৈর্য ও চিন্তাশক্তি যেখানে আছে জ্ঞানও সেখানে আছে । চারবেদ ভগবানের জ্ঞান । আমরা যেন সর্বদা অটল থাকি ও পঞ্চমহাযজ্ঞ করি । এই সকল কর্মে আমার মন যে শুভ ও শান্তিময় সংকল্পযুক্ত হয় । হে ভগবান ! তোমার কাছে এই প্রার্থনা করি ।

  • রাষ্ট্রীয় প্রার্থনা
আ ব্রহ্মন্ ব্রাহ্মণো ব্রহ্মবর্চসী জায়তামা রাষ্ট্রে রাজন্যঃ শূরঽইষব্যোঽতিব্যাধী মহারথো জায়তাং দোগ্ধ্রী ধেনুর্বোঢানড্বানাশুঃ সপ্তিঃ পুরন্ধির্যাষা জিষ্ণূ রথেষ্ঠাঃ সভেয়ো যুবাস্য যজমানস্য বীরো জায়তাং নিকামে-নিকামে নঃ পর্জন্যো বর্ষতু ফলবত্যো নঽওষধয়ঃ পচ্যন্তাং যোগক্ষেমো নঃ কল্পতাম্ ॥ [যজুর্বেদ ২২।২২]
ভাবার্থঃ হে প্রভু! এই বৃহৎ রাষ্ট্রে তেজস্বী বেদবিৎ ব্রাহ্মণ উৎপন্ন হোক, শস্ত্রাস্ত্র বিদ্যা নিপুণ, দুষ্টের দমনকর্তা, মহাবলবান, নির্ভয় এবং বীর ক্ষত্রিয় উৎপন্ন হোক, দুগ্ধবতী ধেনু, ভারবাহী বৃষ, দ্রুতগামী অশ্ব, গৃহকর্ম কুশল রমণী, মহারথী শত্ৰু বিজেতা পুরুষ উৎপন্ন হউক যজমানের গৃহ বীর পুত্রে পরিপূর্ণ হোক, আবশ্যক হইলে মেঘ বর্ষণ করুক, আমাদের জন্য ফলশালী ঔষধি পরিপক্ব হউক এবং আবশ্যকীয় পদার্থ প্রাপ্তির ব্যবস্থা হোক।

  • সংগঠন সূক্ত
ও৩ম্‌ সংসমিদ্যুবসে বৃষন্নগ্নে বিশ্বান্যর্য আ ।
ইল়স্পদে সমিধ্যসে স নো বসূন্যা ভর ॥১॥
ও৩ম্‌ সং গচ্ছধ্বং সং বদধ্বং সং বো মনাংসি জানতাম্ ।
দেবা ভাগং যথা পূর্বে সঞ্জানানা উপাসতে ॥২॥
ও৩ম্‌ সমানো মন্ত্রঃ সমিতিঃ সমানী সমানং মনঃ সহ চিত্তমেষাম্ ।
সমানং মন্ত্রমভি মন্ত্রয়ে বঃ সমানেন বো হবিষা জুহোমি ॥৩॥
ও৩ম্‌ সমানী ব আকূতিঃ সমানা হৃদয়ানি বঃ ।
সমানমস্তু বো মনো যথা বঃ সুসহাসতি ॥৪॥ [ঋগ্বেদ ১০।১৯১।১-৪]
ভাবার্থঃ আমাদের আহার, পান, প্রার্থনা, মন এক হোক । আমরা যেন একসাথে চলি ও আমাদের মধ্যে যেন ঐক্য থাকে ।
©️ বাংলাদেশ অগ্নিবীর


Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)