“যোগাভ্যাস” কোন একক ক্রিয়া বিশেষের নাম নয় । বরং এই শব্দের মাধ্যমে যোগদর্শনে যোগের যে ৮টি অঙ্গের (যম-নিয়ম ইত্যাদি) কথা বলা হয়েছে তাকেই গ্রহণ করতে হবে । যে ব্যক্তি এই যোগের আট অঙ্গের স্বরূপকে ঠিক ঠিক ভাবে জেনে, অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও তপস্যা পূর্বক দীর্ঘ সময় পর্যন্ত পালন করেন তার নিম্নলিখিত ফল লাভ হয় –
১। বুদ্ধির বিকাশ ঘটে, যার ফলে কোন ব্যক্তি অনেক কঠিন ও সূক্ষ্ম বিষয়কেও সহজে অতি শীঘ্র বুঝতে পারে ।
৩। কাজ করার সময় একাগ্রতা বাড়ে, যার ফলে কাজ ভালভাবে সম্পূর্ণ হয় ।
৪। শরীর, মন, ইন্দ্রিয়ের উপরে নিয়ন্ত্রণ লাভ হয় ।
৫। নিজের দোষ ও খারাপ সংস্কারের (কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, অভিমান, ঈর্ষ্যা, দ্বেষ ইত্যাদির) জ্ঞান হয় এবং তা বিনাশও হয় ।
৬।ভাল সংস্কার (ত্যাগ, সেবা, পরোপকার, দয়া, দান ইত্যাদির) জাগ্রত হয় এবং তার বৃদ্ধিও হয়।
৭। সাধক নিষ্কাম কর্ম সম্পাদনকারী হয় ।
৮। ঈশ্বরীয় গুণ (জ্ঞান, বল, আনন্দ, নির্ভয়তা, সত্য, ন্যায়, সন্তোষ ইত্যাদির) প্রাপ্তি হয়।
৯। সাধক জেনে-বুঝে মিথ্যা, ছল, কপট, অন্যায় ইত্যাদি পাপ কর্ম করে না এবং ঐ পাপের দুঃখরূপী ফল থেকে বেঁচে যায় ।
১০। শারীরিক এবং মানসিক দুঃখকে সহ্য করার শক্তি বাড়ে।
১১। মন, বুদ্ধি, ইন্দ্রিয়, সূক্ষ্ম-ভূত, জগতের কারণ, প্রকৃতি ইত্যাদি সূক্ষ্ম তত্ত্বের জ্ঞান হয় ।
১২। "আমি কে," “আমার কি করা উচিত” ইত্যাদি আত্মবিষয়ক প্রশ্নের সমাধান হয় (আত্মার প্রত্যক্ষ হয়)।
১৩। ঈশ্বরের মহানতার জ্ঞান হয়, যাতে ঈশ্বরের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধা, প্রেম, বিশ্বাস, আকর্ষণ উৎপন্ন হয়।
১৪। ঈশ্বর সাক্ষাৎকার হয়, ফলস্বরূপ তার থেকে বিশেষ জ্ঞান, বল, আনন্দ, ইত্যাদির লাভ হয় ।
১৫। সংসারের সমস্ত দুঃখ থেকে মুক্ত হয়ে জীবাত্মা ঈশ্বরের নিত্য আনন্দকে লাভ করে অর্থাৎ মোক্ষ লাভ করে ।

©বাংলাদেশ অগ্নিবীর