🔹 কামসূত্র কি ন্যায়দর্শন ভাষ্যকার মহর্ষি বাৎস্যায়ন বিরচিত ❓
✅ না, ইতিহাসে একই নামের একাধিক ব্যক্তি থাকা অসম্ভব কোন বিষয় নয়। সনাতন ধর্মে চারটি পুরুষার্থের উল্লেখ আছে - ধর্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষ। এর মধ্যে কামের উল্লেখ করে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতায় [১০।২৮] কেবল প্রজননের জন্যই কাম প্রকৃষ্টভাবে বিহিত উল্লেখ করেছেন ' প্রজনশ্চাস্মি কন্দর্পঃ' । স্বাভাবিকভাবেই কাম নিজের বৈধ স্ত্রী/ স্বামীর সাথেই সম্ভব ও অনুমোদিত। ব্রহ্মচর্যের কঠিন মাহাত্ম্য আরোপিত হয়েছে শাস্ত্রে। কিন্তু কামসূত্রে আমরা দেখি -
১। বেশ্যাবৃত্তিকে সমর্থন ও প্রোৎসাহিত করা হয়েছে [৪।১-৬]
২। পরস্ত্রী সাথে পরকীয়া ও সঙ্গম কৌশল [৫।১]
৩। পরস্ত্রীর সাথে পরকীয়া করতে দূতী নিয়োগ [৫।২], যদি রাজাও পরস্ত্রী সম্ভোগ করতে চায় কী করণীয় [৫।৫]
৪৷ নপুংসক দ্বারা রতিক্রিয়া [৬।৯]
৫। মহর্ষি মনু গান্ধর্ববিবাহকে নিকৃষ্ট ও পাপজনক বলেছেন [৩।৪১-৪২] কিন্তু কামসূত্র তাকে শ্রেষ্ঠ বলা হয়েছে [২।৫।৩০ ]
৬। পাত্র খারাপ হওয়া সত্ত্বেও ধাত্রী বা কোন মাধ্যম দ্বারা কন্যাকে প্রলোভন দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেওয়া এবং এই আশ্বাসবাণী দেওয়া যে কন্যার পরিবার কলঙ্কের ভয় থেকে ঐ পাত্রকেই কন্যা হস্তান্তর করবে [২।৫।১১-১৫]
এদিকে ন্যায়দর্শন ভাষ্যকার বাৎস্যায়ন বলেছেন । বৈদিক শাস্ত্র অনুযায়ী ব্রহ্মচর্য মাহাত্ম্য পড়ুন - https://www.agniveerbangla.org/2022/03/blog-post_24.html?m=1 । বেদেও ব্রহ্মচর্য পালন করেই বিবাহ করার কথা রয়েছে - https://www.agniveerbangla.org/2023/04/blog-post_24.html?m=1 । পাশাপাশি কামসূত্রেই বাৎস্যায়নের নাম উল্লেখ করে মতামত উল্লেখ করতে দেখা যায় -
১। ১।২।২৫,৩৭
২। ২।২।৪
৩। ৪।৫।৬,২৩
৪। ৬।৩।৩,৮
৫। ৬।৯।২৩,৩১
অর্থাৎ এই গ্রন্থ নিজেই মহর্ষি বাৎস্যায়নকে নির্দেশ করে, ফলে তার নাম উল্লেখ করে এভাবে বক্তব্য দেওয়া সম্ভব নয়। তাই এই গ্রন্থকে কখনোই বৈদিক শাস্ত্র বলা যাবে না।
© দীপংকর সিংহ দীপ