অনেক মানুষই বিশ্বাস করে:
-ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ,দয়াবান,ত্রুটিহীন
-ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ,দয়াবান,ত্রুটিহীন
-এটাই আমাদের
প্রথম এবং শেষ জীবন
- ঈশ্বর এখানে আমাদের পরীক্ষা নিচ্ছেন
- পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে আমরা স্বর্গে অথবা নরকে যাব জীবনটা হচ্ছে পরীক্ষা,সৃষ্টিকর্তা
হচ্ছেন শ্রেষ্ঠ পরীক্ষক,এবং ফলাফল যদি পাস হয়(স্বর্গ) আর ফেল(নরক)
চলুন কিছু উদাহরনের মাধ্যমে এই প্রাথমিক ভিত্তিটা সমালোচনার আধারে মূল্যায়ন করে দেখি যে এগুলো কতটুকু যুক্তিসংগত
- ঈশ্বর এখানে আমাদের পরীক্ষা নিচ্ছেন
- পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে আমরা স্বর্গে অথবা নরকে যাব জীবনটা হচ্ছে পরীক্ষা,সৃষ্টিকর্তা
হচ্ছেন শ্রেষ্ঠ পরীক্ষক,এবং ফলাফল যদি পাস হয়(স্বর্গ) আর ফেল(নরক)
চলুন কিছু উদাহরনের মাধ্যমে এই প্রাথমিক ভিত্তিটা সমালোচনার আধারে মূল্যায়ন করে দেখি যে এগুলো কতটুকু যুক্তিসংগত
১.
অনেক শিশুই মাতৃগর্ভে মারা যায়,তারাকি স্বর্গে অথবা নরকে যায় ? অনেকেই
বলে যে তারা স্বর্গে যায় কারন তারা তাদের জীবনে কোন ভুল করে নি।
এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে ’’তাদের কি জীবনে ভুল করার কোন সুযোগ ছিল?’’ সৃষ্টিকর্তাকি এখানে একজনকে মুক্ত করে তার পক্ষপাতিত্ত করছেন না যেখানে
তার পরীক্ষাও শুরু হয়নি অপরদিকে
অরেকজনকে ১০০ বছর ধরে পরীক্ষার পর
পরীক্ষা দিতে হবে।
অনেক শিশুই মাতৃগর্ভে মারা যায়,তারাকি স্বর্গে অথবা নরকে যায় ? অনেকেই
বলে যে তারা স্বর্গে যায় কারন তারা তাদের জীবনে কোন ভুল করে নি।
এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে ’’তাদের কি জীবনে ভুল করার কোন সুযোগ ছিল?’’ সৃষ্টিকর্তাকি এখানে একজনকে মুক্ত করে তার পক্ষপাতিত্ত করছেন না যেখানে
তার পরীক্ষাও শুরু হয়নি অপরদিকে
অরেকজনকে ১০০ বছর ধরে পরীক্ষার পর
পরীক্ষা দিতে হবে।
২.
অনেক শিশুই সঠিকভাবে পরিপক্ক(Mature)
হওয়ার আগে অল্প বয়সেই মারা যায়।
এমনকি তারা যদি কোন ভুল কাজও করে
থাকে তবে সেটা তারা নিজেদের
ইচ্ছায় নয় বরং না জেনে ভাল মন্দের বিচার না বুঝে অজ্ঞানতার খাতিরে
করেছে। তারা কি স্বর্গে অথবা নরকে
যায়? যদি তারা স্বর্গে যায় তবে ’’কেন
সৃষ্টিকর্তা সবাইকে বাল্যবয়সেই হত্যা
করে প্রত্যেকের জন্য স্বর্গে স্হান
নিশ্চিত করছেন না? সৃষ্টিকর্তাকি
তাহলে অন্যায়কারী এবং ত্রুটিপূর্ণ নয়? যদি তারা নরকে যায় তাহলে তাদের
দোষটা কোথায়? ধরি দুটো জমজ বাচ্চা জন্মগ্রহন করলো।
দুজনই ৩ বছর নিষ্পাপ জীবনযাপন করলো।
তারপর একজন মারা গেল। সে সরাসরি
স্বর্গে চলে গেল আর অপরজন কয়েকবছর
নিষ্পাপ জীবনযাপন করলো,তারপর
খারাপ কাজে লিপ্ত হল এবং ৬০ বছর বয়সে মারা গেল। এখন স্বাভাভিক
ভাবেই সে নরকে যাবে কারন
সৃষ্টিকর্তা তার পরীক্ষা নিয়েছেন আর
অপর ভাইকে নেননি কারন তিনি তাকে
বাল্যকালেই মেরে ফেলেছেন.. সৃষ্টিকর্তাকি এখনে অপরাধী নন কারন
তিনি এক ভাইকে ৬০ বছর জীবিত
রেখেছেন আর অপর ভাইকে নয়?যদি তিনি
দুজনকেই ৩ বছর বয়সে মেরে ফেলতেন
তাহলে দুজনই স্বর্গে যেত। তাহলে জীবন যদি একটাই হয় এবং স্বর্গ-
নরক বলে যদি নির্দিষ্ট কোন স্হান
থাকে তবে সৃষ্টিকর্তা অন্যায়কারী।
অনেক শিশুই সঠিকভাবে পরিপক্ক(Mature)
হওয়ার আগে অল্প বয়সেই মারা যায়।
এমনকি তারা যদি কোন ভুল কাজও করে
থাকে তবে সেটা তারা নিজেদের
ইচ্ছায় নয় বরং না জেনে ভাল মন্দের বিচার না বুঝে অজ্ঞানতার খাতিরে
করেছে। তারা কি স্বর্গে অথবা নরকে
যায়? যদি তারা স্বর্গে যায় তবে ’’কেন
সৃষ্টিকর্তা সবাইকে বাল্যবয়সেই হত্যা
করে প্রত্যেকের জন্য স্বর্গে স্হান
নিশ্চিত করছেন না? সৃষ্টিকর্তাকি
তাহলে অন্যায়কারী এবং ত্রুটিপূর্ণ নয়? যদি তারা নরকে যায় তাহলে তাদের
দোষটা কোথায়? ধরি দুটো জমজ বাচ্চা জন্মগ্রহন করলো।
দুজনই ৩ বছর নিষ্পাপ জীবনযাপন করলো।
তারপর একজন মারা গেল। সে সরাসরি
স্বর্গে চলে গেল আর অপরজন কয়েকবছর
নিষ্পাপ জীবনযাপন করলো,তারপর
খারাপ কাজে লিপ্ত হল এবং ৬০ বছর বয়সে মারা গেল। এখন স্বাভাভিক
ভাবেই সে নরকে যাবে কারন
সৃষ্টিকর্তা তার পরীক্ষা নিয়েছেন আর
অপর ভাইকে নেননি কারন তিনি তাকে
বাল্যকালেই মেরে ফেলেছেন.. সৃষ্টিকর্তাকি এখনে অপরাধী নন কারন
তিনি এক ভাইকে ৬০ বছর জীবিত
রেখেছেন আর অপর ভাইকে নয়?যদি তিনি
দুজনকেই ৩ বছর বয়সে মেরে ফেলতেন
তাহলে দুজনই স্বর্গে যেত। তাহলে জীবন যদি একটাই হয় এবং স্বর্গ-
নরক বলে যদি নির্দিষ্ট কোন স্হান
থাকে তবে সৃষ্টিকর্তা অন্যায়কারী।
৩.
একজন মানুষ পাগল হয়ে জন্মালো। ৫ বছর
পর্যন্ত তার মানসিক অবস্হার কোন
উন্নতি হল না কিন্তু সে দীর্ঘজীবন
বাঁচল তাহলে কি সে স্বর্গে অথবা নরকে
যাবে? আবারও উপরের একই প্রশ্নই উঠে এবং
ফলাফল এই দাড়ায় যে হয় সৃষ্টিকর্তা
অন্যায়কারী অথবা এক জীবন ও স্বর্গ
নরকের ধারনাটা ভুল।
একজন মানুষ পাগল হয়ে জন্মালো। ৫ বছর
পর্যন্ত তার মানসিক অবস্হার কোন
উন্নতি হল না কিন্তু সে দীর্ঘজীবন
বাঁচল তাহলে কি সে স্বর্গে অথবা নরকে
যাবে? আবারও উপরের একই প্রশ্নই উঠে এবং
ফলাফল এই দাড়ায় যে হয় সৃষ্টিকর্তা
অন্যায়কারী অথবা এক জীবন ও স্বর্গ
নরকের ধারনাটা ভুল।
৪.
বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন স্হনে জন্মগ্রহন
করে এবং পালিত হয় ও তাদের ধর্মও
ভিন্ন হয়ে থাকে। কিন্তু প্রত্যেক ধর্ম
বলে যে একমাত্র তাদের ধর্মের মানুষই
স্বর্গে যাবে অন্যরা নির্বিশেষে তাদের কৃতকর্মের জন্য নরকে যাবে। তো কারা কোথায় যাবে?
আমার কি দোষ যদি আমি অন্য ধর্মে
জন্মগ্রহন করে বেড়ে উঠি। সৃষ্টিকর্তা
আগে থেকেই কেন আমার জন্য নরকে স্হান
ঠিক করে রেখেছেন?
বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন স্হনে জন্মগ্রহন
করে এবং পালিত হয় ও তাদের ধর্মও
ভিন্ন হয়ে থাকে। কিন্তু প্রত্যেক ধর্ম
বলে যে একমাত্র তাদের ধর্মের মানুষই
স্বর্গে যাবে অন্যরা নির্বিশেষে তাদের কৃতকর্মের জন্য নরকে যাবে। তো কারা কোথায় যাবে?
আমার কি দোষ যদি আমি অন্য ধর্মে
জন্মগ্রহন করে বেড়ে উঠি। সৃষ্টিকর্তা
আগে থেকেই কেন আমার জন্য নরকে স্হান
ঠিক করে রেখেছেন?
৫. মানুষ বলে যে শিশুরা নিষ্পাপ তাই
তারা যদি অল্প বয়সে মারা যায় তাহলে
স্বর্গে যাবে। ধরি কেউ এই ব্যাপারটা
খুব গুরুত্তের সাথে নিয়ে সিধান্ত নিল
যে সমস্ত শিশুকে স্বর্গে প্রেরন করবে।
একটা মহৎ উদ্দেশ্যে নিজেকে উৎসর্গ করে সে সব শিশুকে হত্যা করতে লাগল
তার যুক্তি হচ্ছে- আমি সারাজীবন
নরকের আগুনে পুড়তে রাজি কিন্তু আমি
নিশ্চিত করে সমস্ত শিশুর জন্য স্বর্গে
একটা স্হান সংরক্ষন করতে চাই! সে তো নিঃশ্বার্থভাবে সমাজসেবা
করছে। সে কি স্বর্গে অথবা নরকে যাবে?
যদি সে স্বর্গে যায় তাহলে সৃষ্টিকর্তা
মানুষের অনুসরনীয় ভুল উদাহরন তৈরী
করছেন।
যদি সে নরকে যায় তাহলে নিঃশ্বার্থ হওয়াটা খারাপ। অধিকতর,শেষ বিচারের দিনের আগে
কেউ আসলে জানবে না যে কে কোথায়
যাবে,তার মানে সৃষ্টিকর্তা বহু
নিষ্পাপ সমাজসেবীদের শিশু হত্যার
বিষয় অনুসরন নিয়ে অনেক বিভ্রান্তিকর
পরিস্হিতির মধ্যে ফেলেছেন! পারিপার্শিক অবস্হা নিরপেক্ষ
মূল্যায়নে এটাই দাবী করে যে -প্রথমত সমস্ত বিষয়টা সবাইকে একই
সুবিধা এবং মনোযোগ দিয়ে শেখাতে
হবে এবং তাও হবে একই পরিস্হিতির
অন্তর্ভক্ত, -তারপর সেগুলোকে একই পারিপার্শিক
অবস্হার ছত্রছায়ায় মূল্যায়ণ করতে
হবে। এই অনুসারে,সৃষ্টিকর্তার অবশ্যই প্রকৃত
ধর্ম এবং তার গ্রন্হসমূহ প্রত্যেক
মানুষের üদয়ে প্রতিস্হাপন করাতে
হবে,তারপর প্রত্যেককে একই ধরনের
পরিবারে জন্মগ্রহন করাতে
হবে,তাদেরকে একই ধরনের স্হান এবং পরিবেশে বেড়ে উঠতে দিতে হবে এবং
তারপরেই শুধুমাত্র পরীক্ষার ব্যবস্হা
করতে হবে। কিন্তু এই দুনিয়ায় আমরা পরীক্ষার
পরিবেশ বা আবহাওয়া বিভিন্ন রকমের
দেখতে পাই যা একজনের কল্পনায়তেও
হয়ত কুলায় না। তারপরেও সৃষ্টিকর্তাকে
ন্যায়পরায়ণ,দয়াবান এবং ত্রুটিহীন
বলা হয় ! বেশীরভাগ ধমর্ীয় পন্ডিৎরা এই সমস্ত
Paradox এর এমন উত্তর দেয় মানুষ যে
পরিবেশেই জন্মগ্রহন করে নিজ নিজ
কাজ সম্পাদন করুক,সৃষ্টিকর্তা ভাল
করেই জানেন যে কিভাবে মানুষের
ভাগ্য নির্ধারন করতে হয়। এসব দেখে এই মনে হয় যে সৃষ্টিকর্তার নিয়ম
অনেকটা Duckworth-Lewis পদ্ধতির মতন
যেটা একটা বিঘ্নিত(মাঝ পথে বন্ধ হয়ে
যাওয়া) ক্রিকেট খেলার বিজয়ী দল
নির্ধানের কাজে ব্যবüত হয়। এখন এগুলো থেকে কিছু সন্দেহের
উৎপত্তি হয়: এক যদি সৃষ্টিকর্তা সত্যিই নিখুত বা
ত্রুটিহীন হন এবং তার Scoring পদ্ধতি
(Formula) এতই অসাধারন হয় তাহলে তার
এত নাটক তৈরী করে এতগুলো বছর নষ্ট
করার কি দরকার ছিল। তিনি অবশ্যই এই
সৃষ্টির একদম প্রথমে এই পদ্ধতি(Formula) তৈরী করতে পারতেন এবং সবাইকে
সরাসরি স্বর্গে অথবা নরকে প্রেরন
করাতে পারতেন! দুই, যদি এই ফর্মূলাটা কোন জন্মানো বাচ্চা
অথবা ভ্রুনের ক্ষেত্রে কাজ করে,তবে
কেন তিনি অকারনে কিছ দল (Folks বা
কোন নির্দিষ্ট সম্প্রদায় বা গোষ্ঠী)
মানুষের বিপক্ষে অবস্হান করে তাদের
জীবনে এত সমস্যার সৃষ্টি করছেন? সর্বোপরি শুরুতেইতো সৃষ্টিকর্তা
সবাইকে সমানভাবে তৈরী করেছেন। তিন, এই পরীক্ষার দুটো ফলাফল হবার
সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে,আপনি হয়ত
স্বর্গ অথবা নরক পাবেন। এখানে কর্মের
ভিত্তিতে ফলাফল পরিবর্তনের কোন
সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। কিছু গ্রন্হ
অবশ্য বিভিন্ন ধরনের স্বর্গের বর্ননার কথা বলে কিন্তু সেগুলো নিছকই একক
ফলাফলের পরিবর্তে দৈত ফলাফল
প্রদর্শন করে থাকে। (একক স্বর্গ অথবা
নরকের পরিবর্তে সেখানে এখন ১০ টা
স্বর্গ অথবা ১০ টা নরকের কথা বলা হয়)।
কিন্তু সেখানে একটানা কোন কিছু বিকাশের ধাপ বা পর্যায় নেই। এটা কোন নিরবিচ্ছিন্ন কার্যের পৃথক
সমীকরনের Non –Zero উত্তর প্রদান করে
যা গানিতীক ভাবে অসম্ভব।
তারা যদি অল্প বয়সে মারা যায় তাহলে
স্বর্গে যাবে। ধরি কেউ এই ব্যাপারটা
খুব গুরুত্তের সাথে নিয়ে সিধান্ত নিল
যে সমস্ত শিশুকে স্বর্গে প্রেরন করবে।
একটা মহৎ উদ্দেশ্যে নিজেকে উৎসর্গ করে সে সব শিশুকে হত্যা করতে লাগল
তার যুক্তি হচ্ছে- আমি সারাজীবন
নরকের আগুনে পুড়তে রাজি কিন্তু আমি
নিশ্চিত করে সমস্ত শিশুর জন্য স্বর্গে
একটা স্হান সংরক্ষন করতে চাই! সে তো নিঃশ্বার্থভাবে সমাজসেবা
করছে। সে কি স্বর্গে অথবা নরকে যাবে?
যদি সে স্বর্গে যায় তাহলে সৃষ্টিকর্তা
মানুষের অনুসরনীয় ভুল উদাহরন তৈরী
করছেন।
যদি সে নরকে যায় তাহলে নিঃশ্বার্থ হওয়াটা খারাপ। অধিকতর,শেষ বিচারের দিনের আগে
কেউ আসলে জানবে না যে কে কোথায়
যাবে,তার মানে সৃষ্টিকর্তা বহু
নিষ্পাপ সমাজসেবীদের শিশু হত্যার
বিষয় অনুসরন নিয়ে অনেক বিভ্রান্তিকর
পরিস্হিতির মধ্যে ফেলেছেন! পারিপার্শিক অবস্হা নিরপেক্ষ
মূল্যায়নে এটাই দাবী করে যে -প্রথমত সমস্ত বিষয়টা সবাইকে একই
সুবিধা এবং মনোযোগ দিয়ে শেখাতে
হবে এবং তাও হবে একই পরিস্হিতির
অন্তর্ভক্ত, -তারপর সেগুলোকে একই পারিপার্শিক
অবস্হার ছত্রছায়ায় মূল্যায়ণ করতে
হবে। এই অনুসারে,সৃষ্টিকর্তার অবশ্যই প্রকৃত
ধর্ম এবং তার গ্রন্হসমূহ প্রত্যেক
মানুষের üদয়ে প্রতিস্হাপন করাতে
হবে,তারপর প্রত্যেককে একই ধরনের
পরিবারে জন্মগ্রহন করাতে
হবে,তাদেরকে একই ধরনের স্হান এবং পরিবেশে বেড়ে উঠতে দিতে হবে এবং
তারপরেই শুধুমাত্র পরীক্ষার ব্যবস্হা
করতে হবে। কিন্তু এই দুনিয়ায় আমরা পরীক্ষার
পরিবেশ বা আবহাওয়া বিভিন্ন রকমের
দেখতে পাই যা একজনের কল্পনায়তেও
হয়ত কুলায় না। তারপরেও সৃষ্টিকর্তাকে
ন্যায়পরায়ণ,দয়াবান এবং ত্রুটিহীন
বলা হয় ! বেশীরভাগ ধমর্ীয় পন্ডিৎরা এই সমস্ত
Paradox এর এমন উত্তর দেয় মানুষ যে
পরিবেশেই জন্মগ্রহন করে নিজ নিজ
কাজ সম্পাদন করুক,সৃষ্টিকর্তা ভাল
করেই জানেন যে কিভাবে মানুষের
ভাগ্য নির্ধারন করতে হয়। এসব দেখে এই মনে হয় যে সৃষ্টিকর্তার নিয়ম
অনেকটা Duckworth-Lewis পদ্ধতির মতন
যেটা একটা বিঘ্নিত(মাঝ পথে বন্ধ হয়ে
যাওয়া) ক্রিকেট খেলার বিজয়ী দল
নির্ধানের কাজে ব্যবüত হয়। এখন এগুলো থেকে কিছু সন্দেহের
উৎপত্তি হয়: এক যদি সৃষ্টিকর্তা সত্যিই নিখুত বা
ত্রুটিহীন হন এবং তার Scoring পদ্ধতি
(Formula) এতই অসাধারন হয় তাহলে তার
এত নাটক তৈরী করে এতগুলো বছর নষ্ট
করার কি দরকার ছিল। তিনি অবশ্যই এই
সৃষ্টির একদম প্রথমে এই পদ্ধতি(Formula) তৈরী করতে পারতেন এবং সবাইকে
সরাসরি স্বর্গে অথবা নরকে প্রেরন
করাতে পারতেন! দুই, যদি এই ফর্মূলাটা কোন জন্মানো বাচ্চা
অথবা ভ্রুনের ক্ষেত্রে কাজ করে,তবে
কেন তিনি অকারনে কিছ দল (Folks বা
কোন নির্দিষ্ট সম্প্রদায় বা গোষ্ঠী)
মানুষের বিপক্ষে অবস্হান করে তাদের
জীবনে এত সমস্যার সৃষ্টি করছেন? সর্বোপরি শুরুতেইতো সৃষ্টিকর্তা
সবাইকে সমানভাবে তৈরী করেছেন। তিন, এই পরীক্ষার দুটো ফলাফল হবার
সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে,আপনি হয়ত
স্বর্গ অথবা নরক পাবেন। এখানে কর্মের
ভিত্তিতে ফলাফল পরিবর্তনের কোন
সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। কিছু গ্রন্হ
অবশ্য বিভিন্ন ধরনের স্বর্গের বর্ননার কথা বলে কিন্তু সেগুলো নিছকই একক
ফলাফলের পরিবর্তে দৈত ফলাফল
প্রদর্শন করে থাকে। (একক স্বর্গ অথবা
নরকের পরিবর্তে সেখানে এখন ১০ টা
স্বর্গ অথবা ১০ টা নরকের কথা বলা হয়)।
কিন্তু সেখানে একটানা কোন কিছু বিকাশের ধাপ বা পর্যায় নেই। এটা কোন নিরবিচ্ছিন্ন কার্যের পৃথক
সমীকরনের Non –Zero উত্তর প্রদান করে
যা গানিতীক ভাবে অসম্ভব।
৭. মানুষ তার যৌবনাবস্হার শরীর স্বর্গে
টিকিয়ে রাখতে চায়। এখন যদি তারা
চায় তবে কি তারা তাদের চেহারা
পরিবর্তন করতে পারবে?শিশু এবং
ভ্রনের কি হবে যারা স্বর্গে গেছে?
তারা কি ওখানে প্রাপ্তবয়স্ক হবে? তারা কি স্বর্গের ভাষা শিক্ষার
প্রশিক্ষন পাবে যেটা ওখানে প্রচলিত?
যদি উত্তর হ্যাঁ হয় তবে কেন সৃষ্টিকর্তা
স্বর্গের ওই নির্দিষ্ট ভাষাকে
পৃথিবীতে প্রেরন করেন নি?
টিকিয়ে রাখতে চায়। এখন যদি তারা
চায় তবে কি তারা তাদের চেহারা
পরিবর্তন করতে পারবে?শিশু এবং
ভ্রনের কি হবে যারা স্বর্গে গেছে?
তারা কি ওখানে প্রাপ্তবয়স্ক হবে? তারা কি স্বর্গের ভাষা শিক্ষার
প্রশিক্ষন পাবে যেটা ওখানে প্রচলিত?
যদি উত্তর হ্যাঁ হয় তবে কেন সৃষ্টিকর্তা
স্বর্গের ওই নির্দিষ্ট ভাষাকে
পৃথিবীতে প্রেরন করেন নি?
৮. স্বরীসৃপ,পোকামাকড়,স্তন্যপায়ী এবং
অন্যান্য প্রাণীদের কি হবে? তারা কি
স্বর্গে অথবা নরকে যাবে?আগে এক সময়
এমন বিশ্বাস ছিল যে পশুদের(Animals)
আত্মা নেই। কিন্তু এখন এটা ভালভাবে
প্রমানিত যে অন্তত উচ্চ স্তরের প্রাণী (Higher Animals) গুলো মানুষের মতনই
ব্যাথা এবং সুখ-দুখ অনুভব করে। ধারনাটায় মতভেদ রয়েছে কেউ বলে যে তারাও স্বর্গে যাবে আবার
অন্য পক্ষ বলে যে একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই
জানেন যে কি হবে! যদি তারা স্বর্গে যায় তবে সৃষ্টিকর্তা
কেন অন্য সবার পক্ষ নিচ্ছেন না এবং
কেন তাদের আরশোলা বা ছাগলে জন্ম
দিচ্ছেন না?এভাবে তারাও সরাসরি
স্বর্গে যাওয়ার পাসপোর্ট পেয়ে যেত! আর যদি এসমস্ত প্রাণীগুলো নরকে যায়
তবে তাদের দোষটা কোথায়? তারা কি সেখানে আরশোলা বা ছাগলের
মতন দেখতে হবে? নাকি তারা মানবদেহ
লাভ করবে?তাদের কি বিচার বুদ্ধি
বৃদ্ধি পাবে? নাকি তারা পৃথিবীতে
যেমন বোবা ছিল তেমনই থাকবে?
৯. স্বর্গ আর নরককে চিরস্হায়ী বলে মনে
হয়। সেইসব ধর্ম মতে এটা সর্বদা এমনই
থাকবে। যদি এমন হয় তবে উপরের
পয়েন্টসমূহের আলোকে সৃষ্টিকর্তার
অবিচার আরো প্রকট বা প্রত্যক্ষভাবে
প্রতীয়মান হয়। একটা পরীক্ষার উপর ভিত্তি করেই
সৃষ্টিকতর্া অনেক মানুষকে নরকে
নিক্ষেপ করেন তাদের মধ্যে অনেকের
আবার পরীক্ষা নেয়াও হয় না।
বাকিগুলোকে আবার তিনি বছরের পর
বছর পরীক্ষা নেন আবার অনেককে তিনি অন্য ধর্মালম্বীদের ঘরেও জন্মগ্রহন
করান। এটা কি একটা গুরুতর প্রতারনা নয়? এই সমস্ত গল্প অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তা
হচ্ছেন সবথেকে বড় অন্যায়কারী এবং
প্রতারক যেখানে একক পরীক্ষা এবং
চিরন্তন স্বর্গ-নরকের ধারনাকে সত্যি
বলে ধরা হয়। অনুসিদ্ধান্ত এই যে তখন কি হবে যদি মানুষ স্বর্গে
লড়াই,প্রতারনা অথবা ব্যভিচার শুরু
করে দেয়। তারা কি নরকে পতিত হবে?
অথবা তারা তাদের ইচ্ছানুসারে যে
কোন কিছু করেও স্বর্গে অবস্হান করতে
পারবে?
১০.
সম্প্রতি একটা খবর এসেছিল যে ২ মাস
বয়সী একটা মেয়ে ধর্ষিত হয়েছে। এখনে আসলে কার পরীক্ষা নেয়া হয়েছে?
ধর্ষিতার নাকি ধর্ষকের? যদি পরীক্ষাটা ধর্ষিতার হয় তাহলে
সে কি পরীক্ষা দেয়ার পর্যায় ছিল? যদি পরীক্ষাটা ধর্ষকের হয় তাহলে কি
কারনে সৃষ্টিকর্তা ওই ছোট নিষ্পাপ
বাচ্চাটাকে বলির পাঠা বানালেন। যদি ওইসব গালগপ্প সত্যি হয় তাহলে
সৃষ্টিকর্তাকে এখানে পাগল,নির্বোধ আর
স্বৈরাচারী ছাড়া আর কিছু মনে হয় না।
১১. বেশীরভাগ প্রাচ্যের দর্শনই এক
জীবনের ধারনা তত্তকে খন্ডন করেছে।
তারা বিশ্বাস করে যে জীবন একটা
নিরবিচ্ছিন্ন চক্র যা মৃত্যুর দ্বারা
কখনো বাধাগ্রস্হ হয় না। বিস্তৃতভাবে
এই কার্যের নাম দেয়া হয়েছে কর্মফল নীতি। যদি এটা সত্য না হয় তবে কেন
সৃষ্টিকর্তা এতগুলো মানুষের মনে
বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছেন যারা একদম
ছোটবেলা থেকেই প্রাচ্যে বসবাস
করছে। সৃষ্টিকর্তা পূর্বে অনেক অলৌকিকতা
দেখিয়েছেন যেমন পুরো শহর এবং গ্রাম
পুড়িয়ে দেয়া এবং কোন পিতার
হস্তক্ষেপ ছাড়াই যীশুর জন্ম দেয়া।
তিনি যদি এত কিছুই করতে পারেন
তাহলে তিনি কেন প্রাচ্যের ওইসব বই সকল পুড়িয়ে ফেলছেন না? সর্বসাকুল্যে
তিনিই তো সমস্ত মানদন্ডের উপরে
আছেন,যে মুহাম্মদ অথবা যীশুকে
অবিশ্বাস করবে সে নরকে যাবে। আদর্শ
রীতি অনুযায়ী তার অবশ্যই সেই সমস্ত
প্রাচ্যের বইসমূহ সৃষ্টির ঊষালগ্নেই বন্ধ করে দেয়া উচিৎ ছিল!
১২. ওই সমস্ত সন্ত্রাসবাদীদের কি হবে
যাদেরকে খুব ছোটবেলা থেকেই মগজ
ধোলাই করা হয়েছে? কাসাব এর মতন
লোকের কি হবে যে যে মুম্বাই হামলায়
অনেক মানুষ হত্যা করেছিল সে কি
স্বর্গে নাকি নরকে যাবে? সৃষ্টিকর্তাকে পাওয়া যাবে এই মর্মে
কিছু ধমর্ীয় গোড়া তাদের মগজ ধোলাই
করে হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে!
১৩. মানুষ বলে থাকে যে কেউ যদি
সৃষ্টিকর্তার সত্যের পথকে স্বীকার করে
নেয় তাহলে তিনি তাদের সবার পাপ
ক্ষমা করে দেন! এর মানে কেউ
সারাজীবন যাই করে থাকুক না কেন
অন্তিমে সে যদি বলে Sorry তাহলে যে নির্দিধায় স্বর্গে চলে যেতে পারবে!
এবং যদি কেউ খুব ধর্মপরায়ণ হয়ে থাকে কিন্তু অন্তিম মূহুর্তে সে যদি বলে
থাকে “যে আমি বিশ্বাস করি না চ্
তাহলে সৃষ্টিকর্তা তার হাতে নরকের
টিকিট ধরিয়ে দেবেন। এগুলো থেকে এই সমস্ত সন্দেহের
উৎপত্তি হয়: এক, এটা কি সম্পূর্ণ জীবনের সমস্ত
বহুমাত্রিকতা (Multi-Dimensionality) এবং
জটিলতা (Complexity) নষ্ট করছে না?
সম্পূর্ণ জীবন আর জীবনের সমস্ত
প্রচেষ্টা ও অধ্যাবসায়ের সব কিছুই
ছুড়ে ফেলে দিয়ে শেষ পর্যন্ত শুধু একটা জিনিসই বাকি থেকে যায় হ্যাঁ অথবা
না। এটা কি প্রকৃতির নিয়ম বিরুদ্ধ নয়? আমরা সবাই জানি যে রাগ খুব খারাপ
জিনিস,কিন্তু তারপরেও আমরা আমাদের
উপলব্ধি এবং স্নায়ুতন্ত্রের
সীমারেখার জন্য রাগের বশবতর্ী হয়ে
পড়ি। যদি কেউ পুরোপুরি ধর্মবিশ্বাসী হয়
এবং জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে
বিভ্রান্তির জালে আটকা পড়ে সে যদি
বিধমর্ী হয়ে যায় তবে কেন সে এত
কঠোরভাবে শাস্তি পাবে? আরেকটি বিষয়- যে পূর্বে কোন এক সময়ে
বিধর্মী ছিল কিন্তু বর্তমানে
ধার্মিক,তবে সে কেন তার পূর্বের সমস্ত
বছরগুলোর যাবতীয় অপকর্মগুলো করা আর
ভাবা সত্তেও স্বর্গে যাবে? সমস্ত সিদ্ধান্তগুলাই বিভ্রান্তিমূলক,
বিভ্রান্তি ছাড়া সঠিক সিদ্ধান্ত
নেয়ার একমাত্র উপায়ই হচ্ছে সমস্তকিছু
জেনে বিশ্লেষন করায় সামর্থ হওয়া
কিন্তু কোন মানুষের পক্ষেই এটা করা
অসম্ভব তাই কোন মানুষের সিদ্ধান্তই নির্ভরযোগ্য এবং চূড়ান্ত বলে গ্রহন
করা সম্ভব নয়। তাই কোন বিষয় ঈশ্বরীয় বাণীর সাথে
সংগতিপূর্ণ কি সংঘাতপূর্ণ সেই
সিদ্ধান্তটা অত্যন্ত সীমিত জ্ঞানের
উপর ভিত্তি করে নেয়াটা
বিভ্রান্তিকর। অজ্ঞানতার বশে নেয়া ক্ষনিকের
সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে কাউকে
চিরতরে নরকে অথবা স্বর্গে প্রেরনের
অভিশাপ দিয়ে সৃষ্টিকর্তাকি এখানে
উন্মাদতার পরিচয় দিচ্ছেন না? মানুষের অজ্ঞানতার উপর নির্ভর করেই
সমস্ত আত্মার অন্তিম ভাগ্য নির্ধারন
হয় সৃষ্টিকর্তাকি এমন ত্রুটিপূর্ণ
পরীক্ষা পদ্ধতির নির্মান করে
অন্যায়কারীর পরিচয় দিচ্ছেন না ? দুই, এটাকি দোষ করে পরে দুঃখিত বলে দায়
সেরে ফেলার একটি অপরিকল্পিত ও
অগ্রহনযোগ্য তত্ত নয়? এজন্যই আমরা অনেক মানুষকে দেখি বৃদ্ধ
বয়সে সাধু (Saint) হয়ে যেতে শেষ বয়সে
তারা তাদের ভুল কর্মের জন্য শুধু বলে
Sorry এবং মৃত্যুর পর স্বর্গে চলে যায়।
জীবনের সমস্ত অপকর্ম করে তারা শেষ
বয়সে এসে সেগুলোর ভুল স্বীকার করে আর নির্দিধায় স্বর্গবাসী হয়ে যায়! তিন, তাহলে প্রকৃতি কেন ঈশ্বরের বিরুদ্ধে
কাজ করে? তিনি যখন এতটাই ত্রুটিপূর্ণ
তখন সত্যিই কি প্রকৃতির নকশা তাঁর
দ্বারাই সৃষ্ট? স্বভাবতই কেউ যদি কোন ভুল করে তবে সে
কখনো তার মূল্য না দিয়ে পার পেয়ে
যেতে পারবে না। কেউ যদি অত্যাধিক চিনি সেবন করে
ডায়াবেটিকস এ আক্রান্ত হয় তবে সে
Sorry বলে তা থেকে রেহাই পেতে পারবে
না। তাকে অবশ্যই চিকিৎসার যাবতীয়
ব্যবস্হা গ্রহন করতে হবে যদিও সেটা
নিরাময়ের তেমন কোন উত্তম ব্যবস্হা নেই। আমরা Sorry বলেই সবল হয়ে যেতে
পারি না!,আমরা Sorry বলে আমাদের
হারানো দাঁত ফেরত পেতে পারি
না!,আমরা Sorry বলেই পন্ডিৎ হয়ে যেতে
পারি না!,আমরা Sorry বলেই কোন কিছুতে
দক্ষ হয়ে যেতে পারি না! পরিপ্রেক্ষিতে আমরা দেখি,প্রকৃতিতে
সমস্ত কিছুই সুগঠিত নিরবিচ্ছিন্ন
নিয়মের মধ্যে চলছে। সাধারনভাবে এর
থেকে বের হওয়ার কোন পথ নেই। তাহলে
হঠাত কেন সৃষ্টিকর্তা এত বিষন্ন এবং
বিভ্রান্তিকর হয়ে এই ধারাবাহিকতার বিরুদ্ধ হলেন! সৃষ্টিকর্তা অবশ্যই
তাহলে খুব দিশেহারা (Crazy)।
১৭, যদি সৃষ্টিকর্তা ন্যায়পরায়ণ এবং
দয়াবান হন তাহলে তিনি এমন কিছু
বিশ্বাসের কেন দাবী করেন যা আমরা
আমাদের স্হায়ী ভবিষ্যতের সংরক্ষনের
জন্য দেখতে,শুনতে এবং বিশ্লেশন
কিংবা অনুভব করতে পারি না? না আমরা সৃষ্টিকর্তাকে দেখতে পাই আর
না পাই তার অলৌকিকতাকে দেখতে।
আমরা এমন কি আমাদের চারপাশে কোন
মহামানবকেও (Divine People) দেখতে পাই
না। এমনকি আমরা স্বর্গ আর নরকের এক
ঝলক বা Trailer পর্যন্তও দেখি নাই। স্বর্গে নিশ্চিত স্হান পেতে হলে
এসবের সমস্ত কিছুকেই বিশ্বাস করতে
হবে! আর যদি বিশ্বাস না করি তাহলে
চিরকাল নরকের আগুনে পুড়তে হবে! সর্বোপরি,কোনটা প্রতারনা আর কোনটা
সঠিক সেটা যাচাই করার জন্য
সৃষ্টিকর্তা আমাদের বুদ্ধিমত্তা
দিয়েছেন। সেই সমস্ত মানুষকে আমরা
সম্মান করি যাদের এই বুদ্ধিমত্তা
যথেষ্ঠ পরিমানে বেশী রয়েছে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার রাজ্যে, এই
বুদ্ধিমত্তা থাকাটাই হচ্ছে পাপের সব
থেকে বড় কারন। শুধুমাত্র অন্ধ বিশ্বাসীরাই স্বর্গে
যাবে,বাকি সবাই নরকের আগুনে জ্বলবে! সৃষ্টিকর্তার রাজ্য আসলে বড়ই
বিভ্রান্তিকর (Confusing)
সৃষ্টিকর্তা অবশ্যই তাহলে খুব
দিশেহারা/ God must be crazy!
নোট: বেদে ঈশ্বরের ধারনাটা কিছুটা
ভিন্ন। ঈশ্বর এমনই এক স্বত্তা যিনি
অপরিবর্তনীয় নিয়মের জন্য কখনো
পথভ্রষ্ট হন না,আমাদের পরীক্ষা নেন
না,শুধুমাত্র সাহায্য করেন,প্রত্যেক
মৃত্যুর পর পুনরায় জীবন দান করেন এবং আমাদের অগ্রগতিকে সমর্থন করার
মাধ্যমে সহযোগিতা করেন যেন আমরা
নিজেদের চেষ্টার মাধ্যমে অজ্ঞানতার
পরিসমাপ্তি টানতে পারি।
অন্যান্য প্রাণীদের কি হবে? তারা কি
স্বর্গে অথবা নরকে যাবে?আগে এক সময়
এমন বিশ্বাস ছিল যে পশুদের(Animals)
আত্মা নেই। কিন্তু এখন এটা ভালভাবে
প্রমানিত যে অন্তত উচ্চ স্তরের প্রাণী (Higher Animals) গুলো মানুষের মতনই
ব্যাথা এবং সুখ-দুখ অনুভব করে। ধারনাটায় মতভেদ রয়েছে কেউ বলে যে তারাও স্বর্গে যাবে আবার
অন্য পক্ষ বলে যে একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই
জানেন যে কি হবে! যদি তারা স্বর্গে যায় তবে সৃষ্টিকর্তা
কেন অন্য সবার পক্ষ নিচ্ছেন না এবং
কেন তাদের আরশোলা বা ছাগলে জন্ম
দিচ্ছেন না?এভাবে তারাও সরাসরি
স্বর্গে যাওয়ার পাসপোর্ট পেয়ে যেত! আর যদি এসমস্ত প্রাণীগুলো নরকে যায়
তবে তাদের দোষটা কোথায়? তারা কি সেখানে আরশোলা বা ছাগলের
মতন দেখতে হবে? নাকি তারা মানবদেহ
লাভ করবে?তাদের কি বিচার বুদ্ধি
বৃদ্ধি পাবে? নাকি তারা পৃথিবীতে
যেমন বোবা ছিল তেমনই থাকবে?
৯. স্বর্গ আর নরককে চিরস্হায়ী বলে মনে
হয়। সেইসব ধর্ম মতে এটা সর্বদা এমনই
থাকবে। যদি এমন হয় তবে উপরের
পয়েন্টসমূহের আলোকে সৃষ্টিকর্তার
অবিচার আরো প্রকট বা প্রত্যক্ষভাবে
প্রতীয়মান হয়। একটা পরীক্ষার উপর ভিত্তি করেই
সৃষ্টিকতর্া অনেক মানুষকে নরকে
নিক্ষেপ করেন তাদের মধ্যে অনেকের
আবার পরীক্ষা নেয়াও হয় না।
বাকিগুলোকে আবার তিনি বছরের পর
বছর পরীক্ষা নেন আবার অনেককে তিনি অন্য ধর্মালম্বীদের ঘরেও জন্মগ্রহন
করান। এটা কি একটা গুরুতর প্রতারনা নয়? এই সমস্ত গল্প অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তা
হচ্ছেন সবথেকে বড় অন্যায়কারী এবং
প্রতারক যেখানে একক পরীক্ষা এবং
চিরন্তন স্বর্গ-নরকের ধারনাকে সত্যি
বলে ধরা হয়। অনুসিদ্ধান্ত এই যে তখন কি হবে যদি মানুষ স্বর্গে
লড়াই,প্রতারনা অথবা ব্যভিচার শুরু
করে দেয়। তারা কি নরকে পতিত হবে?
অথবা তারা তাদের ইচ্ছানুসারে যে
কোন কিছু করেও স্বর্গে অবস্হান করতে
পারবে?
১০.
সম্প্রতি একটা খবর এসেছিল যে ২ মাস
বয়সী একটা মেয়ে ধর্ষিত হয়েছে। এখনে আসলে কার পরীক্ষা নেয়া হয়েছে?
ধর্ষিতার নাকি ধর্ষকের? যদি পরীক্ষাটা ধর্ষিতার হয় তাহলে
সে কি পরীক্ষা দেয়ার পর্যায় ছিল? যদি পরীক্ষাটা ধর্ষকের হয় তাহলে কি
কারনে সৃষ্টিকর্তা ওই ছোট নিষ্পাপ
বাচ্চাটাকে বলির পাঠা বানালেন। যদি ওইসব গালগপ্প সত্যি হয় তাহলে
সৃষ্টিকর্তাকে এখানে পাগল,নির্বোধ আর
স্বৈরাচারী ছাড়া আর কিছু মনে হয় না।
১১. বেশীরভাগ প্রাচ্যের দর্শনই এক
জীবনের ধারনা তত্তকে খন্ডন করেছে।
তারা বিশ্বাস করে যে জীবন একটা
নিরবিচ্ছিন্ন চক্র যা মৃত্যুর দ্বারা
কখনো বাধাগ্রস্হ হয় না। বিস্তৃতভাবে
এই কার্যের নাম দেয়া হয়েছে কর্মফল নীতি। যদি এটা সত্য না হয় তবে কেন
সৃষ্টিকর্তা এতগুলো মানুষের মনে
বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছেন যারা একদম
ছোটবেলা থেকেই প্রাচ্যে বসবাস
করছে। সৃষ্টিকর্তা পূর্বে অনেক অলৌকিকতা
দেখিয়েছেন যেমন পুরো শহর এবং গ্রাম
পুড়িয়ে দেয়া এবং কোন পিতার
হস্তক্ষেপ ছাড়াই যীশুর জন্ম দেয়া।
তিনি যদি এত কিছুই করতে পারেন
তাহলে তিনি কেন প্রাচ্যের ওইসব বই সকল পুড়িয়ে ফেলছেন না? সর্বসাকুল্যে
তিনিই তো সমস্ত মানদন্ডের উপরে
আছেন,যে মুহাম্মদ অথবা যীশুকে
অবিশ্বাস করবে সে নরকে যাবে। আদর্শ
রীতি অনুযায়ী তার অবশ্যই সেই সমস্ত
প্রাচ্যের বইসমূহ সৃষ্টির ঊষালগ্নেই বন্ধ করে দেয়া উচিৎ ছিল!
১২. ওই সমস্ত সন্ত্রাসবাদীদের কি হবে
যাদেরকে খুব ছোটবেলা থেকেই মগজ
ধোলাই করা হয়েছে? কাসাব এর মতন
লোকের কি হবে যে যে মুম্বাই হামলায়
অনেক মানুষ হত্যা করেছিল সে কি
স্বর্গে নাকি নরকে যাবে? সৃষ্টিকর্তাকে পাওয়া যাবে এই মর্মে
কিছু ধমর্ীয় গোড়া তাদের মগজ ধোলাই
করে হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে!
১৩. মানুষ বলে থাকে যে কেউ যদি
সৃষ্টিকর্তার সত্যের পথকে স্বীকার করে
নেয় তাহলে তিনি তাদের সবার পাপ
ক্ষমা করে দেন! এর মানে কেউ
সারাজীবন যাই করে থাকুক না কেন
অন্তিমে সে যদি বলে Sorry তাহলে যে নির্দিধায় স্বর্গে চলে যেতে পারবে!
এবং যদি কেউ খুব ধর্মপরায়ণ হয়ে থাকে কিন্তু অন্তিম মূহুর্তে সে যদি বলে
থাকে “যে আমি বিশ্বাস করি না চ্
তাহলে সৃষ্টিকর্তা তার হাতে নরকের
টিকিট ধরিয়ে দেবেন। এগুলো থেকে এই সমস্ত সন্দেহের
উৎপত্তি হয়: এক, এটা কি সম্পূর্ণ জীবনের সমস্ত
বহুমাত্রিকতা (Multi-Dimensionality) এবং
জটিলতা (Complexity) নষ্ট করছে না?
সম্পূর্ণ জীবন আর জীবনের সমস্ত
প্রচেষ্টা ও অধ্যাবসায়ের সব কিছুই
ছুড়ে ফেলে দিয়ে শেষ পর্যন্ত শুধু একটা জিনিসই বাকি থেকে যায় হ্যাঁ অথবা
না। এটা কি প্রকৃতির নিয়ম বিরুদ্ধ নয়? আমরা সবাই জানি যে রাগ খুব খারাপ
জিনিস,কিন্তু তারপরেও আমরা আমাদের
উপলব্ধি এবং স্নায়ুতন্ত্রের
সীমারেখার জন্য রাগের বশবতর্ী হয়ে
পড়ি। যদি কেউ পুরোপুরি ধর্মবিশ্বাসী হয়
এবং জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে
বিভ্রান্তির জালে আটকা পড়ে সে যদি
বিধমর্ী হয়ে যায় তবে কেন সে এত
কঠোরভাবে শাস্তি পাবে? আরেকটি বিষয়- যে পূর্বে কোন এক সময়ে
বিধর্মী ছিল কিন্তু বর্তমানে
ধার্মিক,তবে সে কেন তার পূর্বের সমস্ত
বছরগুলোর যাবতীয় অপকর্মগুলো করা আর
ভাবা সত্তেও স্বর্গে যাবে? সমস্ত সিদ্ধান্তগুলাই বিভ্রান্তিমূলক,
বিভ্রান্তি ছাড়া সঠিক সিদ্ধান্ত
নেয়ার একমাত্র উপায়ই হচ্ছে সমস্তকিছু
জেনে বিশ্লেষন করায় সামর্থ হওয়া
কিন্তু কোন মানুষের পক্ষেই এটা করা
অসম্ভব তাই কোন মানুষের সিদ্ধান্তই নির্ভরযোগ্য এবং চূড়ান্ত বলে গ্রহন
করা সম্ভব নয়। তাই কোন বিষয় ঈশ্বরীয় বাণীর সাথে
সংগতিপূর্ণ কি সংঘাতপূর্ণ সেই
সিদ্ধান্তটা অত্যন্ত সীমিত জ্ঞানের
উপর ভিত্তি করে নেয়াটা
বিভ্রান্তিকর। অজ্ঞানতার বশে নেয়া ক্ষনিকের
সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে কাউকে
চিরতরে নরকে অথবা স্বর্গে প্রেরনের
অভিশাপ দিয়ে সৃষ্টিকর্তাকি এখানে
উন্মাদতার পরিচয় দিচ্ছেন না? মানুষের অজ্ঞানতার উপর নির্ভর করেই
সমস্ত আত্মার অন্তিম ভাগ্য নির্ধারন
হয় সৃষ্টিকর্তাকি এমন ত্রুটিপূর্ণ
পরীক্ষা পদ্ধতির নির্মান করে
অন্যায়কারীর পরিচয় দিচ্ছেন না ? দুই, এটাকি দোষ করে পরে দুঃখিত বলে দায়
সেরে ফেলার একটি অপরিকল্পিত ও
অগ্রহনযোগ্য তত্ত নয়? এজন্যই আমরা অনেক মানুষকে দেখি বৃদ্ধ
বয়সে সাধু (Saint) হয়ে যেতে শেষ বয়সে
তারা তাদের ভুল কর্মের জন্য শুধু বলে
Sorry এবং মৃত্যুর পর স্বর্গে চলে যায়।
জীবনের সমস্ত অপকর্ম করে তারা শেষ
বয়সে এসে সেগুলোর ভুল স্বীকার করে আর নির্দিধায় স্বর্গবাসী হয়ে যায়! তিন, তাহলে প্রকৃতি কেন ঈশ্বরের বিরুদ্ধে
কাজ করে? তিনি যখন এতটাই ত্রুটিপূর্ণ
তখন সত্যিই কি প্রকৃতির নকশা তাঁর
দ্বারাই সৃষ্ট? স্বভাবতই কেউ যদি কোন ভুল করে তবে সে
কখনো তার মূল্য না দিয়ে পার পেয়ে
যেতে পারবে না। কেউ যদি অত্যাধিক চিনি সেবন করে
ডায়াবেটিকস এ আক্রান্ত হয় তবে সে
Sorry বলে তা থেকে রেহাই পেতে পারবে
না। তাকে অবশ্যই চিকিৎসার যাবতীয়
ব্যবস্হা গ্রহন করতে হবে যদিও সেটা
নিরাময়ের তেমন কোন উত্তম ব্যবস্হা নেই। আমরা Sorry বলেই সবল হয়ে যেতে
পারি না!,আমরা Sorry বলে আমাদের
হারানো দাঁত ফেরত পেতে পারি
না!,আমরা Sorry বলেই পন্ডিৎ হয়ে যেতে
পারি না!,আমরা Sorry বলেই কোন কিছুতে
দক্ষ হয়ে যেতে পারি না! পরিপ্রেক্ষিতে আমরা দেখি,প্রকৃতিতে
সমস্ত কিছুই সুগঠিত নিরবিচ্ছিন্ন
নিয়মের মধ্যে চলছে। সাধারনভাবে এর
থেকে বের হওয়ার কোন পথ নেই। তাহলে
হঠাত কেন সৃষ্টিকর্তা এত বিষন্ন এবং
বিভ্রান্তিকর হয়ে এই ধারাবাহিকতার বিরুদ্ধ হলেন! সৃষ্টিকর্তা অবশ্যই
তাহলে খুব দিশেহারা (Crazy)।
১৭, যদি সৃষ্টিকর্তা ন্যায়পরায়ণ এবং
দয়াবান হন তাহলে তিনি এমন কিছু
বিশ্বাসের কেন দাবী করেন যা আমরা
আমাদের স্হায়ী ভবিষ্যতের সংরক্ষনের
জন্য দেখতে,শুনতে এবং বিশ্লেশন
কিংবা অনুভব করতে পারি না? না আমরা সৃষ্টিকর্তাকে দেখতে পাই আর
না পাই তার অলৌকিকতাকে দেখতে।
আমরা এমন কি আমাদের চারপাশে কোন
মহামানবকেও (Divine People) দেখতে পাই
না। এমনকি আমরা স্বর্গ আর নরকের এক
ঝলক বা Trailer পর্যন্তও দেখি নাই। স্বর্গে নিশ্চিত স্হান পেতে হলে
এসবের সমস্ত কিছুকেই বিশ্বাস করতে
হবে! আর যদি বিশ্বাস না করি তাহলে
চিরকাল নরকের আগুনে পুড়তে হবে! সর্বোপরি,কোনটা প্রতারনা আর কোনটা
সঠিক সেটা যাচাই করার জন্য
সৃষ্টিকর্তা আমাদের বুদ্ধিমত্তা
দিয়েছেন। সেই সমস্ত মানুষকে আমরা
সম্মান করি যাদের এই বুদ্ধিমত্তা
যথেষ্ঠ পরিমানে বেশী রয়েছে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার রাজ্যে, এই
বুদ্ধিমত্তা থাকাটাই হচ্ছে পাপের সব
থেকে বড় কারন। শুধুমাত্র অন্ধ বিশ্বাসীরাই স্বর্গে
যাবে,বাকি সবাই নরকের আগুনে জ্বলবে! সৃষ্টিকর্তার রাজ্য আসলে বড়ই
বিভ্রান্তিকর (Confusing)
সৃষ্টিকর্তা অবশ্যই তাহলে খুব
দিশেহারা/ God must be crazy!
নোট: বেদে ঈশ্বরের ধারনাটা কিছুটা
ভিন্ন। ঈশ্বর এমনই এক স্বত্তা যিনি
অপরিবর্তনীয় নিয়মের জন্য কখনো
পথভ্রষ্ট হন না,আমাদের পরীক্ষা নেন
না,শুধুমাত্র সাহায্য করেন,প্রত্যেক
মৃত্যুর পর পুনরায় জীবন দান করেন এবং আমাদের অগ্রগতিকে সমর্থন করার
মাধ্যমে সহযোগিতা করেন যেন আমরা
নিজেদের চেষ্টার মাধ্যমে অজ্ঞানতার
পরিসমাপ্তি টানতে পারি।