একজন মালী একটি সুন্দর বাগান তৈরি করেছে। এক যুবক সেই মালীর কাছে তার বাগান দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। মালী একটি শর্তে রাজি হলেন আর সেই শর্তটি হচ্ছে, যুবকটি বাগানের কোন ফুলই ছিঁড়তে পারবে না।
যুবকটি বাগানে প্রবেশ করলো আর ফল, ফুল ইত্যাদি দেখে মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছিলো। তার মনে হলো কিছু ফুল ছিঁড়ে পকেটে লুকিয়ে রাখলে কেউ জানবে না। যেই ভাবা সেই কাজ! কিছু ফুল ছিঁড়ে পকেটে লুকিয়ে রাখলো।
কিন্তু যুবকের পরিকল্পনা যেন তীরে এসে তরী ডোবার মতো অবস্থা! যুবক বাগান থেকে বের হতে শুরু করলে মালী নিয়ম অনুযায়ী পকেট খুঁজলো। যুবকটি মালীর নিকট ধরা খেলো আর চুরির অপরাধে ওই যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন। চুরির দায়ে তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হলো।
মিত্রগণ! এই গল্প থেকে একটি সুন্দর শিক্ষা নেওয়ার বিষয় রিয়েছে। এই মালী হচ্ছেন ঈশ্বর যিনি সৃষ্টি রূপে এই সুন্দর বাগানটি (প্রকৃতি) তৈরি করেছেন। ঈশ্বর আত্মাকে স্বাধীনতা দিয়েছেন মনুষ্যরূপে ঘুরে-বেড়ানোর, অর্থাৎ কর্ম করার। কিন্তু মনুষ্য ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করে সাংসারিক পদার্থে মোহিত হয়ে কর্মবন্ধনে আবদ্ধ হয় আর তার ফলস্বরূপ ঈশ্বর পুনরায় সেই আত্মাকে পৃথিবীতে পাঠান কর্মফল ভোগ করার জন্য।
এটি ত্রৈতবাদের কঠোর সিদ্ধান্ত। ঈশ্বর মনুষ্যকে মোক্ষ প্রদানের হেতু জীবের কর্ম করার জন্য এই পৃথিবী সৃষ্টি করেন, জীবকে স্বতন্ত্রতা ও অধিকার প্রদান করেন। যজুর্বেদের ৪০তম অধ্যায়ের প্রথম মন্ত্রে এই বার্তাটি দেওয়া আছেঃ
ঈশা বাস্যমিদং সর্বং যৎকিঞ্চ জগত্যাং জগৎ।তেন ত্যক্তেন ভুঞ্জীথা মা গৃধঃ কস্য সিদ্ধনম্।। ৬-যজুর্বেদ ৪০/১বঙ্গানুবাদঃ- প্রকৃতি হইতে পৃথিবী পর্যন্ত সব পরিবর্তনশীল সৃষ্টিতে চরপ্রাণী মাত্রই পরমাত্মা দ্বারা আচ্ছাদিত। সেই পরিত্যাজ্য জগতে ভোগের অনুভব কর, কাহারও কোনও পদার্থে লোভ করিও না।