
- সূর্যগ্রহণ নিয়ে বেদ কী বলছে পড়ুন - https://www.agniveerbangla.org/2018/07/eclipse.html
প্রচলিত তথ্য: সূর্যগ্রহণে ক্ষতিকারক রশ্মি তৈরি করে যা অন্ধত্বের কারণ হতে পারে।
নাসার উত্তর: মোট সূর্যগ্রহণের সময় যখন চাঁদের ডিস্কটি পুরোপুরি সূর্যকে ঢেকে দেয় তখন বৈদ্যুতিন চৌম্বকীয় বিকিরণ নির্গত হয়, যদিও মাঝে মাঝে সবুজ রঙের হয়। আমাদের ঘন বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে পারে এবং অন্ধত্ব তৈরি করতে পারে।
প্রচলিত তথ্য: আপনি যদি গর্ভবতী হন তবে আপনাকে অবশ্যই সূর্যগ্রহণ দেখা উচিত নয়, কারণ এটি আপনার শিশুর ক্ষতি করতে পারে।
নাসার উত্তর: এটি পূর্ববর্তী মিথ্যা ধারণার সাথে সম্পর্কিত যে মোট সূর্যগ্রহণের সময় ক্ষতিকারক বিকিরণগুলি নির্গত হয়। যদিও আলোক হিসাবে দেখা যায়, তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণ পুরোপুরি নিরাপদ, তেজস্ক্রিয়তার আরও একটি রূপ রয়েছে যা সূর্য থেকে পৃথিবীতে ভ্রমণ করে। সৌর অভ্যন্তরের গভীর যেখানে সূর্যের আলো জ্বালানোর জন্য পারমাণবিক ফিউশন হয় সেখানে নিউট্রিনো নামক কণা জন্মগ্রহণ করে এবং সূর্যের বাইরে এবং মহাকাশে নির্বিঘ্নে জিপ দেয়। এরা গ্রহণের সময় চাঁদের শক্ত দেহটি দিয়ে যায় এবং এক-দ্বিতীয় সময় পরে পৃথিবীতে পৌঁছে যায় ! প্রতি সেকেন্ডে, সূর্য দিগন্তের উপরে বা নীচে থাকলে আপনার দেহ কোটি কোটি নিউট্রিনো দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়। এর একমাত্র পরিণতি হ'ল প্রতি কয়েক মিনিটের মধ্যে আপনার শরীরে কয়েকটি পরমাণু নিউট্রিনো শোষণ করে আলাদা আইসোটোপে রূপান্তরিত হয়। এটি সম্পূর্ণরূপে নিরীহ প্রভাব এবং আপনার ক্ষতি করতে পারে না। আপনি গর্ভবতী হলেও কোন সমস্যা করবেনা।
প্রচলিত তথ্য: গ্রহণের সময় খাবারে বিষ মিশে যায়।
নাসার উত্তর: ক্ষতিকারক সৌর রশ্মির মিথ্যা ধারণার সাথে সম্পর্কিত হল মোট সূর্যগ্রহণের সময়, এমন এক ধরণের রেডিয়েশন উত্পন্ন হয় যা আপনার খাবারের ক্ষতি করবে। কিন্তু আদৌ এটি সত্য নয়। তাই চিন্তার কোন কারণ নেই। সূর্য গ্রহণে খাবার খেতে পারবেন।
প্রচলিত তথ্য: আপনার জন্মদিনের ছয় মাস পরে বা আপনার জন্মদিনে সূর্যগ্রহণ, আসন্ন খারাপ স্বাস্থ্যের লক্ষণ।
নাসার উত্তর: সূর্য গ্রহণের সাথে স্বাস্থ্যের উন্নতি বা অবনতির কোন সম্পর্ক নেই।
কিছু পৌরাণিক প্রশ্ন এবং উত্তর:
গ্রহণের পর স্নান করতে হয় কেন?
উত্তর: মানুষ মনে করে রাহু নামের কেউ সূর্যকে গিলে ফেলে এবং সেই সাথে পৃথিবীর সবাই অশুচি হয় যায়। কিন্তু আদৌ এটি সত্য নয়। গ্রহণে আপনার শরীর ময়লা হয়না। তাই স্নান করার প্রয়োজন নেই।
গ্রহণের সময় গর্ভবতী মহিলারা কোন কিছু কাটাছেঁড়া করলে গর্ভের সন্তান প্রতিবন্ধী হয় কেন?
উত্তর: প্রতিবন্ধী শিশু জন্মগ্রহণের সাথে সূর্যগ্রহণের কোন সম্পর্ক নেই। জন্মগত ত্রুটি বিভিন্নভাবে হতে পারে। একটি ত্রুটি গঠনগত কারণে হয়; এটি দেখা যায়। এই সমস্যায় হয়তো শিশুর হাত বা পা থাকে না। আরেকটিকে বলা হয় ফাংশনাল ত্রুটি, এক্ষেত্রে হয়তো শিশুর বুদ্ধি ঠিকমতো হয় না; সে কানে শুনতে পায় না বা চোখে দেখতে পারে না। অপরটি হলো মেটাবলিক ত্রুটি, সেটা স্বাভাবিকভাবে বোঝা যায় না; কিছু আচরণ দিয়ে বোঝা যায়। যেমন, কনজেনটাল হাইপোথারোয়েডিজম। সারা পৃথিবীতেই চারহাজারেরও বেশি শিশু জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্মায়। এছাড়া কাজের পরিবেশের কারণেও হতে পারে। যারা ব্যাটারি ফেক্টরিতে কাজ করে তাদের এই সমস্যা হতে পারে। নারীর মধ্যে যারা পার্লারে কাজ করে তারা ব্লিচ করার জন্য যেসব জিনিস ব্যবহার করে এর ফলে সমস্যা হতে পারে। আমরা যে পানি পান করি, এরমধ্যে অনেক সময় প্রেসটিসাইজড, হারবিসাইজড থাকে, সেগুলো সমস্যা তৈরি করে। এছাড়া খাবারের মধ্যে প্রিজারভেটিভ দেওয়া থাকে এসবের কারণেও সমস্যা হয়। এছাড়া পিতা মাতার নেশা সেবনেও শিশুর সমস্যা হতে পারে। অনেক সময় রুবেলা ভাইরাসের কারণেও সমস্যা হয়।
- ১। সূর্য , চন্দ্র সবই জড় দেব, চেতন নয় । তাই জড় বস্তু বিষয়ে ভৌত জড় বিজ্ঞান সিদ্ধান্তই প্রযোজ্য হবে
- ২। অনেকে বলেন ঈশ্বর বা আত্মা জড় বিজ্ঞান প্রমাণ যখন করতে পারে না তখন গ্রহণ সম্পর্কিত সিদ্ধান্তও আমাকে মেনে নিতে হবে ।
উক্ত সিদ্ধান্ত হাস্যাস্পদ । কেননা ঈশ্বর ও জীব সূক্ষ্মতম ও সূক্ষ্ম চেতন সত্ত্বা যা ভৌত জড় বিজ্ঞানের আলোচ্য নয় মোটেই । কিন্তু সূর্যাদি জ্যোতিষ্ক কিংবা মানবদেহ জড় । যারা নানা প্রভাব দাবি করেন গ্রহণ নিয়ে তারা দেহের উপর প্রভাবই বর্ণনা করেন যেমন খাবার, ফুড পয়জনিং কিংবা গর্ভবতী নারী । জড় নশ্বর দেহ সম্পর্কে জড় বিজ্ঞানের সিদ্ধান্তই গৃহীত হবে এটাই স্বাভাবিক ।
- ৩। যদি বেদাদি বা নানা সিদ্ধান্ত বৈদিক ও বৈজ্ঞানিকভাবে ঠিক তা প্রমাণে জড় বিদ্যারই সাহায্য নিয়ে থাকেন তাহলে ভৌত বিষয়েও জড় বিজ্ঞানের প্রমাণিত সিদ্ধান্ত মেনে নিতে আপত্তি কোথায় ?
উপরের আলোচনার পরিশেষে বক্তব্য - সূর্যগ্রহণ একটি প্রাকৃতিক ঘটনা যা ভৌত বিজ্ঞানের সাথে সম্পৃক্ত । এর সাথে বৈজ্ঞানিক যে কোন সিদ্ধান্ত প্রমাণ সাপেক্ষে জড় বিজ্ঞান দ্বারাই গৃহীত হবে । কোন অপ্রাসঙ্গিক , মনগড়া কিংবা ব্যক্তিগত মতামত গ্রহণযোগ্য নয় ।
© বাংলাদেশ অগ্নিবীর