দৈনিক বেদবাণী


এই সমগ্র সংসার নিরোগ এবং শুভচিন্তা যুক্ত হোক । যজুর্বেদ ১৬.৪                    সূর্য-এর আলোয় স্বয়ং আলোহীন চাঁদ আলোকিত হয় । ঋগ্বেদ ৫.৪০.৫                    প্রশংসনীয় সংস্কৃতি, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও মাতৃভূমি— এই ত্রয়ী সুখ-সমৃদ্ধি প্রদান করে। ঋগ্বেদ ১.১৩.৯                    উত্তম জীবন লাভের জন্য আমাদের জ্ঞানীদের সাহচর্যে চলা উচিৎ। ঋগ্বেদ ১.১২.১৬                    যে ব্যক্তি সম্পদ বা সুখ বা জ্ঞান নিঃস্বার্থভাবে দান করে, সে-ই প্রকৃত মিত্র। ঋগ্বেদ ২.৩০.৭                    মানুষ কর্ম দ্বারাই জগতে মহত্ত্ব ও প্রসিদ্ধি লাভ করে। ঋগ্বেদ ৩.৩৬.১                    হে পতি! তোমার স্ত্রীই গৃহ, স্ত্রীই সন্তানের আশ্রয়। ঋগ্বেদ ৩.৫৩.৪                    পরমাত্মার নিয়ম বিনষ্ট হয় না; তা অটুট, অচল ও অপরিবর্তনীয়। ঋগ্বেদ ৩.৫৪.১৮                    এই ধর্মের মার্গই সনাতন, এই পথে চলেই মানবগণ উন্নতি লাভ করে। ঋগ্বেদ ৪.১৮.১                    পরমাত্মার নিকট কোনো মানুষই বড় বা ছোট নয়। সকল মানুষই সমান এবং পরস্পরের ভ্রাতৃস্বরূপ। ঋগ্বেদ ৫.৬০.৫                    যে ব্যক্তি অকারণে অন্যের নিন্দা করে, সে নিজেও নিন্দার পাত্র হয়। ঋগ্বেদ ৫.২.৬                    নিশ্চিতরূপে এই চতুর্বেদ কল্যাণপ্রদায়িনী এবং মানবকে জ্ঞান প্রদান করে ধারণকারিণী। ঋগ্বেদ ৫.৪৭.৪                    বীর মানবের জন্য পর্বতও সুগম হয়ে যায়। ঋগ্বেদ ৬.২৪.৮                    আমরা অন্যের সঞ্চিত পাপের কর্মফল ভোগ করি না। ঋগ্বেদ ৬.৫১.৭                    হে মিত্রগণ! ওঠো— উদ্যমী হও, সাবধান হও এবং এই সংসাররূপী নদীকে অতিক্রম করো। ঋগ্বেদ ১০.৫৩.৮







মহাকালের গল্পে গল্পে মানব বিবর্তনের ইতিহাস; শেষ পর্ব

Arindam
8

 


Homo Erectus, প্রথম Homo গণের সদস্য আবির্ভূত হলো প্রায় ২০ লক্ষ বছর আগে। এই জায়গাতেই গত পর্বের গল্প শেষ করেছিলাম। তারা ছড়িয়ে পড়েছিল ইউরেশিয় অঞ্চলে, স্প্যানিশ আইবেরিয় পেনিনসুলা হতে জাভা দ্বীপপুঞ্জ অবধি। জাভা মানব,পিকিং মানব নামের প্রাপ্ত বিখ্যাত জীবাশ্মগুলি এই Homo Erectus দের ই।


হোমো ইরেক্টাসের প্রথম ফসিল খুঁজে পান একজন ওলন্দাজ চিকিৎসক যাঁর নাম ওজেন দুবোয়া। ১৮৯১ ও ৯২ সালে ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে মানুষের পূর্বপুরুষদের জীবাশ্ম আবিষ্কারের নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়েই তিনি গিয়েছিলেন। তার প্রথম আবিষ্কৃত জীবাশ্ম ছিল একটি খুলির ঊর্ধ্বাংশ (স্কাল-ক্যাপ), যা সোলো নদীর তীরে অবস্থিত ত্রিনিল নামক স্থানে পাওয়া যায় যে কারণে জীবাশ্মটির নামকরণ করা হয় Trinil 2। এর কয়েক বছর পর একই জায়গা থেকে একটি ফিমার খুঁজে পান। খুলি ও ফিমারের পরীক্ষা থেকে প্রমাণিত হয় যে Homo Erectus প্রজাতিই প্রথম Hominin প্রজাতি যারা আমাদের মতো সোজা দুই পায়ে হাঁটত। এজন্যেই এদের নাম Homo Erectus অর্থাৎ সোজা মানব। গতপর্বেই দেখিয়েছি এই দুইপেয়ে জীবে পরিণত হওয়াতে সভ্যতার কী কী পরিবর্তন ঘটেছিল।


হোমো ইরেক্টাস ছড়িয়ে পড়ল সারা পৃথিবীতে, তাদের ফসিল পাওয়া গেচে ইউরোপ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া ও দূরপ্রাচ্যে। হাতে হাতিয়ার ব্যবহারও শিখল তারা, ইতিহাসে প্রথম বারের মত এরাই পাথর দিয়ে সুচারু হাতিয়ার তৈরি করে। তারাই প্রথম প্রজাতি যারা দেখতে আমাদের কাছাকাছি ছিল, চাপা মুখ, শরীরে অল্প চুল, মগজের আকার অন্য প্রাণীদের চেয়ে বড়। 


সোজা হয়ে হাঁটার উপকারিতা অপকারিতা নিয়ে গত পর্বে বলেছিলাম। প্রাণীর দাঁড়ানোর আকৃতি সোজা হলে শ্রোণীদেশের অস্থির বহিরাগমন পথ সরু হয়ে যায়। আগে এই বহিরাগমন পথে নরমাল ডেলিভারি সহজ হতো, এখন সেই পথ সরু হওয়ায় নরমাল ডেলিভারি হওয়া কঠিন হয়ে গেল। হাজার হাজার প্রজন্ম অতিক্রম করে এই সমস্যার সমাধান করতে মানুষের গর্ভধারণ সময় হয়ে গেল কম, মাত্র ৯ মাস। অল্প সময় গর্ভে থাকায় Hominin শিশু জন্মের সময় হয় অনেক দূর্বল, অন্য প্রজাতিগুলোর তুলনায় এদের অনেক বছর বাবা মার পরিচর্যা প্রয়োজন হয়।


শ্রোণীচক্রের অস্থির বহিরাগমন পথ দিন দিন হচ্ছে সরু



Homo Erectus রা হয়ে উঠল শিকারি। পাথরের দ্বারা তৈরী ধারালো অস্ত্র দিয়ে শিকার করতে লাগল,

শিকারকে দৌড়ে ধরতে সাহায্য করল ক্রমেই নিচু হয়ে আসা কাঁধ ও লম্বা হতে থাকা বক্ষ। শিকারের সময় দৌড়াতে শরীরে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয়, সেই তাপ বের করে দেয়ার জন্য সৃষ্টি হলো ঘামের।


প্রায় ১৭ লক্ষ বছর আগে Homo Erectus রা আবিস্কার করল সভ্যতার ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রটি আর তা হলো আগুন। আগুন করে দিলো খাদ্য ঝলসানোর সুযোগ ফলে খাদ্য হতে পুষ্টি পাওয়া হলো অনেকগুণ সহজ, সেই ঝলসানো খাদ্য হজম করতে লাগল অনেক কম শ্রম, প্রচুর শক্তি বেঁচে গেল। ঝলসানো নরম খাদ্য চাবাতে চোয়ালের মাংসের শক্তি প্রয়োজন হলো কম ফলে ধীরে ধীরে চোয়ালের আকার হয়ে গেল ছোট আর চোয়াল ছোট হয়ে যাওয়াতে বেড়ে গেল খুলির প্রসারিত হবার জায়গা। সেই নতুন প্রসারিত জায়গাতে অধিকতর পুষ্টি পাওয়া Hominin দের বড় হতে থাকা মস্তিস্কের বসবাসের সুবন্দোবস্ত হলো! আজ দেখতে পাবেন মানুষের আক্কেল দাঁত দিনদিন ক্রমশ ছোট হচ্ছে আকারে, ৩৫ শতাংশ মানুষের এই দাঁতটি উঠছেই না। এটিই মানবচোয়ালের ক্রমবিবর্তনের একটি সাক্ষাৎ নিদর্শন। 



শীতের রাতে পাওয়া গেল উষ্ণতা আর অন্ধকারে পাওয়া গেল শিকারি প্রাণীদের হতে সুরক্ষা। আগুনের আলোর চারপাশে Hominin সদস্যরা একসাথে বসে তাপ পোহাতে লাগল। এতে সবার মধ্যে সৃষ্টি হলো দলগত বন্ধনের, এ থেকেই সৃষ্টি হলো সমাজবদ্ধতা তথা সম্প্রদায়ের। এক কথায় আগুন জগতের ইতিহাসটাই ওলটপালট করে দিলো। জগতে তাই হয়তো ঈশ্বরপ্রেরিত বাণীর প্রথম শব্দটিও অগ্নি।


অগ্নিমীলে পুরোহিতম্ যজ্ঞস্য দেবমৃত্বিজম্…

জীবনের আলোকরূপ অগ্নি স্বপ্রকাশমান জগৎদেব পরমেশ্বরকে আমরা আহ্বান করি

( ঋগ্বেদ ১.১.১)


আসলেই যেন আজ হতে ১৭ লক্ষ বছর আগে জগতের সামনে জীবনের আলো হয়ে প্রকাশিত হয়েছিলেন অগ্নিরূপ পরমাত্মা।


Homo Erectus দের মস্তিস্কের আকৃতি বড় হতে লাগল অধিক পুষ্টি পেয়ে, তাতে বাড়তে লাগল বুদ্ধিমত্তাও। রান্না করতে পারা যে এত গুরুত্বপূর্ণ তা কি কখনও আগে বুঝেছেন? 


বুদ্ধি বাড়ার সাথে সাথে বাড়ল সমাজবদ্ধতা, সমাজের সকলে একসাথে টিকে থাকার জন্য প্রয়োজন হলে যোগাযোগ মাধ্যমের, বিভিন্ন ধরনের আওয়াজ তৈরী করে তারা একে অপরের সাথে দূর থেকে যোগাযোগ তৈরীর চেষ্টা করল, সাথে থাকল চোখের ইশারা, অঙ্গভঙ্গীর। একসময় সৃষ্টি হলো ভাষা।


কীভাবে বাড়ছে আমাদের মস্তিস্কের আয়তন

বিভিন্ন Hominid দের মস্তিস্কের আয়তন



এই Homo Erectus দের ই একটি অংশ অনেক লক্ষ লক্ষ বছরে হালকা পরিবর্তিত হয়ে হলো Homo Heidelbergensis, আরেকটি অংশ Homo Antecessor. আরও কিছু সামান্য বিবর্তিত রূপ হলো 

Homo Florosiensis, Homo Luzonensis ইত্যাদি। এগুলোর ইতিহাস ও বিবর্তনের ধারা বলে লেখাটিকে বড় করবনা যেহেতু এগুলো তেমন প্রাসঙ্গিক নয়।


বিভিন্ন Hominin প্রজাতির AI Generated চিত্রকল্প


Hominid দের শারীরিক পার্থক্য সংক্ষেপে ও একনজরে



আজ থেকে প্রায় ৩ লক্ষ বছর আগে জগৎ প্রত্যক্ষ করল একদল পরিপূর্ণ আকৃতির পরিণত বয়সের নতুন প্রজাতির অনেকগুলো সদস্যদের যাদের মস্তিস্কের আকৃতি আগের সব Hominin প্রজাতির চেয়ে বড়, যাদের চোখের উপরের ভ্রু এর অংশটি কম উত্থিত, দাঁত তুলনামূলকভাবে ছোট ও চোখা দাঁত অন্যদের ন্যায় হৃষ্টপুষ্ট নয়, চিবুক তুলনামূলকভাবে অন্যদের চেয়ে বড় কিন্তু চোয়াল ছোট, কপাল তুলনামূলক লম্বা, অক্ষিকোটর গোলাকার নয় বরং অনেকটা চতুর্ভুজাকৃতির, হাত পা তুলনামূলকভাবে কম লম্বা ও অধিকতর পুরু, করোটির পিছন দিকটি ঘাড়ের মাংসপেশী ছোট হবার কারণে গোলাকার। আর সৃষ্ট এই নতুন প্রজাতির পরিণত বয়সের অনেক সদস্যরাই হলো  Homo Sapiens


পবিত্র বেদও সেদিকেই ইংগিত করছে-

পুরুষং জাতমগ্রতঃ… সাধ্যাহ্ ঋষয়শ্চ য়ে।।

(যজুর্বেদ ৩১/৯)


অর্থাৎ অগ্রে যাদের সৃষ্টি হয়েছিল তাদের সংখ্যাকে বহুবচনে উল্লেখ করা হয়েছে, অনেক সংখ্যক হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।


বৃহদারণ্যক উপনিষদ ১.৪.৩ এও বহুবচনেই মনুষ্য উৎপত্তির কথা বলা হয়েছে-


ততো মনুষ্যা অজায়ন্ত

মানবগণের উৎপত্তি হলো।


উপনিষদে এই কথা সরাসরিই বলা হয়েছে-


সোহকাময়ত বহু স্যাং প্রজায়েয়েতি।

অর্থাৎ শুরুতে বহু প্রজা একত্রে সৃষ্টি হলো

(তৈত্তিরীয় উপনিষদ ২.৬)


বহ্বীঃ প্রজাঃ সৃজমানাং

শুরুতে বহু প্রজার সৃজন হলো

( শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ ৪.৫)


পরিণত বয়সের একটি নতুন প্রজাতি সৃষ্টির বিষয়টিও বলছে পবিত্র বেদ-

উপো রুরুচে যুবতির্ণ

যুবাবস্থায় তারা প্রকাশিত হলো

( ঋগ্বেদ ৭.৭৭.১)


Homo Heidelbergensis থেকেই প্রায় ৩ লক্ষ বছর পূর্বে আবির্ভাব হয় আধুনিক মানব অর্থাৎ Homo Sapiens তথা আমাদের যার অর্থ জ্ঞানী মানব। Homo Erectus বা সোজা মানব থেকে Homo Sapiens বা জ্ঞানী মানব হতে আমাদের সময় লেগেছে প্রায় ১৫ লক্ষ বছরের কাছাকাছি। ১৫ লক্ষ বছর অর্থাৎ কয়েকশ কোটি প্রজন্ম, প্রতিটি প্রজন্মে অণুবীক্ষণ আকৃতির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিবর্তন এক পর্যায়ে পরিণতি দিয়েছিল নতুন একটি পরিণত বয়সের প্রজাতির সদস্যদের। এই প্রজাতিটি ধুম করে হঠাৎ আকাশ হতে পড়েনি, এক জোড়া মানব মানবীর মিলনের ফলে সৃষ্টি হয়নি যা আজ DNA গবেষণায় প্রমাণিত। আর যেখানে

পৃথিবীর যাবতীয় মনুষ্য রচিত বিভিন্ন রিলিজিয়নের পুস্তকাদি এক জোড়া আদিম মানব মানবীকে মনুষ্য প্রজাতির আদি পিতামাতা বলে ঘোষণা করে নিজেদের অবৈজ্ঞানিক অনৈশ্বরিক বলে প্রমাণ করেছে সেখানে পবিত্র বেদই পৃথিবীর একমাত্র ঐশ্বরিক গ্রন্থ যাতে মানব সৃষ্টির শুরুতেই একসাথে অনেক সদস্যের উৎপত্তির কথা বলা হয়েছে যা আজ বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে।


মানুষ যে পাপের কারণে স্বর্গচ্যুত কোন প্রজাতি নয় সে রূপকথারও ছেদ পূর্বে টেনেছে পবিত্র বেদ আর বর্তমানে আধুনিক বিজ্ঞান, উভয়ই বলছে পৃথিবীতেই তাদের সৃষ্টি- উপ সর্প মাতরং ভূমিমেতামুরুব্যচসং পৃথিবীং সুশেবাম্ । (ঋগ্বেদ-১০.১৮.১০) অর্থাৎ মাতা ভূমি তথা ধরণী হতেই প্রাণীসকল উৎপন্ন হয়েছে।


Homo Sapiens দের উৎপত্তিস্থল ছিল আফ্রিকাতে, সেখানেই ছিল তাদের নিবাস। সেখান হতে প্রায় দুলক্ষ বছর আগে তাদের কিছু অংশ বিচরণ করতে করতে চলে আসে ইউরেশিয়া অঞ্চলে। ইজরাইল ও গ্রীসে প্রাপ্ত প্রায় ১,৯৪,০০০ বছর ও ২ লক্ষ বছর পূর্বের Homo Sapiens এর জীবাশ্ম ই তার প্রমাণ। তবে সেবার আফ্রিকা থেকে বের হয়ে অন্য মহাদেশে আসলেও তারা বিলুপ্ত হয়ে যায়, তাদের বংশধর রেখে যেতে পারেনি Homo Heidelbergensis হতে আসা অন্য একটি মানবপ্রজাতি Homo Neanderthals দের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে। এজন্যেই প্রায় ২ লক্ষ বছর আগে আফ্রিকা ছেড়ে বেরিয়ে পরা সেই Homo Sapiens দের Gene আমাদের মাঝে এখন নেই।


পরবর্তীতে আজ হতে প্রায় ৭০ হাজার বছর পূর্বে সম্ভবত আফ্রিকার ইরিত্রিয়া ও জিবুতি অঞ্চলের দিক হতে লোহিত সাগরের দক্ষিণ অংশের দিক দিয়ে বাবা এল মান্দেব প্রণালী পার হয়ে এশিয়ার ইয়েমেন অংশে আরেক দল Homo Sapiens পৌঁছে। এক পর্যায়ে নিয়ানডার্থাল মানবদের সাথেও তাদের আন্তঃপ্রজনন হয়। তাই আজ নিয়ান্ডারথাল প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেলেও আমাদের শরীরে এখনও ২% নিয়ান্ডারথাল Gene রয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, Homo Denisovan নামের অপর একটি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া প্রজাতির সাথেও আন্তঃপ্রজনন ঘটেছিল Homo Sapiens দের, তাই আমাদের শরীরে এখনও ৫% ডেনিসোভান Gene রয়ে গেছে।


Homo Sapiens দের ছড়িয়ে পড়ার কালচিত্র



প্রায় ৬০ হাজার বছর পূর্বে তাদেরই উত্তরপুরুষরা পৌঁছে ভারতীয় উপমহাদেশে, শুরু হয় মানব জাতির ভারতে পথচলা। প্রায় ৪০ হাজার বছর পূর্বে নিয়ান্ডারথালরও বিলুপ্ত হয়ে যায়। পরিবেশ ও সময়ের প্রতিযোগিতায় একে একে হারিয়ে যায় আদি সকল মানব প্রজাতি, একমাত্র টিকে থাকে Homo Sapines বা জ্ঞানী মানবরাই। কীভাবে সেই গল্প অনেক দীর্ঘ, সে না হয় বলব অন্য কোন প্রসঙ্গে আরেকদিন।


প্রায় ১২ হাজার বছর পূর্বে বরফযুগের শেষ হলে তাপমাত্রা কমতে থাকে, অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে কৃষিযুগের সূচনা হয় আজ হতে প্রায় ১০ হাজার বছর আগে হতে। মানুষ পশুপালন শুরু করে, সামাজিকতা প্রগাঢ় হতে শুরু করে। মানব সভ্যতার শুরু মূলত এই জায়গাতেই, আর মানব সভ্যতার শুরুতে জগৎপিতার প্রয়োজন হয় সভ্যতার পরিচালনার জন্য একটি দিকনির্দেশনা প্রদানের। বিগত কল্পের মোক্ষ লাভ করতে না পারা, নেতিবাচক কর্মফলের কারণে জর্জরিত আত্মারা প্রায় ৪০০ কোটি বছর ধরে বিভিন্ন যোনিতে কোটি কোটি প্রজন্ম পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত পেল সভ্য মানবজন্ম আর তখনই বিগত কল্পের সবচেয়ে পূণ্যাত্মাদের ঋষিরূপে ঈশ্বর প্রেরণ করলেন বেদজ্ঞান দিয়ে। জগৎ তখন জানল চিরন্তন সনাতন ধর্মকে। এর পরের গল্প আপনাদের সবার ই জানা।



শত শত বিজ্ঞানীদের সহস্রতরও আবিস্কারের মাধ্যমে আজ আমরা জানতে পারছি একে একে বিভিন্ন প্রজাতিসমূহের আবির্ভাবের আদি রহস্য। তাদের বিবর্তন আজ বিজ্ঞানের প্রমাণিত অভ্রান্ত সত্য। বিভিন্ন কূপমণ্ডূক সম্প্রদায় আদি এক জোড়া মানব মানবীর আকাশ থেকে টুপ করে পড়া ৫ হাজার বছরের পুরনো পৃথিবীর মনগড়া কাহিনী নিয়ে পড়ে থাকলেও বিজ্ঞান আজ এগিয়ে গেছে অনেক। একমাত্র সনাতন ধর্মই সর্বদা আদিতে বহু সংখ্যক জীবের সৃষ্টি, বিলিয়ন বিলিয়ন বছরের প্রাচীন পৃথিবীর কথা বলেছে যা অন্যরা কল্পনাও করতে পারতনা। শতপথ ব্রাহ্মণ ২.৫.১.১-৩ এ আমরা পাই পূর্বতন বিভিন্ন প্রজাতির বিলুপ্তির কথা, পাই ডায়নোসর জাতীয় সরীসৃপদের বিলুপ্তির কথাও। বিগত কল্পের সঞ্চিত কর্মফলের ক্ষয় করতেই অত্যাবশকীয় ছিল এই জগৎ বিবর্তনের মঞ্চ, কর্মফলের ক্ষয় না হলে নতুন মানব সভ্যতা সম্ভব নয়। আর প্রতিকল্পে নতুন সভ্যতার প্রারম্ভে প্রয়োজন দিকনির্দেশনা যা হলো পবিত্র বেদ; ঈশ্বরীয় অসামান্য, পরিপূর্ণ ও অভ্রান্ত জ্ঞান।


পূর্ণঃ কুম্ভধি কাল আহিতস্তং বৈ পশ্যামো বহুধা নু সন্তঃ।

স মা বিশ্বা ভুবনানি প্রত্যঙকালং তমাহুঃ পরমে ব্যোমন্।।

(অথর্ববেদ ১৯.৫৩.৩)

এ জগৎ কালের উপরে স্থিত এক পূর্ণপাত্রের ন্যায় যাকে বিচিত্র প্রকারে প্রকাশিত হতে সাধুগণ দেখেছেন। এই কাল চলমান হয়ে তাঁদের সম্মুখে দৃষ্ট যা পরম লোক পর্যন্ত ব্যপ্ত হয়ে আছে!


ও৩ম্ শান্তি শান্তি শান্তি 


বাংলাদেশ অগ্নিবীর

সত্য প্রকাশে নির্ভীক সৈনিক

Post a Comment

8Comments
  1. সকল লেখাটা (৬ পর্ব) পড়ে গোঁজামিল ছাড়া তো কিছুই পেলাম না দাদা। কি লিখলেন এসব? এখানে বেদাদি শাস্ত্র হতে বিবর্তনের কোন ব্যাখা ই তো দিতে পারলেন না। অথচ, পুরাণকে কাল্পনিক দাবি করা আপনারাই আবার এখানে পুরাণের দশাবতারের প্রসঙ্গ ঠেনেছেন। ঐটুকু ছাড়া আর কোন শাস্ত্রীয় রেফারেন্স দিতে পারেন নি বিবর্তনের। পুরো লেখাটা ছিলো সাইন্স এর বিষয়ে। এসব ফ্যাক্ট তো বিবর্তন সম্পর্কৃত বই পড়লেই জানা যায়। এত বড় গরু রচনা লেখার মানে কি??? হুদাই। আর বেদ মন্ত্রগুলোর অর্থ কি দিলেন বোঝালেন ই বা কি!! বোঝার মত করে কিছু লিখুন। লেখাতে নাই কোন ব্যাকরণের শুদ্ধতা, অর্থের শুদ্ধতা। মনে হলো, জোড় করে বেদের ভেতর বিবর্তন ঢোকাচ্ছেন। যত্তসব !!

    ReplyDelete
    Replies
    1. কোন জায়গায় গোঁজামিল পেলেন বলুন ত! দশাবতারের প্রসঙ্গ কোনকিছু প্রমাণ করতে আসে নি বরং কাকতালীয়ভাবে মিলে যাওয়ায় এসেছে। লেখক কিন্তু কোন স্থলেই বলে নি, দশাবতারের মিথ বিশ্বাস করতে।
      বেদমন্ত্রের অর্থ স্পষ্ট বাংলায় উল্লেখ আছে, তারপরেও যদি না বুঝতে পারেন, তবে তা আপনার অজ্ঞতা, লেখকের নয়।

      Delete
  2. পুরো লেখাটা (৬ পর্ব) পড়ে গোঁজামিল ছাড়া তো কিছুই পেলাম না দাদা। কি লিখলেন এসব? এখানে বেদাদি শাস্ত্র হতে বিবর্তনের কোন ব্যাখা ই তো দিতে পারলেন না। অথচ, পুরাণকে কাল্পনিক দাবি করা আপনারাই আবার এখানে পুরাণের দশাবতারের প্রসঙ্গ ঠেনেছেন। ঐটুকু ছাড়া আর কোন শাস্ত্রীয় রেফারেন্স দিতে পারেন নি বিবর্তনের। পুরো লেখাটা ছিলো সাইন্স এর বিষয়ে। এসব ফ্যাক্ট তো বিবর্তন সম্পর্কৃত বই পড়লেই জানা যায়। এত বড় গরু রচনা লেখার মানে কি??? হুদাই। আর বেদ মন্ত্রগুলোর অর্থ কি দিলেন বোঝালেন ই বা কি!! বোঝার মত করে কিছু লিখুন। লেখাতে নাই কোন ব্যাকরণের শুদ্ধতা, অর্থের শুদ্ধতা। মনে হলো, জোড় করে বেদের ভেতর বিবর্তন ঢোকাচ্ছেন। যত্তসব !!

    ReplyDelete
    Replies
    1. দাদা, তারা তো গোজামিল দিল।আপনি যদি সঠিক আর্টিকেল লিখে তাদের গোজামিল দূর করতেন তবে বুজা যাবে তারা গোজামিল দিছে।আপনার সৎ সাহস দেখান দাদা।এদেরকে দেখিয়ে দিন।

      Delete
  3. রামায়ণের যুদ্ধ কি কাল্পনিক নাকি?

    ReplyDelete
  4. বাংলাদেশ অগ্নিবীর কে মনে করেছিলাম প্রকৃত তত্ত্ব আলোকপাত করে। কিন্তু মানব বিবর্তনের ইতিহাস পুরু টা-ই আপনারা কাল্পনিক চিত্র ধারন করেছেন😰

    ReplyDelete
  5. বিজয় দেভ
    আপনি তাহলে গোজামিল না দিয়ে সোজামিল করে লেখেন! দেখি কতখানি যোগ্যতা আপনার?

    ReplyDelete
  6. শেষ দুই পর্ব পড়ে প্রচুর হাসছি। গোঁজামিল আর গোঁজামিল। প্রথম চার পর্বও সায়েন্টিফিক জার্নাল পড়ে পড়ে লেখা আর সেই সাথে কোরানের কোন লাইনকে বিজ্ঞানের আবিষ্কারের সাথে মিলানোর হাস্যকর অপচেষ্টাকে কপি করা।

    ReplyDelete
Post a Comment