দৈনিক বেদবাণী


এই সমগ্র সংসার নিরোগ এবং শুভচিন্তা যুক্ত হোক । যজুর্বেদ ১৬.৪                    সূর্য-এর আলোয় স্বয়ং আলোহীন চাঁদ আলোকিত হয় । ঋগ্বেদ ৫.৪০.৫                    প্রশংসনীয় সংস্কৃতি, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও মাতৃভূমি— এই ত্রয়ী সুখ-সমৃদ্ধি প্রদান করে। ঋগ্বেদ ১.১৩.৯                    উত্তম জীবন লাভের জন্য আমাদের জ্ঞানীদের সাহচর্যে চলা উচিৎ। ঋগ্বেদ ১.১২.১৬                    যে ব্যক্তি সম্পদ বা সুখ বা জ্ঞান নিঃস্বার্থভাবে দান করে, সে-ই প্রকৃত মিত্র। ঋগ্বেদ ২.৩০.৭                    মানুষ কর্ম দ্বারাই জগতে মহত্ত্ব ও প্রসিদ্ধি লাভ করে। ঋগ্বেদ ৩.৩৬.১                    হে পতি! তোমার স্ত্রীই গৃহ, স্ত্রীই সন্তানের আশ্রয়। ঋগ্বেদ ৩.৫৩.৪                    পরমাত্মার নিয়ম বিনষ্ট হয় না; তা অটুট, অচল ও অপরিবর্তনীয়। ঋগ্বেদ ৩.৫৪.১৮                    এই ধর্মের মার্গই সনাতন, এই পথে চলেই মানবগণ উন্নতি লাভ করে। ঋগ্বেদ ৪.১৮.১                    পরমাত্মার নিকট কোনো মানুষই বড় বা ছোট নয়। সকল মানুষই সমান এবং পরস্পরের ভ্রাতৃস্বরূপ। ঋগ্বেদ ৫.৬০.৫                    যে ব্যক্তি অকারণে অন্যের নিন্দা করে, সে নিজেও নিন্দার পাত্র হয়। ঋগ্বেদ ৫.২.৬                    নিশ্চিতরূপে এই চতুর্বেদ কল্যাণপ্রদায়িনী এবং মানবকে জ্ঞান প্রদান করে ধারণকারিণী। ঋগ্বেদ ৫.৪৭.৪                    বীর মানবের জন্য পর্বতও সুগম হয়ে যায়। ঋগ্বেদ ৬.২৪.৮                    আমরা অন্যের সঞ্চিত পাপের কর্মফল ভোগ করি না। ঋগ্বেদ ৬.৫১.৭                    হে মিত্রগণ! ওঠো— উদ্যমী হও, সাবধান হও এবং এই সংসাররূপী নদীকে অতিক্রম করো। ঋগ্বেদ ১০.৫৩.৮







ঋগ্বেদ ও শতপথ ব্রাহ্মণে Mass Extinction ও Natural Selection এর প্রতিফলন

সত্যান্বেষী
0


 

🍁 ‎ঋগ্বেদ ও শতপথ ব্রাহ্মণে Mass Extinction ও Natural Selection এর প্রতিফলন - 
 
প্রজা হ তিস্রো অত্যায়মীয়ুর্ন্যন্যা অর্কমভিতো বিবিশ্রে ।
বৃহদ্ধ তস্থৌ ভুবনেষ্বন্তঃ পবমানো হরিত আ বিবেশ ॥
‎[ঋ০ ৮.১০১.১৪ ]
 
প্রজা হ তিস্রো অত্যয়মিয়ুঃ – প্রজঃ প্রজাগণ হ নিশ্চিতভাবে তিস্রঃ তিন অত্যয়ম বিনাশ ইয়ুঃ প্রাপ্ত হন । (অর্থাৎ তিনটি প্রজা অবশ্যই ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল) । তৎ সেই য়াঃ যারা পরাভূতা পরাভূত হয়েছিল তাঃ তাদের (বিয়য়ে) এব ই এতৎ এটাই অভ্যনুক্তম্ প্রতিপাদন করা হয়েছে "ন্যন্যা অর্কমভিতো বিবিশ্রে" অন্যাঃ অন্য (প্রজাগণ) অর্কম্ অর্কের অভিতঃ চারদিকে নিবিবিশ্রে নিবিষ্ট হয়ে গেছে (বসে পড়েছে) ইতি এরূপ । অগ্নিঃ বৈ অগ্নিই অর্কঃ অর্ক । তৎ তারা য়াঃ যারা ইমাঃ এই প্রজাঃ প্রজাগণ অপরাভূতাঃ অপরাভূত হয়ে জীবিত থাকল । তাঃ তারা অগ্নিম্ অগ্নির অভিতঃ চারদিকে নিবিষ্টা ঘাঁটি স্থাপন করে বসে পড়েছে । তাঃ তাদের ( সম্বন্ধে ) এতৎ এতে ( মন্ত্রে ) অভ্যনূক্তম্ প্রতিপাদন করা হয়েছে
 
‎পদার্থ – ' মহৎ+হ তস্থৌ ভুবনেষ্বন্তঃ '- মহৎ হ মহান্ (ব্রহ্ম) তস্থৌ স্থিত রয়েছেন ভুবনেষু ভুবনের অন্তঃ ভেতর ইতি এরূপ প্রজাপতিম্ প্রজাপতির বিষয়ে এব ই এতৎ এই অভ্যনূক্তম্ বলা হয়েছে । "পবমানো হরিত আবিবেশ" [ পবমানঃ পবিত্রকারী বায়ু হরিতঃ দিকসমূহে আবিবেশ প্রবিষ্ট হয়ে গেছে ইতি এরূপ বলা হয়েছে দিশঃ বৈ দিকসমূহেই হরিতঃ হরিৎ (অর্থাৎ হরিৎ এর অর্থ দিকসমূহ ) তাঃ সেই দিকসমূহে অয়ম্ এই বায়ুঃ বায়ু পবমানঃ পবমান (পবিত্র কারী) বাবিষ্টঃ ভরে গিয়েছে । তাঃ এব তাদেরকে নিয়েই এষা এই ঋক্ ঋচা অভ্যনূক্তা বলা হয়েছে । তাঃ তারা ইমাঃ যে প্রজাঃ প্রজাগণ তথা সেই এব ই রূপ (সেইরূপ) প্রজায়ন্তে উৎপন্ন হয়ে থাকে – যথা এব যেভাবেই প্রজাপতিঃ প্রজাপতি প্রজাঃ প্রজাদেরকে অসৃজত উৎপন্ন করেছেন । ইদম্ তার হি কারণ যদা এব যখনই স্ত্রিয়ৈ স্ত্রীর স্তনৌ স্তন আপ্যায়েতে দুগ্ধ-পূর্ণ হয়ে যায় ঊধঃ ঊধ, এন (স্তন থেকে) উপরিভাগ পশূনাম্ পশুদের ( দুধে পরিপূর্ণ হয়ে যায় ) অথ এব তখনই যৎ যা জায়তে উৎপন্ন হয়ে থাকে তৎ তাই জায়তে উৎপন্ন হয়ে থাকে । তাঃ তারা ততঃ তখন স্তনৌ এব স্তনেই অভিপদ্য মুখ লাগিয়ে পান করে সম্ভবন্তি জীবিত থাকে ।
 
  • তিস্রঃ = তিনটি
    প্রজাঃ = প্রজা/সৃষ্ট প্রাণী/ জাতিসমূহ ।
    তিন প্রকারের সৃষ্টি / প্রাণীসমূহ (উত্তম , মধ্যম , নিকৃষ্ট) অত্যায়ম্ ঈয়ুঃ অত্যায়ম্ = ‘অতি + আয়ম্’
    অতি = অতিক্রম করে
    আয়ম্ = গমন , আগমন , প্রবেশ
    এখানে এটি " পরমাত্মার সকল সীমা অতিক্রম করে " বা "জাগতিক সীমা ছাড়িয়ে "
    ঈয়ুঃ = √ই (গমন করা) ধাতুর লঙ্ লকার, বহুবচন, ‘গমন করেছিল’ বা ‘গমন করে’ সব সৃষ্টি পরমাত্মার দিকেই গমন করে / সমস্ত সীমা অতিক্রম করে তাঁর অভিমুখে ধাবিত হয় ।
    অন্যাঃ অর্কম্ অভিতঃ বিবিশ্রে
    অন্যাঃ = অন্যেরা / অবশিষ্ট প্রাণীগণ
    অর্কম্ = সূর্য , তেজ, দীপ্তি / এক প্রকার অন্নের প্রতীকও (উপনিষদ অনুয়ায়ী ‘অর্ক’ মানে অন্নও উল্লেখ রয়েছে)
    অভিতঃ = চারদিক থেকে , পরিবেষ্টন করে
    বিবিশ্রে = √বিশ্ ধাতু (প্রবেশ করা), লঙ্ লকার, বহু বচন, প্রবিষ্ট হয়েছিল / বিস্তৃত হয়
    অন্য সত্তাগণ অন্ন বা সূর্যের মত শক্তিকে আশ্রয় করে চারদিক থেকে বিস্তৃত হয়েছে বা অবস্থান নিয়েছে ।
    ভুবনেষু অন্তঃ বৃহৎ পবমানঃ তস্থৌ
    ভুবনেষু = সমস্ত লোক / জগতে
    অন্তঃ = ভিতরে
    বৃহৎ = মহান , বিস্তৃত , বিশাল
    পবমানঃ = শুদ্ধকারী, বিশুদ্ধিকর (√পব্ ধাতু: পবিত্রীকরণ)
    তস্থৌ = √স্থা ধাতু, স্থ – তস্থৌ (লঙ্ লকার,) স্থিত হয়েছে / অবস্থান করছে
    সেই মহান, শুদ্ধকারী পরমাত্মা সমস্ত জগতের ভিতরে স্থিত রয়েছেন ।
    হরিতঃ অবিবেশ
    হরিতঃ = দিকগুলি / দিগ্গণ (এখানে প্রতীকি: বায়ুর মত বিস্তার)
    অবিবেশ = ‘আ + √বিশ্’ প্রবেশ করেছে তিনি সমস্ত দিক-দিগন্তে প্রবেশ করেছেন / বিস্তৃত হয়েছেন ।
💢 তিনবার প্রজার ধ্বংস = তিনটি Mass Extinction
‎ঋগ্বেদ বলছে — " তিন প্রজার ধ্বংস হয়েছে " ।
‎আধুনিক জীববিজ্ঞানে , পৃথিবীতে মহাবিপর্যয়ের মধ্যে তিনটি ছিল বিবর্তনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ:
‎১. Late Devonian Extinction
‎২.Permian-Triassic Extinction
‎৩.Cretaceous–Paleogene Extinction (ডাইনোসর বিলুপ্তি)
 
‎এই ধ্বংসগুলো জীববৈচিত্র্যকে বদলে দিয়ে নতুন প্রাণীর জন্য পথ খুলে দেয় — যাকে ঋগ্বেদ " তিন প্রজার ধ্বংস " বলে উল্লেখ করে ।
 
‎অন্যরা অর্কম্ অভিতঃ নিবিবিশ্রে” = জ্ঞানকেন্দ্রিক অভিযোজন । ‎অর্ক = সূর্য/অগ্নি , যা প্রতীক:
‎জ্ঞান , অভিযোজন ক্ষমতা উষ্ণতা ও তাপ-উৎপাদন (endothermy) সামাজিকতা ও গোষ্ঠীবদ্ধ জীবন ।
‎যেসব প্রাণী সামাজিক , উষ্ণরক্তবিশিষ্ট , এবং জ্ঞাননির্ভর অভিযোজন করেছিল, তারাই টিকে গিয়েছে । এই গোষ্ঠীর শেষ উত্তরাধিকারী – আজকের মানবজাতি ও স্তন্যপায়ী প্রাণীরা ।
 
‎Three orders of evolutionary creation, sattva or thought, rajas or energy, and tamas or matter, and three regions of the cosmos, heaven, earth and the middle regions proceed to expansive existence at the beginning of the Being manifesting into Becoming, and others, all biological forms depend upon the self-refulgent sun. The infinite spirit of divinity abides immanent in the cosmos, and pure, and sanctifying all forms, manifests in all directions of space and greenery of the earth.
‎ডক্টর তুলসী রাম শর্মা 
 
‎Three orders of creation = সত্ত্ব, রজঃ, তমঃ — চেতনা, শক্তি, ও বস্তুতত্ত্বের ত্রৈগুণিক সৃষ্টি-বিন্যাস ।
‎Three regions of the cosmos = দ্যুলোক , ভূমণ্ডল , অন্তরীক্ষ মানসিক/আধ্যাত্মিক স্তর, জৈবিক/পার্থিব স্তর , ও গতিশীল/শক্তি স্তর ।
‎Proceed to expansive existence = প্রসারমান রূপে বিকাশমান হওয়া — Becoming-এর দিকে Being-এর রূপান্তর ।
‎Self-refulgent sun = স্বপ্রভ সূর্য — জ্যোতির্ময় আত্মশক্তি , যা বাস্তবে সৌর শক্তি তথা জীবনের জ্বালানির উৎস ।
‎All biological forms depend = সমস্ত জীবধারার অস্তিত্ব নির্ভর করে — ফোটোসিন্থেসিস থেকে খাদ্যচক্র পর্যন্ত সূর্যের উপর নির্ভরতা ।
‎Infinite spirit of divinity = অনন্ত দিব্যচেতনা / পরমাত্মা — সর্বময় , অনন্তস্বরূপ চৈতন্য , যা সর্বত্র বিদ্যমান ।
‎Abides immanent in the cosmos = মহাবিশ্বে অন্তর্নিহিতভাবে অবস্থান করেন — পরমচেতনার অভ্যন্তরীণ উপস্থিতি ।
‎Pure and sanctifying all forms = পবিত্র ও সমস্ত রূপকে শুদ্ধতায় পূর্ণ করেন — শুদ্ধতা ও দায়িত্ববোধে জীবন রূপিত হয় ।
‎Manifests in all directions = সকল দিকেই নিজেকে প্রকাশ করেন — তাঁর গুণ , কর্ম , শক্তি ও অস্তিত্ব সর্বত্র ছড়িয়ে আছে ।
‎Greenery of the earth = ধরিত্রীর সবুজ সৃষ্টিতে — উদ্ভিদের বিকাশ , ফসল , বন ও প্রাণের ধারক
প্রজা হ তিস্রো অত্যায়মীয়ুঃ – "প্রজা" শব্দের মাধ্যমে সৃষ্ট জীবের প্রতিনিধিত্ব করা হয়েছে , এবং "তিস্রঃ" দ্বারা তিনটি প্রজাতির ধ্বংসের কথা বলা হয়েছে । এখানে "অত্যায়মীয়ু" শব্দটি পরমাত্মার সর্বশক্তির প্রতি অতিক্রমের অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে । এটি পৃথিবীতে তিনটি বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কথা স্মরণ করায়, যা বিবর্তন এবং জীববৈচিত্র্যের পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।এছাড়া, "অর্কমভিতো" ও "বিবিশ্রে" শব্দের মাধ্যমে সূর্য বা অগ্নির অভিমুখে বিস্তার এবং নতুন প্রজাতির সৃষ্টি সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে । এসব অঙ্গিকৃতভাবে "অগ্নির অভিতঃ" বা তাপ এবং শক্তির মধ্য দিয়ে প্রাণীরা তাদের অস্তিত্বের ভিত্তি স্থাপন করে ।
 
💥 ব্রাহ্মণ গ্রন্থে উল্লেখ পাওয়া যায়
প্রথমে অ-স্তন্যপায়ী প্রাণীর সৃষ্টি হবার কথা , খাদ্যাদি সহ বিভিন্ন কারণে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া অনেক প্রজাতির কথা , নবজাতকের পুষ্টির জন্য প্রাণীদেহে স্তনগ্রন্থি সৃষ্টি তথা স্তন্যপায়ী প্রজাতি সৃষ্টির কথা উল্লেখিত হয়েছে! এমনকি একই উৎস বা Last Universal Common Ancestor(LUCA) থেকে সৃষ্ট হওয়ায় মানুষের সাথে অন্যান্য প্রাণীর যে দৈহিক সাযুজ্য পাওয়া যায় তাও ইঙ্গিত করা হয়েছে । চলুন দেখে নিই-
 
🌼
প্রজাপতির্হ বা ইদমগ্র এক এবাস । স ঐক্ষত কথং নু প্রজায়েয়েতি সোঽশ্রাম্যৎস তপোঽতপ্যত স প্রজা অসৃজত তা অস্য প্রজাঃ সৃষ্টাঃ পরাবভূবুস্তানীমানি বয়াংসি পুরুষো বৈ প্রজাপতের্নেদিষ্ঠং দ্বিপাদ্বা অয়ং পুরুষস্তস্মাদ্দ্বিপাদো বয়াংসি - ২.৫.১.[১]
অর্থাৎ , প্রথমে কেবল প্রজাপতি ছিলেন । তিনি চিন্তা করলেন কিভাবে প্রজা উৎপন্ন করা যায় । তিনি শ্রম এবং তপ দ্বারা তপস্যা করলেন । তিনি প্রজা সৃষ্টি করলেন । উৎপন্ন প্রজারা পরাভূত (মৃত) বিলুপ্ত হলো । এরা হলো পক্ষী । পুরুষ প্রজাপতির নিকটতম । পুরুষের দু'পা থাকে বিধায় পাখিদেরও তাই দুটি করে পা ।
[২.৫.১.১] 
 
প্রজাপতিঃ সৃষ্টিকর্তা; বৈজ্ঞানিকভাবে মহাবিশ্বের প্রাক-বিগ ব্যাং Singularity
ইদমগ্র এক এবাসীত্ঃ প্রথমে কেবল তিনি ছিলেন; প্রতীকাত্মকভাবে একত্বের অবস্থা; Singularity বা Primordial field ‌
স ঐক্ষতঃ — তিনি চিন্তা করলেন [ চেতনার উদয় ] Conscious impulse বা Wave-function collapse
কথং নু প্রজায়েয়েতিঃ আমি কীভাবে সৃষ্টি করব ? Structure বা সৃষ্টির ইচ্ছাশক্তির জন্ম ।
সঃ তপোঽতপ্যত্ঃ তপস্যা করলেন ; প্রচেষ্টা ও শক্তি সংহতকরণ; Energy condensation বা Quantum fluctuation ।
স প্রজা অসৃজতঃ — সৃষ্টি করলেন ; সম্ভাবনার প্রকাশ; Orign of life বা Abiogenesis
তা অস্য প্রজাঃ পরাবভূবুঃ সৃষ্টরা ব্যর্থ হলো; ব্যর্থ রূপ বা বিলুপ্ত প্রাণী; Evolutionary failure বা Extinct species
তানী মানি বয়াংসিঃ এরা হলো পক্ষী; রূপান্তরিত প্রাণী; Primitive tetrapods বা Archaeopteryx ইত্যাদি
পুরুষো বৈ প্রজাপতেঃ নেদিষ্ঠম্ঃ পুরুষ প্রজাপতির নিকটতম; জটিল জীব বা চেতনারূপ ; Human species বা Advanced consciousness
দ্বিপাদ্বা অয়ং পুরুষঃ পুরুষ দ্বিপদ; শারীরিক গঠন; Tetrapod limb evolution
 
তস্মাদ্ দ্বিপাদো বয়াংসিঃ পক্ষীও দ্বিপদ; পূর্বপুরুষ থেকে রূপ; Common ancestry বা Phylogenetic linkage
অর্থাৎ বয়াংসি বা Ornithine Species বা পক্ষীজাতীয় প্রজাতিসমূহের কথা বলা হচ্ছে যারা সেই একই উৎস হতে সৃষ্ট বলে মানুষের ন্যায় তারাও দ্বিপদ । বলা হচ্ছে পরাবূভু বা বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া পক্ষী প্রজাতিসমূহের কথা । আজ থেকে ৬.৬ কোটি বছর আগে সংঘটিত মহাদূর্যোগের কথা যখন উল্কাপাতে ডায়নোসর সহ পৃথিবীর অধিকাংশ প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল । ঠিক তখনই Ornithine Species এর অধিকাংশ পূর্বপুরুষ প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যায় । টিকে যায় কেবল ৪ টি প্রজাতি । সেই ৪টির মধ্যে Neoaves গণ হতেই বর্তমানের আধুনিক পাখিদের উদ্ভব ।
 
পরের কণ্ডিকায় বলা হচ্ছে-
 
🌼
স ঐক্ষত প্রজাপতিঃ । যথা ন্বেব পুরৈকোঽভূবমেবমু ন্বেবাপ্যেতর্হ্যেক এবাস্মীতি স দ্বিতীয়াঃ সসৃজে তা অস্য পরৈব বভূবুস্তদিদং ক্ষুদ্রং সরীসৃপং যদন্যৎসর্পেভ্যস্তৃতীয়াঃ সসৃজ ইত্যাহুস্তা অস্য পরৈব বভূবুস্ত ইমে সর্পা এতা হ ন্বেব দ্বয়ীর্যাজ্ঞবল্ক্য উবাচ ত্রয়ীরু তু পুনর্ঋচা - ২.৫.১.[২]
অর্থাৎ , প্রজাপতি চিন্তা করলেন , প্রথমে আমি যেমন এক ছিলাম , এখনো তেমনিই আছি । এজন্য তিনি দ্বিতীয় প্রজাবৃন্দ সৃজন করলেন । কিন্তু এরাও পরাভূত (মৃত) বিলুপ্ত হলো । এরা ছিল সর্পভিন্ন এক প্রজাতি । বলা হয়ে থাকে , তিনি তৃতীয়বার সৃজন করেছিলেন। যাজ্ঞবল্ক্যের মতে , তা দু'প্রকারের । কিন্তু ঋগ্বেদ (৮।১০১।১৪) অনুসারে তা তিন প্রকারের ।
[২.৫.১.২] 
 
অর্থাৎ সরীসৃপের ন্যায় অনেক প্রজাতির কথা যারা মানুষ সৃষ্টির অনেক আগে তৈরী হয়েছিল । আজ হতে ৩৮ লক্ষ বছর আগে Ichthyostega সহ নানা প্রজাতির কথা যারা ছিল দেখতে সরীসৃপের ন্যায় । এদেরও অনেকেই বভূবুস্ত বা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল । এরপর আমরা দেখেছিলাম বিলুপ্তি থেকে রক্ষা পাবার জন্য লক্ষ লক্ষ বছরের ধীর প্রক্রিয়ায় তাদের একটি অংশের মধ্যে তৈরী হয় স্তনগ্রন্থি । 
 
১.সৃষ্টির পুনঃচেষ্টা (Iterative Creation): Consciousness একাধিকবার প্রাণ সৃষ্টি করেছে , কিন্তু অনেক শাখা ব্যর্থ হয়েছে ।
২. Evolutionary trial and extinction: বহু ফর্ম সৃষ্টি হয়েছে , কিন্তু অনেকে প্রকৃতির নির্বাচনে টিকতে পারেনি।
৩. Reptilian Evolution: সরীসৃপ শ্রেণির প্রাণের আবির্ভাব ও তার শাখাবিভাজন এখানে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে ।
৪.Threefold Classification: ঋগ্বেদে উল্লেখিত তিন শ্রেণির প্রাণের ধারণার সঙ্গে শতপথ ব্রাহ্মণের মিল রয়েছে ।
 
শতপথ ব্রাহ্মণও ঠিক একই কথা বলছে-
🌼
সোঽর্চঞ্ছ্রাম্যন্প্রজাপতিরীক্ষাং চক্রে । কথং নু মে প্রজাঃ সৃষ্টাঃ পরাভবন্তীতি স হৈতদেব দদর্শানশনতয়া বৈ মে প্রজাঃ পরাভবন্তীতি স আত্মন এবাগ্রে স্তনয়োঃ পয় আপ্যায়যাং চক্রে স প্রজা অসৃজত তা অস্য প্রজাঃ সৃষ্টা স্তনাবেবাভিপদ্যতাস্ততঃ সম্বভূবুস্তা ইমা অপরাভূতঃ - ২.৫.১.[৩]
অর্থাৎ , প্রজাপতি অর্চনা ও শ্রম করতে করতে চিন্তা করলেন , আমার দ্বারা সৃষ্ট প্রজা বারবার কেন পরাভূত (মৃত)বিলুপ্ত হয় ? তখন তিনি দেখলেন তাঁর প্রজারা বিনা ভোজনের কারণেই পরাভূত (মৃত) হচ্ছে । এজন্য প্রথমে তিনি নিজের স্তন দুগ্ধদ্বারা পূর্ণ করলেন । তারপর তিনি প্রজা সৃষ্টি করলেন । উৎপন্ন প্রজাসমূহ স্তন্যদুগ্ধ পান করে জীবন ধারণ করলো । তারা অপরাভূত হয়ে সম্যকভাবে অবস্থান করলো ।
[২.১.৫.৩] 
 
Evolutionary nutrition crisis:
প্রাথমিক জীবজগতের অনেক শাখা পুষ্টির অভাবে বিলুপ্ত হয়েছে—অর্থাৎ তারা খাদ্যগ্রহণ বা পুষ্টি শোষণের উপযোগী ব্যবস্থা (যেমন হজম, রক্তসঞ্চালন ইত্যাদি) গড়ে তুলতে পারেনি।
২. Development of nourishment system:
স্তন্যদুগ্ধের মাধ্যমে পুষ্টি—এটি mammalian evolution-এর সূচনা বোঝায়, যেখানে দুধ প্রথম পুষ্টির নিরাপদ ও ধারাবাহিক উৎস হিসেবে বিবর্তিত হয় ।
৩. Survival through maternal care:
স্তন্যপান ও মাতৃসেবা আধুনিক জীববিজ্ঞানে এক গুরুত্বপূর্ণ বিবর্তনীয় ধাপ—যা টিকে থাকার হার বাড়িয়েছে । এই অংশটি সেই সময়ের দিকেও ইঙ্গিত করে যখন internal gestation ও postnatal care শুরু হয় ।
অর্থাৎ অনেক সৃষ্ট অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যায় । পরে অনেক প্রজা স্তনপ্রাপ্ত হয়ে জীবনধারণ করল ও তাহাতে তারা অপরাভূত হয়ে(বিলুপ্তি হতে রক্ষা পেয়ে) সম্যকভাবে অবস্থান করল ।
 
🌼
তস্মাদেতদৃষিণাভ্যনূক্তম্ । প্রজা হ তিস্রোঽঅত্যায়মীয়ুরিতি তদ্যাঃ প্রাভূতাস্তা এবৈতদভ্যনূক্ত ন্যন্যা অর্কুমভিতো বিবিশ্রঽঙ্গত্যগ্নির্বাঽঅর্কস্তদ্যা ইমাঃ প্রজাঃ অপরাভূতাস্তা অগ্নিমভিতো নিবিষ্টাস্তা এবৈতদভ্যনূক্তম্ ॥৪॥
এইজন্য ঋচার ব্যাখ্যায় ঋষি অনুবচন করেছেন । মন্ত্রটি নিম্নরূপ – প্রজা হ তিস্রো অত্যায়মীয়ু ॥ এই তিনটি প্রজা অত্যয় অর্থাৎ অসহায়ত্বে পতিত হয়েছে , তাই এই তিনটিই পূর্বক্ত অসহায় প্রজা , যে পক্ষী , ক্ষুদ্র সরীসৃপ তথা সর্পের নাম যাজ্ঞবল্ক্য দিয়ে ইঙ্গিত করেছেন ( এই তিনটি নাম মানব প্রজাদের অন্তর্গত , যে জ্ঞানের ক্ষুধা মেটানোর জন্য ঘুরে ঘুরে বেড়ায় , তিন প্রকারের মানুষ রয়েছে এই কথা বোঝা মাত্রই সমগ্র রহস্য উন্মোচিত হয় । ) তারপর তিনি আরও বলেছিলেন যে ' ন্যন্য অর্কমভিতো বিবিশ্রে ' অর্থাৎ অর্কের চারপাশে ঘাঁটি তৈরি করা অন্যান্য লোক ছিল । তাই অর্ক নামটি অগ্নির । তাই যারা অসহায় ছিল না তারাই আগুনের চারপাশে ঘাঁটি করে বসে ছিল । এর দিকে এটার ইঙ্গিত রয়েছে ॥
 
পদার্থ- সঃ তারা অর্চন্ আরাধনা করেন এবং শ্রাম্যন্ পরিশ্রম করে প্রজাপতিঃ প্রজাপতি ইক্ষাচক্রে জেনেছেন কথম্ নু যে কেন মে আমার প্রজঃ প্রজাগণ সৃষ্টঃ উৎপন্ন হয়ে পরা ভবন্তি ইতি পরভূত-অসহায় হয়ে যায় । সঃ সে হ নিশ্চিতভাবে এতৎ এব এটাই দদর্শ দেখ – অনশনতায়া বৈ ভোজন ব্যতীতই মে আমার প্রজাঃ প্রজারা পরাভবন্তি পরাভূত হয়ে যায় ইতি এমনটাই বলেছেন । সঃ সে প্রজাঃ প্রজাদের অমৃজত উৎপন্ন করেছেন । তাঃ তারা অস্য এর প্রজাঃ প্রজাগণ সৃষ্টাঃ উৎপন্ন হয়ে রচনা হওয়ার সময় স্তনৌ এব স্তনে অভিপদ্য মুখ লাগিয়ে (দুধ পান করতে থাকে) তাঃ তারা ততঃ তখন সম্বভূবুঃ জীবন ধারণ করতে পারে , অর্থাৎ জীবিত ছিল । তাঃ সেই ইমাঃ এই (প্রজাগণ) অপরাভূতাঃ পরাভূত হয়ে অসহায় হয়নি ॥
প্রতিবোধ –
 
অগ্নি নামটি ব্রাহ্মণ বা ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয়াদি ধর্মের ব্রত ধারণ করার সংকল্প । তাই যেখানে ব্রাহ্মণবিদ্যা দানকারী রয়েছেন , তথা রাষ্ট্রের বালক দীক্ষাগ্নি দ্বারা দীপ্ত , সেই রাষ্ট্র পরাভূত হয় না , অসহায় থাকে না – এটাই এই পংক্তির ভাব ॥
 
রাষ্ট্রে যেখানে ব্রাহ্মণবিদ্যা আছে , দীক্ষার অগ্নি জ্বলছে , সেই রাষ্ট্র পরাভূত হয় না ।"
‎দীক্ষা ও ব্রত
‎নৈতিকতা ও শৃঙ্খলা
‎জ্ঞান ও শিক্ষা
‎সাংস্কৃতিক আত্মচেতনা
‎Cultural Evolution, Meme Theory, এবং Anthropological Development-এর সাথে:
‎ভাষা , শিক্ষা , শাসনব্যবস্থা , রীতিনীতি ও ধর্ম
‎প্রযুক্তি ও লিখন-পদ্ধতি এই জ্ঞান-নির্ভর সমাজই টিকে গেছে । পরাভূত বনাম অপরাভূত = প্রাকৃতিক নির্বাচন (Natural Selection) ‎যারা অভিযোজিত হতে পারেনি , তারা পরাভূত – অর্থাৎ বিলুপ্ত যারা ‘অগ্নি’-র আশ্রয়ে (জ্ঞানে , সংস্কৃতিতে , অভিযোজনে) ছিল , তারা অপরাভূত – টিকে গেছে এটি Natural Selection নীতির সরাসরি প্রতিধ্বনি । অর্থাৎ , প্রথম সৃষ্টির পর প্রজারা টিকতে পারেনি ।‎পরবর্তীতে আসে এক আত্মচেতনায় পরিপূর্ণ ‘পুরুষ’ ‎দ্বিপদ , সুস্থিত , সচেতন , ভারসাম্যপূর্ণ জীবনরূপ ‎এইরূপ সত্ত্বাই টিকে থাকে , বিবর্তনের পথে এগিয়ে যায় ।
 
🌼
মহদ্ধ তস্থৌ ভুবনেষ্বন্তরিতি । প্রজাপতিমেবৈতদভ্যনূক্তং পবমানো হরিত আবিবেশেতি দ্বিশো বৈ হরিতস্তা অয়ং বায়ুঃ পবমান বিষ্টস্তা এবৈষুর্গভ্যনূক্তা তা ইমাঃ প্রজাস্তথৈব পূজায়ন্তে যুথৈব প্রজাপতিঃ প্রজা অসৃজতে হি যদৈব স্ত্রিয়ৈ স্তনাবাপ্যায়েতেঽবঃ পশূনাম্যৈব যজ্জায়তে তুজ্জায়তে তাস্তুত স্তনাবেবাভিপদ্য সম্ভবন্তি ॥৫॥
বোধ –
মন্ত্রে আরও বলা হয়েছে ' মহদ্ধ তস্তৌ ভুবনেষ্বন্তঃ ' অর্থাৎ এই তিনটি প্রজা পরাভূত হয়েছিল , কিন্তু চতুর্থটি পরাভূত হয়নি । তাহলে কেন হয়নি ? কে শেখাবে এই রহস্য ? উত্তর হলো সেই মহান ব্রহ্ম যিনি এই ভুবনের মধ্যে লুকিয়ে আছেন । তিনি নিজেই তাঁর সৃষ্টিতে এই চার প্রকার জীব সৃষ্টি করে আমাদের উপদেশ দিয়েছেন । তিনি আরও বলেছেন – ' পবমনো হরিত আ বিবেশ ' , সেই প্রভু তাঁরই প্রবাহিত প্রতিটি দমকা হাওয়ায় প্রতিটি দিককে এই উপদেশ দেন যে , আমার সৃষ্টিতে যারা দুধ দেয় তারা অসহায় নয়, তোমরাও জ্ঞানের ক্ষেত্রে চুষতে যেও না , কিন্তু আগত সন্তানদেরকে জন্মের আগেই জ্ঞানের দুধ দেওয়ার ব্যবস্থা কর । তাই ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যের জন্মের আগে বৈশ্বদেব অর্থাৎ বাহ্মণাচতুর্মাস্য যজ্ঞ করা হয়। যেখানে যাজ্ঞবল্ক্যের মতো এই ঋচার মর্মকে জানেন এরূপ পণ্ডিত আছেন । সেখানে এই সর্বশ্রেষ্ঠ প্রজার জন্ম হয় যেভাবে প্রজাপতি তার সৃষ্টিতে সর্বশ্রেষ্ঠ প্রজা মানুষ সৃষ্টি করেছেন । এখানে সেই দৃশ্যটি (যা থেকে আপনাকে শিক্ষা নিতে হবে) দৃশ্যমান হয় । যখন স্ত্রীর স্তন দুধে ভরে যায় , বা গাভী আদির পশুর মতো থলি পূর্ণ হয় এবং তারপর তার জন্ম হয় । যে জন্মেছে (অর্থাৎ বাচ্চা) । তখন সেই সন্তান স্তন আঁকড়ে ধরে জীবন নির্বাহ করে ॥
 
পদার্থ – ' মহৎ+হ তস্থৌ ভুবনেষ্বন্তঃ ' [ঋ০ ৮.১০১.১৪] এর তৃতীয় পাদের অর্থ :- মহৎ হ মহান্ (ব্রহ্ম) তস্থৌ স্থিত রয়েছেন ভুবনেষু ভুবনের অন্তঃ ভেতর ইতি এরূপ প্রজাপতিম্ প্রজাপতির বিষয়ে এব ই এতৎ এই অভ্যনূক্তম্ বলা হয়েছে । "পবমানো হরিত আবিবেশ" [ ঋ০ ৮.১০১.১৪]এর চতুর্থ পাদ) মন্ত্রার্থ :- পবমানঃ পবিত্রকারী বায়ু হরিতঃ দিকসমূহে আবিবেশ প্রবিষ্ট হয়ে গেছে ইতি এরূপ বলা হয়েছে দিশঃ বৈ দিকসমূহেই হরিতঃ হরিৎ (অর্থাৎ হরিৎ এর অর্থ দিকসমূহ ) তাঃ সেই দিকসমূহে অয়ম্ এই বায়ুঃ বায়ু পবমানঃ পবমান (পবিত্র কারী) বাবিষ্টঃ ভরে গিয়েছে । তাঃ এব তাদেরকে নিয়েই এষা এই ঋক্ ঋচা অভ্যনূক্তা বলা হয়েছে । তাঃ তারা ইমাঃ যে প্রজাঃ প্রজাগণ তথা সেই এব ই রূপ (সেইরূপ) প্রজায়ন্তে উৎপন্ন হয়ে থাকে – যথা এব যেভাবেই প্রজাপতিঃ প্রজাপতি প্রজাঃ প্রজাদেরকে অসৃজত উৎপন্ন করেছেন । ইদম্ তার হি কারণ যদা এব যখনই স্ত্রিয়ৈ স্ত্রীর স্তনৌ স্তন আপ্যায়েতে দুগ্ধ-পূর্ণ হয়ে যায় ঊধঃ ঊধ, এন (স্তন থেকে) উপরিভাগ পশূনাম্ পশুদের ( দুধে পরিপূর্ণ হয়ে যায় ) অথ এব তখনই যৎ যা জায়তে উৎপন্ন হয়ে থাকে তৎ তাই জায়তে উৎপন্ন হয়ে থাকে । তাঃ তারা ততঃ তখন স্তনৌ এব স্তনেই অভিপদ্য মুখ লাগিয়ে পান করে সম্ভবন্তি জীবিত থাকে ॥৫॥
 
(শতপথ ব্রাহ্মণ , ২য় কাণ্ড , ৫ম অধ্যায় , ১ম ব্রাহ্মণ , ১-৫ নং কণ্ডিকা এবং ঋ০ ৮.১০১.১৪)
 
▶️ অর্থাৎ আমরা স্পষ্ট দেখছি বেদে ও ব্রাহ্মণ গ্রন্থে-
১) স্তন্যপায়ীদের আগে অন্য প্রজাতিদের সৃষ্টির কথা আছে ।
২) খাদ্যের অভাবে বহু প্রজাতির বিলুপ্তির কথা আছে ।
৩) স্তন্যপায়ীদের আবির্ভাব , স্তনগ্রন্থি সৃষ্টি ও বিলুপ্তি থেকে রক্ষায় এর গুরুত্বের কথা আছে ।
৪) মানুষ যে অনেক পরবর্তীতে সৃষ্টি হয়েছে সেই কথা আছে ।
 
চেতনার আদিকণিকা থেকেই শুরু এই মহাসৃষ্টির যজ্ঞচক্র — এক অদৃশ্য আগ্নিশিখা , যা নিজেকে নিপুণ করে তুলেছে বিকাশের অনির্বচনীয় প্রয়াসে । আত্মা সেখানে শুধু সত্তা নয়, বরং তা বহন করে সম্ভাবনার বীজ , যা ক্রমশ উন্মোচিত হয় জীবনের পরতে পরতে । প্রাচীন ঋষিরা যেসব মন্ত্রে ঈশ্বরের বাণী রূপে চেতনাকে ভাষা দিয়েছিলেন , সেই ঋচাগুলো যেন কালজয়ী ধ্বনিতে আজও বলে চলে — সৃষ্টি ও প্রলয় কোনো বিরোধ নয়, বরং চেতনার চিরন্তন প্রবাহের দুই তীর , যেখান দিয়ে বয়ে চলে পরমাত্মার ইচ্ছার নদী ।
 
✅ তথ্য সূত্র:
১.David Sloan Wilson
"Evolution for Everyone", "Does Altruism Exist?"
২.Eva Jablonka
"Evolution in Four Dimensions" (with Marion Lamb)
৩.Sean B. Carroll
"Endless Forms Most Beautiful"
৪.Mark Pagel
"Wired for Culture"
৫. ভাষ্যকার‌- পণ্ডিত জয়দেব শর্মা
৬. ভাষ্যকার- ডক্টর: তুলসীরাম শর্মা
৭. ভাষ্যকার- সায়ণাচার্য
৮. উইকিপিডিয়া
৯. পাণিনি অষ্টাধ্যায়ী
১০. নিরুক্ত
১১. সংস্কৃত অভিধান 
 
✍️
বাংলাদেশ অগ্নিবীর
সত্য প্রকাশে নির্ভীক সৈনিক

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)